আয় বাড়াতে রাজ্য সরকার যে কর ফাঁকি রোধে কড়া হবে, বিধানসভা ও বিভিন্ন আলোচনার মঞ্চে তা আগেই বলেছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। কিন্তু এই প্রথম কোনও বণিকসভার মঞ্চে দাঁড়িয়ে ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদেরও সে কথা সরাসরি বললেন তিনি। জানালেন, কর বাড়ছে না, সেটা সুযোগ। কিন্তু কর ফাঁকির প্রবণতা কোনও ভাবেই রেয়াত করা হবে না। অমিতবাবুর দাবি, কর প্রশাসনে গতি ও স্বচ্ছতা এনে অকারণ হয়রানি ও দুর্নীতি কমাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু তার পরেও নিয়ম মেনে কর না দিলে, কড়া ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবে না রাজ্য সরকার।
মঙ্গলবার ভারত চেম্বার অফ কমার্সে কর ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা সভায় অমিতবাবু শিল্পপতিদের বলেন, “কর জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে সততা অবলম্বন করলে পুরস্কার যেমন পাওয়া যাবে, তেমনই অসৎ হলে ফল ভুগতে হবে।”
অর্থ দফতরের কর্তাদের বক্তব্য, আমজনতার উপর নতুন কোনও করের বোঝা চাপাতে রাজি নন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তীব্র আর্থিক সঙ্কট কাটাতে রাজ্য সরকারকে আয় বাড়াতেই হবে। আর সেই পথ খুঁজতেই কর ব্যবস্থার ফাঁকফোকর বন্ধ করতে চান অর্থমন্ত্রী।
অমিতবাবু বলেন, “বর্তমানে রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের মাত্র ৪.১ শতাংশ আসে কর এবং শুল্ক থেকে। যা অত্যন্ত কম।”
তবে এই প্রসঙ্গেই এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “করের হার বেশি না কম, তা প্রধান সমস্যা নয়। এ রাজ্যের মূল সমস্যা হল মান্ধাতার আমলের কর প্রশাসন এবং কর ফাঁকি।” অমিতবাবু জানান, কর প্রশাসনকে দক্ষ, গতিশীল এবং স্বচ্ছ করে তুলতেই আরও বেশি করে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের পথে হাঁটছেন তাঁরা। সরল করা হচ্ছে কর জমা দেওয়ার পদ্ধতি। এ জন্য রাজ্য যুক্তমূল্য কর (ভ্যাট) আইনে ১১টি সংশোধন পাশ করানো হয়েছে বিধানসভায়। একই সঙ্গে, কর ফাঁকি বন্ধ করতে সংস্থার মোট আয়ের অনুপাতে জমা দেওয়া করের অঙ্ক খতিয়ে দেখা হবে। অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য, এ ভাবে কর ব্যবস্থার সংস্কারের মাধ্যমে ৩০ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়া সম্ভব। |