র্যাগিং-কাণ্ডে ধৃত দুই ছাত্রের জেল হাজত হল। মঙ্গলবার তাঁদের বিষ্ণুপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ৬ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। তবে তাঁদের বিরুদ্ধে এ দিনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারল না বিষ্ণুপুরের মল্লভূম ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)-র ‘অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি’। ব্যবস্থা নিতে পারেনি কর্তব্যে গাফিলতিতে অভিযুক্ত হস্টেল ওয়ার্ডেন বা নিরাপত্তা কর্মীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশ ক্ষুব্ধ। কমিটির চেয়ারম্যান তথা ওই কলেজের অধ্যক্ষ শরণকুমার সান্যাল বলেন, “অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি। শীঘ্রই ওই ২ ছাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” র্যাগিংয়ের অভিযোগ তোলা দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র দ্বৈপায়ন ঘোষকে বিষ্ণুপুর হাসপাতাল থেকে নিয়ে তাঁর বাবা কলকাতার ঠাকুরপুকুরের বাড়িতে ফেরেন। |
র্যাগিং-কাণ্ডে ধৃত দুই ছাত্র চতুর্থ বর্ষের শান্তনু চৌধুরী ও পৃথ্বীজিৎ রায়কে বিচারক ২১ নভেম্বর পর্যন্ত জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। সে দিন পুলিশকে ‘কেস ডায়েরি’ ও ‘ইনজুরি রিপোর্ট’ জমা দিতে বলা হয়েছে। এই ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন তাঁদের বাড়ির লোকজন। শান্তনুর বাবা বাঁকুড়া জেলার কোতুলপুরের বাসিন্দা অশোক চৌধুরী এবং পৃথ্বীজিতের বাবা চন্দননগরের বাসিন্দা সৌমিত্র রায় বিষ্ণুপুর আদালত চত্বরে ছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, “ওই কলেজ অধ্যক্ষকে জেলে পাঠানো উচিত। তাঁর নজরদারির অভাবে এই কাণ্ড ঘটেছে। কলেজ চত্বর মাদক দ্রব্য বেচাকেনার আখড়া হয়ে উঠেছে। কর্তৃপক্ষ নিশ্চয় তা জানতেন। কলেজ কর্তৃপক্ষের জন্য ওদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে গেল।” কলেজ কর্তৃপক্ষ অভিযোগ মানতে চাননি।
দ্বৈপায়নকে নিয়ে কলকাতার ঠাকুরপুকুরের বাড়িতে ফিরে আতঙ্ক কাটেনি ঘোষ পরিবারের। তাঁর বাবা প্রদীপবাবু বলেন, “ছেলেকে যে ফের কলেজে পাঠাব তার ভরসা পাচ্ছি না। পরে কলেজের বাইরে যে তাঁর উপরে হামলা হবে না, সে নিশ্চয়তা কোথায়?” তাঁর আক্ষেপ, ছেলের পড়ার খরচ চালানোর জন্য ব্যাঙ্ক থেকে মোটা টাকার ঋণের আবেদন করেছেন। ভর্তি করেছিলেন আত্মীয়দের কাছ থেকে টাকা ধার করে। তাঁর মা মধুমিতাদেবী বলেন, “ছেলেকে আর দূরে পাঠাতে চাই না।” প্রদীপবাবু বিষ্ণুপুর থানায় ধৃত দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে পৃথক একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ছাত্রটির অভিযোগের ভিত্তিতেই তারা তদন্ত শুরু করেছে। রবিবার হস্টেলে দুই সিনিয়র ছাত্র তাঁকে শারীরিক নিগ্রহ করে বলে অভিযোগ। এর আগেও এখানে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। |