|
|
|
|
একলব্য স্কুলে পড়ুয়াদের খাবার নিয়ে অনিশ্চয়তা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জঙ্গলমহলের উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রশাসনকে তৎপর হতে বলেছেন বারে বারেই। কিন্তু প্রশাসনিক গয়ংগচ্ছ ভাবের জন্যই রাজ্য অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতর পরিচালিত ঝাড়গ্রামের ‘একলব্য আদর্শ আবাসিক বিদ্যালয়’-এর প্রায় তিনশো আদিবাসী পড়ুয়ার খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
ঝাড়গ্রামের সরকারি এই স্কুলের আবাসিক ছেলেমেয়েরা সরকারি খরচে হস্টেলে থেকে লেখাপড়ার সুযোগ পায়। ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাসের ভাঁড়ারের রসদ সরবরাহকারীরা গত চার মাস কোনও টাকা পাননি। শহরেরই ৬ সরবরাহকারীর অভিযোগ, নিয়মিত তাঁরা পড়ুয়াদের খাবার জন্য চাল, ডাল, মাছ, মাংস, কাঁচা আনাজ, দুধ, ফল সরবরাহ করেন। পড়ুয়াদের পোশাক-পরিচ্ছদ-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীও তাঁরা সরবরাহ করেন। অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের মেদিনীপুরের জেলা প্রকল্প আধিকারিকের কার্যালয় থেকে সরবরাহকারীদের টাকা মেটানো হয়। কিন্তু চলতি বছরের জুন মাসের পরে আর টাকা পাওয়া যায়নি। অভিযোগ, নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রীর সরবরাহকারীরা গত বছরের অনেক টাকাও পাননি। বার বার সংশ্লিষ্ট দফতরে জানিয়েও সুরাহা হয়নি। অন্য দিকে, প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মালপত্র সরবরাহের টেন্ডারের মেয়াদ গত ফেব্রুয়ারি মাসেই শেষ হয়ে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও নতুন করে টেন্ডার ডাকাও হয়নি। পুরনো সরবরাহকারীরাই পড়ুয়াদের স্বার্থে এখনও মালপত্র সরবরাহ করছেন। প্রসঙ্গত, গত দু’মাস ধরে স্কুলের শিক্ষক ও কর্মীরা বেতনও পাননি।
মঙ্গলবার স্কুলের প্রধান শিক্ষককে সরবরাহকারীরা লিখিত ভাবে জানিয়েছেন, বকেয়া টাকা অবিলম্বে না-পেলে তাঁদের পক্ষে মালপত্র সরবরাহ করা আর সম্ভব নয়। ফলে মহা সমস্যায় পড়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকেরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফটিকচন্দ্র ঘোষ বলেন, “সরবরাহকারীদের সমস্যার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সরবরাহকারীরা জিনিসপত্র দেওয়া বন্ধ করলে আমরা ভীষণ অসুবিধায় পড়ব। ওঁরা যদি একান্তই মালপত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেন, তা হলে পড়ুয়াদের স্বার্থে ৭ দিন আগে এ বিষয়ে আমাদের জানাতে বলেছি।” প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত সেপ্টেবর থেকে অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের জেলা আধিকারিক পদে স্থায়ী কোনও অফিসার নেই।
জেলা পরিকল্পনা দফতরের আধিকারিক প্রণব ঘোষকে জেলা অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা দফতরের কাজে সারা দিন প্রণববাবুকে অত্যন্ত ব্যস্ত থাকতে হয়। ফলে, উপযুক্ত তদারকির অভাবেই একলব্য স্কুলের এই অর্থাভাব বলে মানছেন প্রশাসনের একাংশ। প্রণববাবুকে বিষয়টি জানানো হলে তাঁর আশ্বাস, “সমস্যা মেটাতে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে। আদিবাসী পড়ুয়াদের খাদ্য সঙ্কট হতে দেব না।” |
|
|
|
|
|