|
|
|
|
চুরি-ছিনতাইয়ে জেরবার শহরবাসী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
আপন মনে হেঁটে চলেছেন। হঠাৎ দেখা গেল গলা থেকে সোনার চেনটা ছাড়িয়ে নিয়ে দ্রুত মোটরবাইকে পালিয়ে গেল এক যুবক। চিৎকার শুনে আশপাশে থাকা মানুষজন কিছু বুঝে ওঠার আগেই অনেক দূর পালিয়েছে দুষ্কৃতী। মেদিনীপুর শহরে মহিলাদের গলা থেকে হার ছিনিয়ে নেওয়ার এমন ঘটনা এখন রোজকার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে থানায় অভিযোগ হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হয় না। অভিযোগ, থানায় জানিয়েও বিশেষ লাভ হয় না। খোওয়া যাওয়া জিনিস উদ্ধার দূরের কথা, উল্টে নানা কথা জিগ্যেস করে জেরবার করে পুলিশ। শহরবাসী জেরবার।
বিভিন্ন এলাকা থেকে মোটরবাইক, সাইকেল চুরির ঘটনাও বাড়ছে। সোমবার রাতে রবীন্দ্রনগর শিবকালী মন্দিরের তালা ভেঙে চুরি হয়ে গেল মন্দিরের যাবতীয় সামগ্রী। পিতলের বড় কলসী, ঘটি, হাঁড়ি, কাঁসার থালা থেকে পুজোর যাবতীয় উপকরণ উধাও। মঙ্গলবার সকালে পূজারী এসে হতবাক। মন্দিরের তালা ভাঙা। ভিতরে ঢুকে দেখেন কিছুই নেই। মন্দির-কমিটির সম্পাদক সোমনাথ দাস বলেন, “এ ভাবে মন্দিরের তালা ভেঙে চুরি হয়ে যাবে ভাবতে পারিনি। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।” চুরি-ছিনতাই বাড়ার কথা অবশ্য স্বীকার করে নিচ্ছে পুলিশও। কোতোয়ালি থানার আইসি পবিত্র বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কয়েকটি চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। আমরাও চেষ্টা করছি এ সব বন্ধ করতে। কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” |
|
রবীন্দ্রনগরে মন্দিরে চুরির পর। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
কিন্তু সাধারণ মানুষের অভিযোগ, পুলিশের উদাসীনতার কারণেই চুরি-ছিনতাই বাড়ছে। পুলিশি টহলের নামে পুলিশ কোনও একটি জায়গায় দাঁড়িয়ে গল্প করে। সাদা পোশাকের পুলিশও শহরের বিভিন্ন জায়গায় চুরি, ছিনতাইকারীদের খোঁজ নেওয়ার নামে কোনও একটি চায়ের দোকানে আড্ডায় ব্যস্ত থাকে। ফলে দুষ্কৃতীদের টিকিটিও ধরা যায় না। পুলিশ যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিশের পাল্টা বক্তব্য, এক মাসে কোতোয়ালি থানা থেকে ৬ জন অফিসার বদলি হয়েছেন। তাঁদের পরিবর্তে নতুন কর্মী পাঠানো হয়নি এখনও। দুষ্কৃতীদের কাছেও পুলিশের এই দুর্বলতা অজানা নয়। এই সময়টাকেই কাজে লাগাচ্ছে তারা। কয়েক দিন আগেই বার্জটাউন পুজোর মাঠ দিয়ে হাঁটছিলেন এক মহিলা। হঠাৎ তাঁর গলা থেকে হার ছিনিয়ে নিয়ে মোটরবাইকে পালাচ্ছিল এক দুষ্কৃতী। যদিও পরে সে ধরা পড়ে। উত্তমমধ্যম দিয়ে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। রবিবার সকালেই সুভাষনগরের রাস্তায় ওই ভাবেই হার ছিনতাইরে ঘটনা ঘটে। বধূ মামনি পাল বলেন, “চার দিকে চুরি-ছিনতাইয়ের খবরে আমরা আতঙ্কিত। দিনের বেলাতেও দুষ্কৃতীরা এত সাহস পাচ্ছে কোত্থেকে, ভেবে পাচ্ছি না!’’ সাধারণ মানুষের দাবি, পুলিশ সক্রিয় হয়ে শহরকে নিরাপদ করুক। |
|
|
|
|
|