|
|
|
|
বিধায়ক জেলে, উৎসবের উপহারও পড়ে গড়বেতায় |
বরুণ দে • মেদিনীপুর |
পুজো ও ঈদ উপলক্ষে এলাকার গরিব মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য প্রত্যেক বিধায়ককেই ধুতি, শাড়ি, শিশুদের পোশাক দেওয়া হয়। কিন্তু, গড়বেতার বিধায়কের জন্য বরাদ্দ সেই সব সরঞ্জাম বিলিই হয়নি। পড়ে রয়েছে জেলা প্রশাসনের গুদামেই। কঙ্কাল-কাণ্ডে জড়িয়ে গড়বেতার সিপিএম বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ যে সেই পুজোর আগে থেকেই জেলে!
অবিলম্বে সে সব সরঞ্জাম এলাকার গরিব মানুষের মধ্যে বিতরণের দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস। চলতি বছরের বিধানসভা নির্বাচনে গড়বেতা কেন্দ্রের পরাজিত কংগ্রেস প্রার্থী হেমা চৌবের বক্তব্য, “দীর্ঘদিন নানা সরঞ্জাম পড়ে থাকার ফলে গরিব মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন। বিষয়টি জেলাশাসককেও জানিয়েছি।” প্রশাসন সূত্রের অবশ্য দাবি, এই সব পোশাক-আশাক কোথায় পাঠানো হবে, তা জানতে চেয়ে নিয়মমাফিক বিধায়কের ঠিকানায় চিঠি পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু জবাব আসেনি। সংশ্লিষ্ট আধিকারিক পার্থ চক্রবর্তীর বক্তব্য, “এই সব সরঞ্জাম বিধায়কের কাছেই পাঠানো হয়। এ ক্ষেত্রে বিকল্প কোনও নির্দেশও নেই।” ‘পরিবর্তনের হাওয়া’র মধ্যেও গড়বেতা থেকে এ বারও জেতেন সুশান্তবাবু। কিন্তু, ভোটের কিছু দিন পর থেকেই তিনি ‘এলাকা ছাড়া’। জুনের গোড়ায় তাঁর আদিবাড়ি বেনাচাপড়া সংলগ্ন দাসেরবাঁধ থেকে বেশ কিছু হাড়গোড় উদ্ধার হয়। তার সঙ্গে জুড়ে যায় ন’বছর আগে কেশপুরের পিয়াশালায় সংঘটিত এক গণহত্যার প্রসঙ্গ। এই কঙ্কাল-কাণ্ডেই অভিযুক্ত হয়ে গ্রেফতার হন সুশান্তবাবু। এখনও তিনি জেলবন্দি।
এ দিকে, প্রতি বছরের মতো এ বারও পুজো ও ঈদ উপলক্ষে বিধানসভা-পিছু ধুতি, শাড়ি বরাদ্দ হয়। কিন্তু, গড়বেতার বিধায়ক জেলে থাকায় তাঁর এলাকার জন্য বরাদ্দ সেই সব সরঞ্জাম এখনও জেলা প্রশাসনের গুদামেই পড়ে রয়েছে। হেমাদেবীর বক্তব্য, “এ সব সরঞ্জাম গরিব মানুষের জন্য। আর কতদিন এ ভাবে পড়ে থাকবে? প্রশাসনের উচিত বিকল্প ব্যবস্থা করা।” ইতিমধ্যেই এই দাবি জেলাশাসককেও জানিয়েছেন এই কংগ্রেস নেত্রী। প্রশাসন সূত্রে খবর, পুজো ও ঈদ উপলক্ষে গড়বেতা এলাকার জন্য মোট ৬০০ ধুতি, ৯০০ শাড়ি, ২০০ লুঙ্গি, ৯০০ শিশু-পোশাক ও আরও কিছু পাজামা, সালোয়ার বরাদ্দ হয়েছিল। সঙ্গে ৫০০ ত্রিপলও এসেছে।
সমস্যা শুধু উৎসবের উপহার নিয়েই নয়। বিধায়ক এলাকা-উন্নয়ন তহবিলের টাকা বরাদ্দ হলেও গড়বেতার বিধায়ক জেলে থাকায় উন্নয়ন-পরিকল্পনাও জমা পড়েনি। এ ক্ষেত্রেও জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের বক্তব্য, “পরিকল্পনা জমা দেওয়ার জন্য গড়বেতার বিধায়কের ঠিকানায় চিঠি পাঠানো হয়েছে। উত্তর আসেনি।” সব মিলিয়ে উন্নয়ন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কাই দেখা দিচ্ছে। তাই, বিকল্প ব্যবস্থার দাবিও জোরালো হচ্ছে। |
|
|
|
|
|