তুষের আগুন আলো ছড়াচ্ছে গ্রামে
তুষের আগুন পাল্টে দিয়েছে গোটা মজৌলিকে। এ বার সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ছে মজৌলি ছেড়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
কিন্তু এই আগুন পুড়িয়ে দেয় না। বরং, অন্ধকার গ্রামকে আলো দিয়ে নতুন জীবন দেয়।
এই যেমন বিহারের মজৌলির কথাই ধরুন। সরকারি বিদ্যুৎ থেকেও নেই। দিনের পর দিন, রাতের পর রাত অন্ধকারেই থাকতে হত মজৌলিকে। যেমন থাকতে হয় বিহারের অধিকাংশ গ্রামকেই। কিন্তু মজৌলির এই চেনা চিত্রটাই পাল্টে দিয়েছে তুষের আগুন। সেখানে ধানের তুষের আগুন থেকে তৈরি হচ্ছে বিদ্যুৎ। আর তুষ থেকে তৈরি হওয়া ওই বিদ্যুৎই এখন একমাত্র ভরসা মজৌলি এবং তার আশপাশের দশটি ব্লকের পাঁচ হাজার পরিবারের কাছে।
রাজ্য সরকার যা পারেনি, তা করে দেখিয়ে মজৌলির ‘হিরো’ এখন ‘হাস্ক পাওয়ার সিস্টেম প্রাইভেট লিমিটেড’। ২০০৭ সালে এ রাজ্যে এসে এই কাজ শুরু করে ওই সংস্থাটি। ধানের তুষ দিয়ে একটি বড় মণ্ড করা হয়। এরপর সেই তুষে আগুন দেওয়া হয়। সেখান থেকে যে ধোঁয়া বেরোয় তা একটি বড় নলের মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হয় সোজা একটি মেশিনে। এর মাঝে ধোঁয়াকে দু’টি ভাগে পরিশুদ্ধ করে দূষণ মুক্ত করা হয়। এই ধোঁয়া সেই মেশিনে যাওয়ার পরে সেখানে থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়ে যায়। এরপরেই সেই বিদ্যুৎ পৌঁছে যায় মানুষের কাছে। আগাম টাকা দেওয়ার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়। সাধারণত দু’টি লাইট জ্বালানোর জন্য মাসে ১৫০ টাকা খরচ দিতে হয়। একটি মিটার থেকে তিনটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা আছে।
মজৌলির উমেশ মাহাতো, রাজেশ শর্মা বা মুকেশ পটেলদের কথায়, “সরকারি বিদ্যুৎ থেকেও আমরা পাই না। এরাই আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে।” সরকারি বিদ্যুতের হাল জানাতে গিয়ে ওঁরা বলেন, “সংযোগ থাকা সত্ত্বেও এখানে দিনের পর দিন লোডশেডিং থাকে।”
সংস্থার সিইও জ্ঞানেশ পাণ্ডে বলেন, “২০১৫ সালের মধ্যে আমরা দেশ ও তার বাইরে ২০১৫টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছি। তবে বিদ্যুতের দাম সাধারণ মানুষের ক্ষমতার মধ্যে রাখব বলেই ঠিক করেছি।” জ্ঞানেশ জানান, সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় তারা এই কাজের বরাত পেয়েছে। এ ছাড়াও নেপালে ইতিমধ্যেই তারা কাজ শুরু করে দিয়েছে। বিহারেও সীতামঢ়ি, মুজফ্ফরপুর এবং মোতিহারিতে এ রকম বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির কাজ শুরু করেছে হাস্ক পাওয়ার সিস্টেম।
মানুষের কাছে সমান্তরাল ভাবে এই বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়ে অবশ্য হেলদোল নেই বিহার সরকারের। বরং রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী বিজেন্দ্র যাদব বলেন, “আমরা আমাদের সাধ্যের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করছি। তবে বেসরকারি এবং অপ্রচলিত বিদ্যুতে আমাদের আপত্তি নেই। সেই কারণে ওই সংস্থাকে আমরাই কাজ করার অনুমতি দিয়েছি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.