|
|
|
|
কিংফিশারের সঙ্কট |
সরকার নয়, ব্যাঙ্কের কাছেই ধার চান মাল্য |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বাজারে শেয়ার ছেড়ে এবং কম সুদে টাকা ধার করে কিংফিশার বিমান সংস্থাকে বাঁচাতে চান সংস্থার মালিক বিজয় মাল্য। একই সঙ্গে দেশের বাজার থেকে চড়া দামে জ্বালানি না কিনে বিদেশ থেকে তুলনায় সস্তায় জ্বালানি আমদানি করতে চান তিনি।
মঙ্গলবার মুম্বইয়ে এই ত্রি-মুখী পরিকল্পনার কথা জানিয়ে বিজয় মাল্যর দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে তিনি সরাসরি অর্থ সাহায্য চান না। যদিও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এসবিআই-এর নেতৃত্বাধীন ১৩ ব্যাঙ্কের কনসর্টিয়ামের কাছ থেকেই তিনি কম সুদে ৭০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকা ধার চাইলেন। জানালেন, বাজারে ২০০০ কোটি টাকার বিশেষ শেয়ার ছাড়ার জন্য সেবি-র কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। মাল্যর দাবি, গত বছর জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় এ বছর ওই তিন মাসে কিংফিশারের আয় বেশি হয়েছে। তা সত্ত্বেও জ্বালানির আকাশ-ছোঁয়া দাম মেটাতে গিয়ে সংস্থার ক্ষতি হয়েছে দ্বিগুণ। মাল্য মনে করেন, বিদেশ থেকে জ্বালানি কিনতে পারলে এতটা ক্ষতি হত না। তাই, বিদেশ থেকে জ্বালানি আমদানি করার জন্য তাঁর সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড-এর কাছে আবেদন জানিয়েছে বলেও মাল্য এ দিন জানান।
মাল্যর মতে, জ্বালানির দাম এবং অত্যধিক করের চাপে ভারতীয় বিমানসংস্থাগুলি ধুঁকছে। এই অবস্থায় বিদেশি বিমানসংস্থার লগ্নিকে অবিলম্বে স্বাগত জানানো উচিত কেন্দ্রের। তাঁর কথায়, “একটি বিমানসংস্থার সমস্যা অন্য একটি বিমানসংস্থাই তো সব চেয়ে ভাল বুঝতে পারবে। কোনও বিদেশি বিমানসংস্থার সঙ্গে ভারতীয় বিমানসংস্থা আর্থিক চুক্তি করলে সরকারের আপত্তি থাকবে কেন?”
প্রবল আর্থিক অনটনের কারণে একের পর এক উড়ান বাতিল করে গত এক সপ্তাহে খবরের শিরোনামে চলে এসেছে কিংফিশার। সংস্থা আদৌ চলবে কি না, তা নিয়েই শুরু হয় জল্পনা। শোনা যায়, মাল্য নাকি কেন্দ্রের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য চেয়েছেন। এ নিয়ে সরব হয় বিরোধী
দলগুলি। এ হেন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবারই প্রথম সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন মাল্য। দাবি করলেন, তাঁর সংস্থা ঘুরে দাঁড়াবে। মাল্যর কথায়, “বিমান পরিবহণ আদতে খরচসাপেক্ষ ব্যবসা।
তাই, সস্তার টিকিটের প্রতিযোগিতায় আমি আর নেই। এ বার থেকে সেই সব যাত্রীদের জন্যই পরিষেবা দেওয়া হবে, যাঁরা বেশি দাম দিয়ে টিকিট কাটতে পারবেন।”
ভারতের অন্যতম বড় মদ প্রস্তুতকারক সংস্থা ইউবি গ্রুপের চেয়ারম্যান মাল্য। দেশে-বিদেশে তাঁর আরও অনেক ব্যবসা রয়েছে। তবু কিংফিশারের প্রতি মাল্যর আলাদা টান রয়েছে বলে জানাচ্ছে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল। তিনি নিজে বিমান চালাতে ভালোবাসেন। তাই কোনও ভাবেই এই সংস্থা বন্ধ করে দিতে চান না। কিংফিশারকে বাঁচাতে নিজের অন্য সংস্থা থেকে টাকা এনে ঢালতে পারেন বলে জানাচ্ছে মাল্যর ঘনিষ্ঠ মহল। এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে অবশ্য মাল্য ব্যাঙ্কের কাছ থেকে কম সুদে টাকা ধার চাওয়ার কথাই বলেছেন। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে কর দাতাদের টাকা নিয়ে আমি আমার সংস্থা বাঁচাতে চাই না। আমি শুধু কম সময়ের জন্য এই টাকা কম সুদে ধার চাইছি।”
ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ‘লেটার অফ ক্রেডিট’ নিয়ে তেল সংস্থার বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিতে চান বলেও জানিয়েছেন মাল্য। তাঁর দাবি, “যে তিনটি সংস্থা নিয়মিত আমাদের জ্বালানি সরবরাহ করে, তাদের মধ্যে দু’টি সংস্থার বকেয়া সমস্ত টাকাই মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি রয়েছে একটি সংস্থার কাছে।” |
|
|
|
|
|