মেট্রোর রেকের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে অভিযোগ নতুন নয়। এ বার প্রশ্ন উঠছে নতুন বাতানুকূল রেকগুলির রক্ষণাবেক্ষণ নিয়েও।
মঙ্গলবার সকালে অফিসের ব্যস্ত সময়ে এক ঘণ্টা মেট্রো পরিষেবার বিভ্রাটে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় মেট্রো-কর্তৃপক্ষ ত্রুটি সামলে উঠতে না উঠতেই দুপুরে দমদম স্টেশনে কারশেড থেকে আসা একটি বাতানুকূল রেক খারাপ হয়ে যায়। প্ল্যাটফর্মে এসে দরজা খোলে না ট্রেনটির। প্রায় কুড়ি মিনিট ধরে ত্রুটি সারানোর ব্যর্থ চেষ্টার পরে কারশেডে সেটিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পরে স্বাভাবিক হয় আপ লাইনে মেট্রো চলাচল।
মেট্রো সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ একটি আপ ট্রেন কবি সুভাষ স্টেশনে দেরি করে ঢোকে। মেট্রোর যুক্তি, ওই ট্রেনে প্রচণ্ড ভিড় ছিল। যাত্রীদের ওঠানামা করতেই দেরি হয়েছে। সে কারণেই দেরি করে কবি সুভাষ স্টেশনে পৌঁছয় ট্রেনটি। এর পরে ফের সেটিকে ঘুরিয়ে কবি সুভাষ থেকে রওনা করতেও দেরি হয়। যার জেরে আরও ভিড় জমে ডাউন লাইনের প্ল্যাটফর্মগুলিতে। দমদম থেকে ফেরার পথেও দেরি করতে থাকে ট্রেনটি। যার জেরে ওই সময়ে পরপর বেশ কয়েকটি ট্রেন চলাচলে দেরি হয়।
এর প্রায় এক ঘণ্টা পরে সকালের সমস্যার জের যখন সবে সামলে নিয়ে স্বাভাবিক হচ্ছে মেট্রো পরিষেবা, তখনই ঘটে দ্বিতীয় বিভ্রাট। দুপুর দেড়টা নাগাদ দমদম স্টেশনে একটি বাতানুকূল রেক (এসি-১) চালানো নিয়ে সমস্যায় পড়েন মেট্রো-কর্তৃপক্ষ। মেট্রো সূত্রে খবর, ট্রেনটি স্টেশনে দেওয়া মাত্রই দরজাগুলির উপরে আছড়ে পড়ে ভিড়। কিন্তু দরজা আর খোলে না। অনেক বার চেষ্টা করেও চালক দরজা খুলতে ব্যর্থ হলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষারত যাত্রীদের মধ্যে। সেই সময়ে স্টেশনের মাইকে ঘোষণা করা হয়, ‘যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য দমদম থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত ট্রেন আপাতত বন্ধ।’
কিন্তু ততক্ষণে প্ল্যাটফর্মে আর তিল ধারণেরও জায়গা নেই। প্রায় এই ভাবে মিনিট কুড়ি কাটার পরে বাতানুকূল রেকটি আস্তে আস্তে প্ল্যাটফর্ম থেকে কারশেডের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্য একটি রেক প্ল্যাটফর্মে দেওয়া হলে ফের শুরু হয় মেট্রো চলাচল। মেট্রোর জনসংযোগ আধিকারিক প্রত্যুষ ঘোষ বলেন, “প্রচণ্ড ভিড়ে সকালে একটি ট্রেনের মাত্র তিন মিনিট দেরি হওয়ায় পরের এক ঘণ্টা সব ট্রেনগুলি সামান্য দেরিতে চলেছে। পরের বাতানুকূল ট্রেনটি যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।”
নতুন এই বাতানুকূল রেকগুলি এখন মেট্রো-কর্তৃপক্ষের গলগ্রহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। লাইনে নামানো মাত্রই বিভিন্ন জায়গায় নিত্যদিনই আটকে পড়েছে সেগুলি। চাকা আটকে যাওয়া, বাতানুকূল যন্ত্র খারাপ হওয়া, দরজা না খোলার মতো নানা সমস্যা হচ্ছে এই রেকগুলি নিয়ে। কিন্তু নতুন রেকগুলির জন্য কত দিন এ ভাবে যাত্রীদের ভোগান্তি চলবে, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়ে। ‘যান্ত্রিক ত্রুটি যখন তখন হতেই পারে’ বলে মেট্রোর কর্তারা বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও, যাত্রীরা প্রশ্ন তুলছেন ট্রেনগুলির মান নিয়েও। |