বহু বছর ধরে চলে আসা এক বঞ্চনার কাহিনি বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। গ্রামটির নাম আঝাপুর। পূর্ব রেলের হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লাইনে মসাগ্রাম নামে একটি স্টেশন আছে। কেউ জানে না, স্টেশনটির নাম মসাগ্রাম কেন হল। স্টেশনটি যে অঞ্চলে অবস্থিত, সেটি আঝাপুর মৌজার অন্তর্গত। জে এল নং ২০, ম্যাপ নং ৩, এমনকি রেলস্টেশন ছাড়িয়ে ওপাশের বাজারে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ ভবনের নামও আঝাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয় এবং আঝাপুর কৃষি সমবায় ব্যাঙ্ক। আঝাপুর, বর্ধমান জেলার জামালপুর থানার একটি সুপ্রাচীন সমৃদ্ধ গ্রাম। নীহাররঞ্জন রায়ের বাঙ্গালীর ইতিহাস গ্রন্থে এই গ্রাম ‘সাত দেউলিয়া আঝাপুর’ নামে উল্লেখিত। এই অঞ্চলেই রয়েছে রেখ দেউলের অন্যতম প্রাচীন নিদর্শন। বিশিষ্ট ঔপন্যাসিক ও ঋক্ বেদের অনুবাদক রমেশচন্দ্র দত্তের পিতৃভূমি এই আঝাপুর গ্রাম। মেডিক্যাল কলেজের একজন নামজাদা ছাত্র ডা. নরেন্দ্রনাথ মিত্র (বাদলবাবু) এই গ্রামেরই সন্তান। প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে এই গ্রামকেই তাঁর কর্মক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। প্রয়াত বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. সুজিত মিত্রও এই গ্রামের সন্তান। পল্লিকবি কৃষ্ণধন দে-ও এই গ্রামেই জন্মগ্রহণ করেন। এই গ্রামের সন্তান আনন্দ পুরস্কার ও রবীন্দ্র পুরস্কার প্রাপ্ত অধ্যাপক গৌরীপ্রসাদ ঘোষ। এ ছাড়াও আরও বিশিষ্ট চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, অধ্যাপক ও সাংবাদিক জন্মগ্রহণ করেছেন এই গ্রামে। এই গ্রামে রয়েছে ১২৫ বছর অতিক্রান্ত ১টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি সাব পোস্ট অফিস, ১টি পশু চিকিৎসালয়, ১টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, ১টি নার্সিং হোম। মেমারি-তারকেশ্বর রাস্তাটি এই গ্রামের মধ্য দিয়ে চলে গিয়েছে। গ্রামের একপাশ দিয়ে গিয়েছে দেশের একটি ব্যস্ততম সড়ক ‘দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে’। এত গুরুত্বপূর্ণ গ্রাম হওয়া সত্ত্বেও স্টেশনের নাম অজ্ঞাত কারণে বদল হয়নি। এই গ্রামের অধিবাসীরা বহুকাল পর্যন্ত এই বঞ্চনাকে ভবিতব্য বলে গ্রহণ করেছিলেন। আশা করি, এ বার এই অচলায়তনের অবসান ঘটবে। মসাগ্রাম রেল স্টেশনের নাম যুক্তিসংগত ভাবেই পরিবর্তিত হয়ে আঝাপুর রেলস্টেশন হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে।
অসিতবরণ মিত্র। আঝাপুর, বর্ধমান
|
শারদোৎসবে বাঁকুড়া জেলার মধ্যে বিষ্ণুপুর বেশ কয়েক বছর ধরেই এক নিজস্ব জায়গা করে নিয়েছে। এ বছরও সারা শহর জুড়ে মন্দিরের অনুপম টেরাকোটার শৈলীতে আলোর রোশনাই, আর অসংখ্য পর্যটক সেই আলোর রোশনাই গায়ে মেখে হঠাৎ এসে থমকে দাঁড়িয়েছেন ছিন্নমস্তায় অবস্থিত স্বয়ং দেবতা মদনমোহন। একটি মাত্র টিউবলাইটের আলোয় (যা স্থানীয় টেরাকোটা ব্যবসায়ীরা নিজেদের উদ্যোগে ও খরচে আয়োজন করেছেন) একাকী আঁধারে দাঁড়িয়ে রয়েছে অবহেলিতের মতো। হতাশ পর্যটকরা, লজ্জিত বিষ্ণুপুরবাসী হিসেবে। পূর্বতন সরকারের কাছে বহু দরবার করেছি, নতুন সরকার আসার পর আশায় চিঠিপত্র পাঠিয়েছি, যদি কোনও দিন ঘুম ভাঙে পর্যটন দফতরের।
আশিস রায়। দলমাদল, বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া
|
এই বিভাগে চিঠি পাঠান সম্পূর্ণ নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে।
আমাদের চিঠি, সম্পাদকীয় বিভাগ,
আনন্দবাজার পত্রিকা প্রাঃ লিঃ,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১ |
|