সম্পাদক সমীপেষু... |
প্রয়াণ-শতবর্ষে নিবেদিতা আমরা ভুলেই থাকলাম |
রবীন্দ্রনাথের সার্ধশত জন্মবার্ষিকীর আলোকদীপের উজ্জ্বলতার নীচে যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ দিবস তমসাচ্ছন্ন হয়ে রইল তার মধ্যে অন্যতম একটি দিন ১৩ অক্টোবর ২০১১ সিস্টারের প্রয়াণ শতবার্ষিকী।
মূলত এই কারণেই সপরিবার দার্জিলিং ভ্রমণ শারদীয় অবকাশে। ৪ অক্টোবর ২০১১ অনেক খুঁজে ‘রায়ভিলা’য় পৌঁছানো গেল। ম্যালের কাছেই যে হোটেলে ছিলাম তার পরিচালক বহু উদ্যোগেও ‘রায় ভিলা’-র সন্ধান দিতে পারেননি। শেষে কলকাতা থেকে অনুজপ্রতিম অধ্যাপকের নির্দেশ এবং পথের ধারের দোকানি বা চা বিক্রেতাদের দেওয়া হদিশে লেবংয়ের পথে পড়ল বাড়িটি। টিলার মাথায় পুরনো নকশার সুদৃশ্য বাংলো বাড়ি। উপরে উঠতে উঠতে ভেসে এল একদল যুবকের সম্মেলক সংগীত (জনপ্রিয় হিন্দি চলচ্চিত্রের)। টিলার মাঝামাঝি উঠতে হঠাৎ স্তব্ধ সেই বৃন্দগান। কেউ কেউ জড়ো হলেন। আগমনের উদ্দেশ্য বললে তাঁরা উত্তর দেন ‘সিস্টার নিবেদিতা’ সম্পর্কে কিছুই তাঁদের জানা নেই। বাড়িটি সম্পর্কেও এ ধরনের কিছু তাঁরা জানেন না। (যদিও বাড়ির দেওয়ালে একটি প্রস্তর ফলকে উল্লেখ আছে যে, সে বাড়িতে নিবেদিতা শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন)। যে সব সংবাদ বাড়িটি সম্পর্কে তাঁরা দেন সেগুলি হল,
১) বাড়ির বাইরের চৌহদ্দিতে টি বোর্ডের একটি অফিস চলে। যেটা সে দিন বন্ধ।
২) এক মেমসাহেব ও তাঁর স্বামীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণেই সম্ভবত বাড়িটিতে অশরীরী আত্মাদের আসা-যাওয়া।
৩) প্রত্যেক বছর একটি বিশেষ দিনে চার্চ থেকে পাদ্রি এবং সহযোগীরা এসে বিশেষ একটি ঘরে প্রার্থনা করেন (ওই বিশেষ দিন এবং বিশেষ ঘরটি সম্পর্কেও তাঁরা কিছু জানেন না।) |
|
ঐতিহাসিক। রায়ভিলা। ভগিনী নিবেদিতার প্রয়াণ-ভবন। ছবি: সুদীপ দত্ত। |
বাংলোর ভিতরে গিয়ে দেখা যাবে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে একটু ইতস্তত করে তাঁরা জানান, সে ক্ষেত্রে তাঁদের ‘স্যারের’ কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। তাঁদের এবং স্যারের পরিচয়ে চমকিত হতে হল। যে বিশেষ রাজনৈতিক দলটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সহায়তায় পাহাড়ে শান্তি বিস্তারের আয়োজনে ব্যস্ত, তাদেরই যুবকদলের আপাতবাস সেখানে। বোঝা গেল এর বেশি এগোনো যাবে না। যদিও যুবকদের ব্যবহার অত্যন্ত ভদ্র ও সংযত।
পাহাড়ের উন্নয়নের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত সেখানকার পর্যটন। পর্যটনের কি একটা কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে না রায়ভিলা? প্রয়াণ শতবার্ষিকীতে একটা পুষ্পার্ঘ্যও কোথাও পড়েনি। সংবাদপত্রগুলি আশ্চর্য ভাবে নীরব ছিল। অন্তত রায়ভিলাকে অশরীরী আত্মার হাত থেকে বাঁচাবার চেষ্টাটুকু তো করা যায়। |
সোহিনী ঘোষ। প্রাক্তন সম্পাদক, নিবেদিতা বিদ্যালয় প্রাক্তনী সংসদ, কলকাতা-২
|
দূষণ চলছে, বাঁচান |
বর্ধমান জেলার দুর্গাপুর মহকুমার অন্তর্গত তিনশো বছরের পুরনো একটি বর্ধিষ্ণু বনেদি গ্রাম অঙ্গদপুর। আমরা অঙ্গদপুর এলাকার গ্রামবাসীরা বর্তমানে বাস করছি চরম দুর্দশার মধ্যে। এলাকার আধ কিলোমিটারের মধ্যে গড়ে উঠেছে তিনটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা-সহ কুড়িটি ছোট-বড় বেসরকারি কারখানা। ভয়াবহ পরিবেশ দূষণ এলাকার মানুষকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাচ্ছে। গ্রামের সীমানা বরাবর স্থাপিত হয়েছে একটি বিশেষ কারখানা। এই কারখানাটি আবার চিমনি দিয়ে ধোঁয়া না-বের করে রাতের অন্ধকারে কাজ সারে। হপারে পাথর ফেলার শব্দ, কারখানায় নানা রকম তীব্র শব্দ দীর্ঘ দিন ধরে চলছেই। সম্প্রতি কারখানার মধ্যে পনেরো-কুড়ি মিনিট অন্তর সাইরেনের তীব্র শব্দ। বয়স্ক মানুষ, রোগী এবং বাচ্চাদের কষ্ট সবথেকে বেশি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। |
অশোককুমার সৌমণ্ডল।
অঙ্গদপুর, দুর্গাপুর-১৫
|
বিদ্যাসাগরের জন্মদিন বঙ্গাব্দ মেনেই হোক! |
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয় তাঁর জন্মতারিখ সম্পর্কে ‘বিদ্যাসাগর চরিত’-এ লিখেছেন, ‘শকাব্দ ১৭৪২, ১২ আশ্বিন, মঙ্গলবার, দিবা দ্বিপ্রহরের সময়, বীরসিংহ গ্রামে আমার জন্ম হয়’। তাঁর তৃতীয় সহোদর শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন লিখেছেন, ‘১৭৪২ শকাব্দ অর্থাৎ সন ১২২৭ সালের ১২ আশ্বিন মঙ্গলবার দিবা দ্বিপ্রহরের সময় জ্যেষ্ঠাগ্রজ ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় ভূমিষ্ঠ হন’। বাংলার নবজাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ পণ্ডিত বিদ্যাসাগর মহাশয় খুব সচেতন ভাবেই তাঁর জীবনচরিতে খ্রিস্টাব্দ বা ইংরেজি মাসের নাম ও তারিখ উল্লেখ করেননি জন্মবিবরণী লেখার সময়। অথচ রাজ্য সরকার তাঁর জন্মদিন পালন করেন ২৬ সেপ্টেম্বর। কেন?
২৫ বৈশাখ যেমন বাঙালির হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে, ১২ আশ্বিনকে কেন বঞ্চনা করা হল? বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নিজের ইচ্ছাকে মর্যাদা দিতে এবং বাংলার সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ১২ আশ্বিন বিদ্যাসাগরের জন্মদিন পালন করা হোক। প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের ছুটির তালিকায় ২৬ সেপ্টেম্বর বিদ্যাসাগরের জন্মদিন উল্লেখ করা হয়েছে। মাননীয়া তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন, বিষয়টি বিবেচনা করে বঙ্গাব্দ মেনে ১২ আশ্বিনকে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জন্মদিন হিসেবে পালনের কথা ঘোষণা করুন। |
সন্দীপ সিংহ।
জামাইবাটি উচ্চ বিদ্যালয়, হরিপাল |
|