নাম তার ‘২০০৫ ওয়াইইউ ৫৫’। সে একটি গ্রহাণু। পৃথিবী থেকে তার স্বাভাবিক দূরত্ব ২৩ লক্ষ কিলোমিটার। কিন্তু আগামী বুধবার ভোরে সেটাই পৃথিবীর সওয়া তিন লক্ষ কিলোমিটারের মধ্যে আসতে চলেছে। পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্বও এর থেকে বেশি। এই অবস্থায় গ্রহাণুটির আকৃতি এবং গতিপ্রকৃতি ভাল করে বোঝা যাবে বলে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন। তবে খালি চোখে ওই গ্রহাণুটিকে দেখা যাবে না। সাহায্য নিতে হবে টেলিস্কোপের।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, গ্রহাণুর এ ভাবে পৃথিবীর কাছাকাছি আসাটা স্বাভাবিক মহাজাগতিক ঘটনা। আবহাওয়া, জোয়ার-ভাটা কিংবা অন্য কোনও মহাজাগতিক ক্রিয়াকলাপের উপরে গ্রহাণুর এর কোনও প্রভাব পড়বে না।
গ্রহাণু আসলে কী?
স্বভাবচরিত্রে গ্রহাণুও আসলে গ্রহেরই মতো। শুধু আকারে অনেক ছোট। কেন্দ্রীয় সংস্থা পজিশন্যাল অ্যাস্ট্রনমি সেন্টারের অধিকর্তা সঞ্জীব সেন জানান, গ্রহাণুরা সাধারণত মঙ্গল ও বৃহস্পতির মধ্যে ঘোরাঘুরি করে। আরও কিছু গ্রহাণু আছে ওই দুই গ্রহের বাইরে। এই গ্রহাণু সেই গোত্রের। কালো রঙের গোলাকার এই গ্রহাণুর পরিধি ৪০০ মিটার। ওজন প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টন।
নাসা জানিয়েছে, ২০০৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর এই গ্রহাণু আবিষ্কার করেন রবার্ট ম্যাকমিলান। ২০১০ সালে জ্যোতির্বিজ্ঞানী মাইক নোলান এবং তাঁর সহকর্মীরা এটির ছবি তোলেন। তবে তখন সেটি প্রায় ২৩ লক্ষ কিলোমিটার দূরে থাকায় ছবিটা ভাল আসেনি। আবিষ্কারের পরে এই প্রথম গ্রহাণুটি
পৃথিবীর এত কাছাকাছি আসছে। পৃথিবী থেকে তার দূরত্ব কমে যাওয়ায় ভাল ছবি পাওয়া যাবে বলে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের আশা। তাঁরা বলছেন, “পৃথিবীর এত কাছ দিয়ে ওই গ্রহাণু ছুটে যাওয়ার ফলে ভাল ছবি মিলবে। এর আগে এমন সুযোগ আসেনি। ওর ভিতরে কী কী আছে, তা দেখার সুযোগ আগে কখনও পাওয়া যায়নি।”
নাসার বিজ্ঞানীদের দাবি, ২০২৮ সালে ফের পৃথিবীর খুব কাছে আসবে এই গ্রহাণুটি। তখন পৃথিবীর সঙ্গে তার দূরত্ব দাঁড়াবে প্রায় আড়াই লক্ষ কিলোমিটার। |