পাঁচ গোলের লজ্জা ও চার গোলের প্রত্যাবর্তন
আত্মসমর্পণ প্রতিরোধ ছাড়াই
ডেম্পো-৫ (র্যান্টি-২, আব্রাঞ্চেস-২, সমীর)
মোহনবাগান-০
প্রিমিয়ার লিগের ছোঁয়া একটু অন্য ভাবে লাগল আই লিগেও। ওখানকার মতো ভারতেও বড় ম্যাচে গোলের বন্যা। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, আর্সেনাল, চেলসি এ বার পাঁচ বা তার বেশি গোল খেয়েছে। গোয়ায় সবুজ-মেরুনও পাঁচ গোল খেল। বলা যায়, চুপ করেই হজম করল।
ম্যাচের আগের দিন সন্ধ্যায় সুব্রত ভট্টাচার্য শোনাচ্ছিলেন, ডেম্পো কী করে এত ধারাবাহিক ভাল পারফরম্যান্স করে। সুব্রতর ব্যাখ্যা, “টিমের বেশির ভাগ ফুটবলারই ছ’-সাত বছর একসঙ্গে খেলছে। বোঝাপড়া অসাধারণ।” সেই বোঝাপড়াই বুধবার স্রেফ নাকানিচোবানি খাইয়ে দিল সবুজ-মেরুন ডিফেন্সকে। স্কোর লাইন আরও ভয়ানক হতে পারত। অ্যান্টনি পেরিরা ক্রস বারে মেরেছেন। আর আরও লজ্জার হাত থেকে বাঁচাতে সংগ্রামের গ্লাভসও সাহায্য করেছে।
তার সঙ্গে আই লিগে একটি সাবধানবাণীও রেখে গেল মোহনবাগান সমর্থকদের জন্য। ওডাফা-ব্যারেটো-সুনীলরা লিগ জিতবেন সেই স্বপ্ন না দেখাই ভাল। ম্যাচের আট মিনিটেই যখন র্যান্টির দূরপাল্লার শট গোলে ঢুকল তখনও আড়মোড়া ভাঙেনি সবুজ-মেরুন ডিফেন্স। গোলটা সত্যিই হয়েছে কি না বুঝে ওঠার আগেই ফের বক্সের মধ্যে জোয়াকিম আব্রাঞ্চেস। পনেরো সেকেন্ডের মধ্যে দু’নম্বর গোলটি খেল মোহনবাগান। পুরো সময়টাই দুর্দান্ত খেললেন আব্রাঞ্চেস। বিরতির পরই ম্যাচের শেষ এবং সবচেয়ে সুন্দর গোলটিও তাঁর। ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ হলেন তিনি।
এক দিকে জুয়েল-জাগতাররা একটার পর একটা মিসপাস করছেন। ক্লাইম্যাক্স-সমীররা তখন গ্যালারির খুদেদের শেখাচ্ছেন পাসিং কত রকমের হতে পারে। ডেম্পো-শিকারে দৌড়ে ভরসা রাখতে চেয়েছিলেন সুব্রত। তার জন্য হাদসন লিমাকে বসিয়ে খেলালেন জাগতারকে। যিনি প্রথম পঁয়তাল্লিশ মিনিট কাটালেন কিছু না করেই। বিরতির পরই তাঁর জায়গায় এলেন গৌরাঙ্গ দত্ত। তার আগেই দল পিছিয়ে গিয়েছে ০-৪। রাকেশ মাসির সঙ্গে দৌড়নোর কোনও সম্পর্ক ছিল বলেই মনে হল না। সুনীল কার্যত হয়ে গিয়েছিলেন একা স্ট্রাইকার। ব্যর্থ নবিকেও তুলে নিতে হল বিরতির কিছু পরে। ডিফেন্স এবং মাঝমাঠের মধ্যে কোনও যোগাযোগ ছিল না। চোট পাওয়া আনোয়ারকে তুলে নিতে হয় তিরিশ মিনিটেই। এই সব চোটের জন্য সুব্রত আঙুল তুললেন প্রি-সিজন কন্ডিশনিংয়ের উপরই। এই ম্যাচে দোষী খোঁজার মানে হয় না। সুব্রত হয়তো সে কারণেই বললেন, “একটা ম্যাচে এ রকম হয়ে যেতেই পারে। এত জন নিয়মিত ফুটবলার নেই।”
পাঁচ গোল খাওয়ার যুক্তি খুঁজতে কোচ প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুব্রত হাঁটলেন একই রাস্তায়। “জাগতার-সতীশদের অনভিজ্ঞতাও একটা ফ্যাক্টর হয়ে গেছে।” কাঠগড়ায় প্রধান আসামী অবশ্য মিসপাস। যা সবাই অল্পবিস্তর করলেন। সুব্রতর কথায়, “আমাদের চারটে মিসপাসে চারটে গোল খেলাম। আর কী বলব!” তবে দু’জনেই লম্বা লিগের নিরিখে এই হারকে বড় করে দেখছেন না।
ডেম্পো কোচ আর্মান্দো কোলাসো সাংবাদিক সম্মেলনে এসেই বলে দিলেন, “আশাই করিনি এত গোল পেয়ে যাব। অবশ্যই খুশি।” তবে তাঁকে চিন্তায় রাখছে জাতীয় শিবির। কোলাসোর কথায়, “জাতীয় দলের জন্য আমার আট জন ফুটবলার চলে যাবে। তখন টিম তৈরি করা সমস্যা হবে।”
এই মরসুমে মোহনবাগানের মোট ন’গোলের সাত গোলই করেছেন ওডাফা-ব্যারেটো জুটি। সাত গোলের জুটির অভাব তো নাড়া দেবেই। তার সঙ্গে আছে নড়বড়ে ডিফেন্স। সাগরপাড়ে পালতোলা নৌকা ডুবলেও রবিবারে পুণেতে মুম্বই এফ সি ম্যাচে কাণ্ডারি ব্যারেটোকে খেলিয়ে ঝুঁকি নেবেন না জানিয়ে দিলেন সুব্রত।
মোহনবাগান: সংগ্রাম, ধনরাজন, কিংশুক, আনোয়ার (সৌরভ), নবি (দলজিৎ), সতীশ, রাকেশ, জুয়েল, জাগতার (গৌরাঙ্গ), অসীম, সুনীল।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.