|
|
|
|
দুর্নীতির প্রশ্নে সনিয়াই নিশানা বিজেপি-র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
দু’দিন আগেই কংগ্রেস সভানেত্রীকে ঘুরিয়ে আক্রমণ শুরু হয়েছিল। পরিস্থিতি দেখে নেওয়ার পরে এ বার দুর্নীতির প্রশ্নে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে সরাসরিই আক্রমণ শুরু করল বিজেপি।
দলের সভাপতি নিতিন গডকড়ীর নির্দেশে বিজেপির মুখপাত্র জগৎ প্রকাশ নাড্ডা আজ দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে অভিযোগ করেন, “সনিয়া গাঁধীর নেতৃত্বেই সব দুর্নীতি হয়েছে। যাঁরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন, সনিয়া গাঁধীর ব্যক্তিগত মুখপাত্র দিগ্বিজয় সিংহ তাঁদের বিরুদ্ধেই আন্দোলন করছেন।” তাঁর দাবি, টু-জি কাণ্ডে যাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে, সেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে আপ্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করছেন সনিয়া। একই ভাবে কমনওয়েলথ দুর্নীতিতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতকেও আড়াল করছেন। বিজেপি মুখপাত্রের প্রশ্ন, “সনিয়াকে প্রশ্ন করছি, টু-জি দুর্নীতিতে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকার কতটা ডিএমকে, আর কতটা কংগ্রেস পেয়েছে?”
সাম্প্রতিক অতীতে সনিয়াকে এ ভাবে তীব্র ভাষায় আক্রমণের নজির নেই। দু’দিন আগে দলের মুখপাত্র প্রকাশ জাভড়েকর সনিয়াকে আক্রমণ শুরু করেছিলেন। তবে অনেকটাই সংযত থেকে। সভাপতি নিতিন গডকড়ীও তিহাড় জেলে বন্দি বিজেপির সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে সনিয়ার রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেলকে দায়ী করেছিলেন। কিন্তু সেই ‘সংযম’ কাটিয়ে আজ খোলাখুলি সনিয়াকে আক্রমণ শুরু করল বিজেপি। দলের এক শীর্ষ নেতার যুক্তি, একের পর এক দুর্নীতি হয়ে যাচ্ছে। অথচ সনিয়া গাঁধী চুপ করে বসে আছেন। দলের মুখপাত্র না হয়েও দিগ্বিজয় সিংহ অণ্ণা, রামদেব, শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর, বিজেপির বিরুদ্ধে বিষোদগার করে যাচ্ছেন। অথচ সনিয়া গাঁধী তাঁর বিরুদ্ধে টুঁ শব্দটি করছেন না। বরং দুর্নীতিতে সামিল নেতাদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। তাঁর কথায়, “আগামী লোকসভা নির্বাচনে আর যা-ই হোক, মনমোহন সিংহ দলের মুখ হবেন না। কিন্তু সনিয়া এবং রাহুল গাঁধী দলের হয়ে ভোট চাইতে যাবেন। তাই ভোট যত এগিয়ে আসবে, তাঁদের আরও আক্রমণ করবে বিজেপি।”
অতীতে বিজেপির মধ্যে সংশয় ছিল, খুব বেশি সনিয়াকে আক্রমণ করলে তা বুমেরাং হয়ে যাবে। এখন বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, পরিবেশ অনুকূলে রয়েছে। দুর্নীতির পাশাপাশি মূল্যবৃদ্ধি, পেট্রোল-রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে আম-আদমিও নাজেহাল। তার উপর লালকৃষ্ণ আডবাণীর দুর্নীতি-বিরোধী রথযাত্রাও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াচ্ছে। নেতাদের মতে, সাধারণ মানুষও এখন বুঝতে পারছেন, গোটা কর্মকাণ্ডের পিছনে রয়েছেন সনিয়া গাঁধী।
তবে আডবাণী নিজে এখনও সনিয়াকে আক্রমণ শুরু করেননি। বরং তিনি প্রধানমন্ত্রীকেই নিশানা করছেন। কর্নাটক সফরের পর আডবাণী এখন অনেক বেশি উজ্জীবিত। দলের মধ্যেও যে দুর্নীতির প্রশ্নে আপোস করা হবে না, সেই বার্তা বেঙ্গালুরুর মাটিতে দাঁড়িয়েই দিতে পেরেছেন তিনি। বিজেপির শীর্ষস্তরের এক নেতার কথায়, “আপাতত দলের তৃতীয় স্তরের নেতারা সনিয়াকে আক্রমণ করবেন। যখন প্রয়োজন হবে, শীর্ষ নেতারাও সনিয়াকে নিশানা করবেন।” |
|
|
|
|
|