|
|
|
|
শিশুমৃত্যুর জন্য দায়ী ‘রেফার’, অভিযোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
‘রেফার চক্র’-এর হাত থেকে মুক্তি না ঘটাতেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশুমৃত্যু ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ করল তৃণমূল প্রভাবিত চিকিৎসক সংগঠন।
মঙ্গলবার রাতে বর্ধমানের খোসবাগান পাড়ায় সাংবাদিক বৈঠকে এই অভিযোগ তোলে ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রোগ্রেসিভ সার্ভিস ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের তরফে এই অভিযোগ তোলা হয়। কালীপুজোর রাত থেকে ২৪ ঘণ্টায় বর্ধমান মেডিক্যালে ১২টি শিশুর মৃত্যুর পরে যে হইচই শুরু হয়েছে, এই বৈঠক কার্যত সেই সূত্রেই। তবে ওই দিনের পরে ‘অস্বাভাবিক’ শিশুমৃত্যু আর হয়নি। রবিবার থেকে সোমবার রাত দু’টি শিশু মারা গিয়েছে। হাসপাতাল সুপার গদাধর মিত্র সংবাদমাধ্যমের প্রতি আবেদন করেন, “আমরা যথাসাধ্য লড়াই করছি। শিশুমৃত্যু সংক্রান্ত প্রতিবেদনের জেরে যাতে আমরা গণরোষের শিকার না হই, সে দিকেও একটু নজর দিন।”
রাতে সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল প্রভাবিত চিকিৎসক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস বিশ্বাস ও সদস্য সজল সরকার অভিযোগ করেন, “মূলত তিনটি কারণে এই হাসপাতালে শিশুমৃত্যু ঘটছে। প্রথমত, একেবারে শেষ সময়ে শিশু বা আসন্নপ্রসবাকে ভর্তি করানো হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, ন্যূনতম চিকিৎসা না দিয়েই বীরভূম, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও হুগলির আরামবাগ মহকুমার নার্সিংহোমগুলি থেকে গুরুতর অসুস্থ শিশুদের এখানে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বর্ধমান জেলার বিভিন্ন সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি থেকেও এই ধরনের শিশুদের বিনা চিকিৎসায় রেফার করা হচ্ছে। তৃতীয়ত, গত ৩৪ বছরে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসা সংক্রান্ত পরিকাঠামো বাড়েনি।”
হাসপাতালের শিশু বিভাগে আরও বেশি টেকনিশিয়ান ও নার্স নিয়োগের দাবিও জানিয়েছেন দেবাশিসবাবুরা। তাঁদের আশা, এ বছরেই হাসপাতালে ‘সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিট’ কাজ শুরু করলে সমস্যা অনেকটাই এড়ানো যাবে। তাঁদের খেদ, সাধারণত সুস্থ শিশুর ওজন হওয়া উচিত ২.৮ কিলোগ্রাম। কিন্তু প্রায়শই প্রসূতি ও তাঁর পরিবারের সচেতনতা ও উপযুক্ত পরিচর্যার অভাবে এমনকী ১.২ কিলোগ্রামের শিশু জন্মায়। প্রসূতিদের পরামর্শ দিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের গ্রামে-গ্রামে ঘোরার কথা থাকলেও তা কার্যত হচ্ছে না। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তন্ময় মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “আমাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অসুস্থ শিশুদের চিকিৎসা একেবারেই হয় না, এই অভিযোগ ভ্রান্ত। আমাদের চিকিৎসকেরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে তবেই শিশুদের বর্ধমান মেডিক্যালে পাঠান। তবে এটাও ঠিক যে, দেড় কিলোগ্রামের কম ওজনের অসুস্থ শিশুদের চিকিৎসার ব্যবস্থা আমাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে এখনও নেই।” |
|
|
|
|
|