রাজ্য সরকারকে বিঁধলেন অশোক
জিএটিএ নিয়ে এ বার সুর বদল মোর্চা নেতৃত্বের
রাজ্য সরকার ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ) গঠনের চুক্তির বাইরে যাবে না বলে স্পষ্ট বার্তা দেওয়ায় কিছুটা ‘সুর বদলাল’ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা।
মঙ্গলবার মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, “আমাদের সঙ্গে পরিষদের নেতাদের একটা চুক্তি হয়েছে। রাজ্য ও কেন্দ্রকে তা এখনও জানানো হয়নি। আমরা যথা সময়ে তা জানিয়ে বিবেচনার অনুরোধ করব।” পরিষদের দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলনে মোর্চা সামিল হবে কি না জানতে চাওয়া হলে রোশনের জবাব, “আপাতত এটুকু বলব, যে আমরা কেন্দ্র ও রাজ্যকে অনুরোধ করতে পারি।”
ঘরে-বাইরে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে ‘অন্য সুর’ আদিবাসী বিকাশ পরিষদের ডুয়ার্সের আঞ্চলিক সভাপতি জন বার্লার গলাতেও। এ দিন তিনি বলেছেন, “এমন ভাবে হইচই হচ্ছে, যেন সব চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। আমরা একটা আলোচনার ভিত্তিতে চুক্তি করেছি। তা নিয়ে ধীরে ধীরে দলের মধ্যে তো বটেই, অন্য সব সংগঠনের সঙ্গেও আলোচনা হবে।” যদিও বার্লা-সহ পরিষদের পাঁচ নেতার ভূমিকা প্রসঙ্গে আজ, বুধবার কলকাতায় সংগঠনের কর্মসমিতির জরুরি বৈঠক ডেকেছেন পরিষদের রাজ্য সভাপতি বিরসা তিরকে। তিনি বলেন, “ডুয়ার্স-তরাইয়ে আমাদের পাঁচ নেতা কেন এ ভাবে গুরুঙ্গের সঙ্গে বৈঠক করে সংগঠনের অগোচরে নিজেরা সিদ্ধান্ত নিলেন সেটা আমরা ১০-১২ দিনের সময়সীমার ভেতর জানতে চাইব। সদুত্তর না মিললে চরম ব্যবস্থা নেবে ৩৫ জনের কর্মসমিতি।”
সাংবাদিক বৈঠকে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
রবিবার মংপংয়ে মোর্চা ও পরিষদের ৫ শীর্ষ নেতার বৈঠকের পরে জিটিএ-র বদলে ‘গোর্খাল্যান্ড আদিবাসী টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিএটিএ) গড়ার দাবি জানানো হবে বলে ঘোষণা করা হয়। মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ এবং পরিষদের তরফে জন বার্লা, তেজকুমার টোপ্পো-সহ ৫ জন সে সংক্রান্ত সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। যদিও সোমবার রাজ্যের মুখ্যসচিব সমর ঘোষ জানিয়ে দেন, জিটিএ-চুক্তির বাইরে রাজ্য সরকার যাবে না।
বস্তুত, রাজ্য সরকারের মনোভাব বুঝেই মোর্চা সুর ‘নরম’ করে। পরিষদের পাঁচ নেতাও ‘আলাপ-আলোচনার পরে সব চূড়ান্ত হবে’ বলে ঘোষণা করে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা শুরু করেন। তবে তাতে সর্বত্র ‘অসন্তোষ’ কমছে না। ইতিমধ্যেই ডুয়ার্সের ৯টি আদিবাসী সংগঠন বৈঠক করে একটি সাধারণ মঞ্চ গড়ে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সব সংগঠনের তরফেই নিজেদের মতো করে শ্যামল সেন কমিটির সদস্য তথা জলপাইগুড়ির জেলাশাসকের কাছে দাবিপত্র পেশ করা হয়েছে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন সংগঠন, ব্যক্তির তরফে চারশোরও বেশি দাবিপত্র জমা পড়েছে।”
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মোর্চা ও পরিষদের নেতাদের একাংশ সুর বদলালেও গোটা ঘটনা রাজ্য সরকারের জ্ঞাতসারেই হয়েছে বলে অভিযোগ প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের। তাঁর দাবি, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। যা হয়েছে, তা মুখ্যমন্ত্রীর অজ্ঞাতসারে হয়েছে বলে বিশ্বাস করা কষ্টসাধ্য। মুখ্যমন্ত্রী কিছু বলছেন না কেন? ওঁর কিছু বলা উচিত।” অশোকবাবুর সংযোজন, “শুনেছি, মুখ্যমন্ত্রী আদিবাসীদের স্বায়ত্তশাসনের দাবির বিষয়টি শ্যামল সেন কমিটিকে জানানোর পরামর্শ দিয়েছেন। যা হচ্ছে, তাতে কামতাপুর, গ্রেটার কোচবিহারের মতো সংগঠনও স্বায়ত্তশাসনের দাবি তুলবে। তাতে অশান্তি বাড়বে।”
জবাবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের প্রতিক্রিয়া, “এ বিষয়ে যা বলার মুখ্যমন্ত্রী বলবেন। তবে আমি এটুকু বলতে পারি, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে উত্তরবঙ্গের পাহাড়-সমতলে উন্নয়নের কাজ জোরকদমে শুরু হয়েছে। শান্তি-সম্প্রীতি রয়েছে। সেই সময় কিছু শক্তি উত্তরবঙ্গ জুড়ে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে বলে মনে হচ্ছে। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এটা রুখতে হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.