|
|
|
|
সিপিএমকে ‘চাপে’ রাখতে ফের আসরে শরিক মহল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
নির্বাচনী বিপর্যয়ের পরে বামফ্রন্টের অন্দরে ফের নিজস্ব ‘তৎপরতা’ শুরু করল সিপিএমের শরিকেরা। ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি এবং সিপিআই সিপিএমের ঠিক পরের ধাপের এই তিন শরিক দলের নেতৃত্ব পরস্পরের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন। বিপর্যয়ের পরে বামফ্রন্টকে আরও ‘উন্নত’ করাই তাঁদের উদ্দেশ্য বলে শরিক নেতৃত্ব আনুষ্ঠানিক ভাবে দাবি করছেন। তবে ফ্রন্টের অন্দরের ব্যাখ্যায়, ‘কোণঠাসা’ সিপিএমকে ‘চাপে’ রাখতেই শরিক দলগুলি এই কৌশল নিয়েছে।
নন্দীগ্রাম-পর্বের সময় এই তিন শরিক দলই নিজেদের মধ্যে লাগাতার বৈঠকে বসে আলিমুদ্দিনকে ‘চাপে’ রেখেছিল। যাকে সেই সময় ‘মিনি ফ্রন্টে’র উদ্যোগ বলে অভিহিত করা হয়েছিল। সেই পর্বে শরিকি তৎপরতার মুখ্য উদ্যোক্তা ছিল ফ ব। এ বার উদ্যোগী হয়েছে সিপিআই। তার ফলে শরিকি তৎপরতার কেন্দ্রবিন্দু হেমন্ত বসু ভবন থেকে অনেকটাই ভূপেশ গুপ্ত ভবনে সরে গিয়েছে। সিপিআইয়ের রাজ্য দফতরে গিয়ে সোমবার আরএসপি এবং মঙ্গলবার ফ ব নেতৃত্ব দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করেছেন। তার পরে এ দিন রাতে আরএসপি নেতৃত্ব অবশ্য ফ ব-র দফতর হেমন্ত বসু ভবনেই তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে গিয়েছিলেন। দফায় দফায় শরিক নেতৃত্বের এই আলোচনার নির্যাস ফ্রন্টের অন্দরে কোনও দলের ‘একাধিপত্য’ তাঁরা আর মেনে নিতে চান না। বড় শরিক হিসাবে সিপিএম-ই সচরাচর কোনও কর্মসূচি ঠিক করে বামফ্রন্টে শরিকদের অনুমোদন ‘আদায়’ করে। এখন তিন শরিক দলের নেতৃত্ব যৌথ ভাবে এই দাবিই তুলতে চাইছেন যে, ফ্রন্টে আগে আলোচনা করে তবেই কর্মসূচির পরিকল্পনা হোক।
সিপিআই নেতৃত্ব অবশ্য চাইছেন, ‘উন্নত’ বামফ্রন্ট গড়তে শরিকদের পাশাপাশিই ফ্রন্টের বাইরের বাম শক্তিগুলির সঙ্গেও কথা বলতে। বাম শরিকদের সঙ্গে আলোচনার পর্ব শেষ হলে সিপিআই (এম-এল)-এর মতো দলগুলির সঙ্গেও তাঁদের বৈঠক হবে। সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, “এর মধ্যে কোনও চক্রান্ত নেই! বামফ্রন্টকে আরও উন্নত করতে গেলে বৃহত্তর বাম ঐক্য দরকার। এই কথা সিপিএমকে যেমন বলেছি, অন্য দলগুলির সঙ্গেও তা নিয়ে কথা বলছি। অতীতে সব দলই অনেক ভুল করেছে। এখন সেই সব ভুল-ভ্রান্তি কাটিয়ে বামপন্থা এবং বাম আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে হবে।” সিপিআই দফতরে বৈঠকের পরে ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষ প্রকাশ্যে বাম ঐক্যের কথাই বলেছেন।
বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর থেকে বামফ্রন্টের বৈঠকে আর যোগ দিতে যাচ্ছেন না প্রবীণ বাম নেতা অশোকবাবু। সেই দিক থেকে প্রথমে সিপিএম এবং পরে সিপিআইয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় তাঁর নিজেরই যোগ দিতে যাওয়া ‘তাৎপর্যপূর্ণ’। অশোকবাবুর নেতৃত্বে ফ ব-র রাজ্য নেতৃত্ব এ দিন প্রথমে সিপিআই এবং পরে আরএসপি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। আরএসপি-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, “বামফ্রন্টের বিপর্যয়ে আমাদেরও দায় আছে। কিন্তু গত কয়েক বছরে সিপিএমের নানা সিদ্ধান্তের জন্যই মূলত মানুষ আমাদের প্রত্যাখ্যান করেছেন। এখন মানুষ দেখতে চান, ভুলভ্রান্তি আন্তরিক ভাবে স্বীকার করে বামেরা নতুন ভাবে আন্দোলন করছেন। তাই আন্দোলনের দাবিগুলি নিয়েও নতুন করে ভাবতে হবে।” |
|
|
|
|
|