|
|
|
|
মাটি কেলেঙ্কারির নালিশ তৃণমূল প্রধানদের বিরুদ্ধে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মহিষাদল |
জল নিকাশির ব্যবস্থা করতে গ্রামের খাল সংস্কার হয়েছে দেড় বছর আগে। একশো দিনের প্রকল্পে খাল-খননে ওঠা প্রচুর মাটি কোথায় গেল, এখন তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। যেহেতু প্রকল্পের কাজের দায়িত্বে ছিল গ্রাম পঞ্চায়েত, প্রধানদের দিকেই উঠেছে মাটি-কেলেঙ্কারি নিয়ে অভিযোগের আঙুল। তৃণমূল প্রধানদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগকে সামনে রেখে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সিপিএম।
এই অভিযোগ হলদিয়া মহকুমার মহিষাদল ব্লকের ইটামগরা-১ থেকে নাটশাল-২ পর্যন্ত যে খাল সংস্কার হয়েছে তা নিয়েই। অভিযোগ, খাল-খননে ওঠা সরকারি জমির মাটি ‘অবৈধ ভাবে’ ইটভাটাগুলিতে বিক্রি করেছেন তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানরা। এই নিয়ে স্থানীয় বিডিও-কে স্মারকলিপি দিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে দাবি সিপিএমের।
গত বছর বর্ষার আগে রূপনারায়ণের হিজলি টাইডাল খালের সংস্কার হয় একশো দিনের প্রকল্প এবং মৎস্য দফতরের উদ্যোগে। ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের কাছে ইটামগরা-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ‘সুইচ গেট’ থেকে ইটামগরা-২, গড়কমলপুর হয়ে নাটশাল-২ পঞ্চায়েত এলাকা পর্যন্ত খাল-খনন হয়। কিন্তু খননে ওটা মাটি লোপাট হয় বলে অভিযোগ। সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির নেতা তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আমরা খাল সংস্কার নিয়ে কোনও অভিযোগ করছি না। কিন্তু এত মাটি কোথায় গেল সেটাই প্রশ্ন। তার চেয়েও বড় কথা সরকারি জমির মাটি থেকে ভূমি-দফতরেরও কোনও আয় হয়নি। সব মহলেই বিষয়টি জানিয়েছি। সেপ্টেম্বরে বিডিও-কে জানিয়েছি। কিন্তু সদুত্তর মেলেনি।” সিপিএমের জোনাল সম্পাদক শরৎ কুইল্যার দাবি, “স্থানীয় কিছু ইটভাটায় মাটি পাচার হয়েছে। এই নিয়ে তদন্ত প্রয়োজন।”
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, নাটশাল-২ পঞ্চায়েতের রঙ্গিবসান মৌজায় খাল-খননে ওঠা মাটি মহিষাদল গার্লস কলেজ ও গয়েশ্বরী গার্লস হাইস্কুল পেয়েছে। পঞ্চায়েত প্রধান আমেদ আলিরও দাবি, “কিছু পরিমাণ মাটি স্থানীয় লোকজন বাড়ির কাজে ব্যবহারের জন্য নিয়ে গিয়েছেন। কিছু পরিমাণ মাটি স্কুল-কলেজেও গিয়েছে। তার তথ্যপ্রমাণও আমাদের কাছে রয়েছে। যেটুকু টাকা জমা পড়েছে তা পঞ্চায়েত তহবিলেই রয়েছে।” তবে সম্প্রতি ওই নাটশাল-২ পঞ্চায়েত এলাকাতেই ফের অবৈধ ভাবে মাটি কাটা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। খবর যায় ভূমিরাজস্ব দফতরেও। দফতরের আধিকারিক অলোক সেনাপতি বলেন, “অভিযোগ পেয়ে দফতরের একটি দল পর্যবেক্ষণে যায়। মাটি কাটা হয়েছে বলে জানা গেলেও কাউকে শনাক্ত করা যায়নি।”
অন্য দিকে, ইটামগরা-১ পঞ্চায়েতের প্রধান প্রীতিকনা জানা স্বীকার করেছেন, “ইটভাটাই মাটি কেটে নিয়ে গিয়েছে। ওদের থেকে যে টাকা প্রাপ্য হয় তা অবশ্য মেলেনি।” এই প্রেক্ষিতে সিপিএমের প্রশ্ন, যদি ইটভাটাগুলিই খালের মাটি কেটে থাকে তবে একশো দিনের প্রকল্প বা মৎস্য দফতরের টাকা কী কাজে লেগেছে! এই বিতর্কের মধ্যে বিডিও বুলান ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “অভিযোগ পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট প্রধানদের বক্তব্য তলব করা হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|