|
|
|
|
দিঘার রাস্তার বাজার সরানো নিয়েও এ বার তৃণমূলে দ্বন্দ্ব |
সুব্রত গুহ • দিঘা |
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন দিঘাকে গোয়া করতে। আর তাঁর দলেরই একাংশ দিঘার রাস্তার বাজার সরাতে বাধা দিচ্ছে দলেরই পরিচালিত পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতিকে!
সৈকতশহর দিঘার সৌন্দর্যায়নের লক্ষ্যে রাস্তা থেকে বাজার সরিয়ে ব্যবসায়ীদের জন্য আলাদা বাজার-প্রাঙ্গণ করে দিয়েছিল পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি। কিন্তু তৃণমূলেরই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে ব্যবসায়ীদের একাংশ রয়ে গিয়েছেন সেই রাস্তাতেই। বিকিকিনির হট্টগোলে চোখের আড়ালেই রয়ে গিয়েছে নিউ দিঘার ত্রিকোণ পার্ক। |
|
তৈরি হয়েছে নতুন বাজার। |
তৃণমূল পরিচালিত রামনগর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে দলীয় বিধায়ক অখিল গিরির অনুগামীদের দ্বন্দ্ব এখন প্রকাশ্যে। সেই দ্বন্দ্বই ছায়া ফেলছে বাজারেও। ফলে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। বাজার-প্রাঙ্গণে না গিয়ে ব্যবসায়ীদের একাংশ রাস্তা দখল করে থাকায় ভিড় আর আবর্জনায় নাজেহাল হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকেরা। নিউ দিঘা উওমেন্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ভাস্বতী শৌণ্ডের নেতৃত্বে বিহিত চেয়ে সম্প্রতি দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের নির্বাহী আধিকারিকের কাছে ডেপুটেশনও দেওয়া হয়েছে।
পর্ষদের নির্বাহী আধিকারিক সৌমেন পাল বলেন, “নিউ দিঘার ত্রিকোণ পার্ক ঘিরে রাস্তায় বাজার বসা বন্ধ করতেই স্থানীয় পদিমা-১ গ্রাম পঞ্চায়েত ও রামনগর-১ পঞ্চায়েত সমিতি কর্তৃপক্ষ কাছেই খালি জায়গায় যখন বাজার-প্রাঙ্গণ তৈরি করেতে চান, সঙ্গে সঙ্গেই পর্ষদ অনুমতি দিয়েছিল।” তিনি স্বীকার করেছেন, “সেই বাজার-প্রাঙ্গণ তৈরির পরেও বেশ কিছু ব্যবসায়ী এখনও রাস্তা দখল করে থাকছেন। কিছু লোকের জন্যই তাঁরা সরছেন না বলে জেনেছি। কী করা যায় ভাবা হচ্ছে।”
রামনগর-১ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি দেবব্রত দাসের বক্তব্য, বাম-জমানাতেই ত্রিকোণ পার্ক ঘিরে রাস্তা দখল করে ব্যবসা শুরু হয়েছিল। তার মধ্যে মাছ, মাংসের দোকানও রয়েছে। এতে রাস্তা অপরিসর হচ্ছে, নোংরাও হচ্ছে। রাজ্যে পালাবদলের পরে মুখ্যমন্ত্রী দিঘার হাল ফেরাতে চেয়েছেন। দিঘাকে গোয়া তৈরির লক্ষ্য নির্দিষ্ট করেছেন। সেই লক্ষ্যের সঙ্গে তাল মিলিয়েই পদিমা-১ পঞ্চায়েত প্রধান অম্বিকাচরণ জানার নেতৃত্বে পঞ্চায়েতের সব সদস্য ও পঞ্চায়েত সমিতি ত্রিকোণ পার্কের পাশে জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার ক্যাম্পের পরিত্যক্ত বিঘাখানেক জমিতে নতুন চালাঘর-সহ বাজার-প্রাঙ্গণ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। রাস্তার সব ব্যবসায়ীকে সেখানেই পুনর্বাসন দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। দেবব্রতবাবুর স্বীকারোক্তি, “বেশ কিছু ব্যবসায়ী সানন্দে নতুন বাজারে উঠে গেলেও আমাদের দলেরই একাংশের বিরোধিতায় কিছু ব্যবসায়ী এখনও রাস্তা দখল করে রয়েছেন।” |
|
তবুও নিউ দিঘার ত্রিকোণ পার্কে রাস্তার উপরে অবৈধ দোকানঘর সরেনি। |
দেবব্রতবাবু নাম না করলেও অভিযোগের তির মূলত রামনগরের তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরির অনুগামীদের বিরুদ্ধেই। এ ব্যাপারে পদিমা-১ অঞ্চল তৃণমূল সহ-সভাপতি অখিল-ঘনিষ্ঠ অশোক চন্দের দাবি, “কিছু ব্যবসায়ীর নতুনবাজারে যেতে না চাওয়ার সঙ্গে আমার বা অখিলবাবুর কোনও ভূমিকা নেই। ব্যবসায়ীরাই যেতে চাইছেন না। উন্নয়ন পর্ষদের নির্বাহী আধিকারিক বা পুলিশ প্রশাসনকেও জানিয়েছি, প্রশাসন যা ভাল মনে করবে, তেমন ব্যবস্থা নিতে পারে।”
তবে অখিলবাবুর নিজের প্রতিক্রিয়া, “পঞ্চায়েত যেখানে নতুন বাজার বসিয়ে দোকানপাট বসাচ্ছিল, তাতে আগে থেকেই ওখানে থাকা আমাদের দলীয় কার্যালয়ের প্রবেশপথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। তা দেখেই দলের কিছু কর্মী বাধা দেন।” বিধায়কের অবশ্য আশ্বাস, “সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। পর্ষদের নির্বাহী আধিকারিকের সঙ্গেও কথা হয়েছে।” নির্বাহী আধিকারিকও জানিয়েছেন, ফের তিনি বিধায়কের সঙ্গে কথা বলবেন।
যত দ্রুত সম্ভব বিহিতই চাইছেন বাসিন্দারা।
|
—নিজস্ব চিত্র। |
|
|
|
|
|