নিজস্ব সংবাদাতা • উলুবেড়িয়া |
আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে জোট চান না হাওড়ার অধিকাংশ কংগ্রেস কর্মী। মঙ্গলবার উলুবেড়িয়া রবীন্দ্রভবনে জেলা পঞ্চায়েত সম্মেলনে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং প্রদেশ কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যের সেচ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার কাছে তাঁরা এই প্রস্তাব দিয়েছেন।
মানসবাবু বলেন, “পঞ্চায়েত, পুরসভা এবং স্কুল কমিটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব কোনও নির্দেশ দেন না। এটা ঠিক হয় স্থানীয়ভাবেই। পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেস কী ভাবে লড়াই করবে তা ঠিক করবেন স্থানীয় নেতারা।” প্রদীপবাবু বলেন, “কংগ্রেস দুর্বল দল নয়। কংগ্রেসকে যারা দুর্বল ভাবেন তাঁরা নিজেরা দুর্বল।” তিনি পঞ্চায়েতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দলের কর্মীদের প্রচার করতেও নির্দেশ দেন।
হাওড়ায় তৃণমূলের প্রভাব কংগ্রেসের থেকে অনেকটা বেশি। ২০০৮ সালে জোট করেও গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেস পায় ৩১৭টি আসন। তৃণমূলের আসন ৭৬২। পঞ্চায়েত সমিতিতে কংগ্রেসের আসন ৭২টি। তৃণমূলের আসন ১৫৬। জেলা পরিষদে তৃণমূলের সঙ্গে জোট হয়নি কংগ্রেসের। এককভাবে লড়াই করে তৃণমূল পায় ১০টি আসন। কংগ্রেস পেয়েছিল একটি। কংগ্রেসের ওই একজন সদস্যও পরে যোগ দেন তৃণমূলে। লোকসভা ভোটে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট হলেও হাওড়ায় ২ জন সাংসদই তৃণমূলের। উলুবেড়িয়ায় পুরভোটে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট হয়েছিল। বামফ্রন্টকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসে জোট। পুরসভার চেয়ারম্যানের পদটি পায় কংগ্রেস। পরবর্তীকালে কয়েকজন কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় এখন এককভাবে পুরসভা চালাচ্ছে তৃণমূল। বিধানসভা ভোটে জোট হলেও জেলার ১৬ জন বিধায়কের মধ্যে ১৫ জনই তৃণমূলের। একমাত্র আমতা কেন্দ্রটি রয়েছে কংগ্রেসের হাতে।
দলের এই অবস্থা জানা সত্ত্বেও পঞ্চায়েত ভোটে এককভাবে লড়াই করার পক্ষে ওই প্রতিনিধিদের যুক্তি হল- কংগ্রেস কর্মীদের প্রতি তৃণমূলের ‘বিমাতৃসুলভ আচরণ, তৃণমূলের একাংশের অত্যাচার। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলে অনেকে আসতে চাইছেন কংগ্রেসে। যদিও এই সম্মেলনের দু’দিন আগে আমতা ২নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির দু’জন কংগ্রেস সদস্য তৃণমূলে আসতে চেয়ে ওই দলের নেতৃত্বের কাছে চিঠি দিয়েছেন। এটি আবার জেলার একমাত্র কংগ্রেস বিধায়কের নির্বাচনী এলাকা। |