প্রবন্ধ ১...
যা দেখি, যা শুনি, একা একা কথা বলি
বাঙালিরা তখন গদ্যে কথা
বলে, গদ্য লিখতে জানে না
দ্রলোক কাজ করতেন একটা জুতো তৈরির দোকানে। কিছু দিন পর বিয়ে করলেন মালিকের শ্যালিকাকে। আর কয়েক বছর পর সেই কোম্পানির মালিকের মৃত্যু হওয়ায় তিনিই হয়ে গেলেন মালিক। কয়েক বছরের মধ্যেই এই দম্পতির পর পর সাতটি ছেলেমেয়ে জন্মায়। সাতটি সন্তানের পিতা এই জুতো দোকানের মালিকটির ভবিষ্যৎ জীবন সাধারণ ভাবে এক নির্ধারিত পথেই যাওয়ার কথা। তা হয়নি, নাটকীয় ভাবে তাঁর জীবন মোড় নিয়েছে অন্য দিকে।
ভদ্রলোকের নাম উইলিয়াম কেরি। বংশানুক্রমে বসবাস ইংল্যান্ডের নর্দামটনশায়ারের একটি গ্রামে। আমাদের দেশের পণ্ডিত ও গবেষকদের মধ্যে এই নামটি বিশেষ পরিচিত। সাধারণ সাহিত্য পাঠকের কাছে নামটি শোনা শোনা, বিশেষ কিছু জানা নেই, আর আমজনতার কাছে একেবারেই অপরিচিত।
জুতো কোম্পানির এই মালিকটির ছিল ভাষা শেখার বিশেষ ক্ষমতা এবং ধর্ম আন্দোলনের দিকে দারুণ ঝোঁক। ব্যবসা চালাতে চালাতেই তিনি শিখে নিলেন হিব্রু, ইতালিয়ান, ডাচ, ফ্রেঞ্চ আর গ্রিক ভাষা। তাঁর এ রকম পাণ্ডিত্য কাজে লাগাবার উদ্দেশ্যে তাঁকে একটি স্কুলে পড়াবার জন্যও আহ্বান জানানো হল। তখন তাঁর বয়স চব্বিশ। এরই মধ্যে তিনি নিয়মিত গির্জায় গিয়ে ভাষণ দিতেন। কেরি ও তাঁর কিছু বন্ধুবান্ধবের ধারণা হল, সারা পৃথিবীর মানুষকেই খ্রিস্টধর্মের পবিত্র আলোকের মধ্যে নিয়ে এসে দীক্ষা দেওয়া উচিত। এবং তাদের বাইবেল পড়াতে হবে। এই নিয়ে তখন মিশনারিদের মধ্যে প্রায় একটা হুড়োহুড়ি পড়ে গেছে। বাইবেলে (ম্যাথিউ ২৮: ১৮-২০) প্রভু যিশুর এ রকম একটা নির্দেশ আছে যে, সারা বিশ্বের মানুষই যাতে তাঁর অনুসরণ করে সে জন্য চেষ্টা করা উচিত।
ইউরোপে ওক গাছের কাঠ দিয়ে মজবুত জাহাজ বানানো যায়। সে সব জাহাজ সমুদ্রে ঝড়বৃষ্টিতে ডোবে না। সেই জাহাজ নিয়ে ষোলো সতেরো আঠারো শতাব্দীতে ইউরোপের অনেক দেশের ভাগ্যান্বেষী, বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান, রাজপ্রতিনিধি এবং বোম্বেটের দল ছড়িয়ে পড়ল বিশেষত প্রাচ্য দেশগুলির দিকে। সে ইতিহাস অনেকেরই জানা। আঠারো শতকে ভারতে এক অদ্ভুত অবস্থা। পরাক্রান্ত মুঘল শক্তি তখন একেবারেই দুর্বল হয়ে গেছে। বিভিন্ন প্রাদেশিক নবাব ও রাজারা মাথাচাড়া দিলেও তাদের কোনও শৃঙ্খলাবদ্ধ, শক্তিশালী সেনাবাহিনী নেই। ইংরেজ, ফরাসি, ওলন্দাজ বণিকরা কিছু দিন নিজেদের মধ্যে খেয়োখেয়ি করল, তার পর প্রধান হয়ে উঠল ইংরেজরাই। আজও আমাদের লজ্জার সঙ্গে স্মরণ করতে হয় যে, পলাশির যুদ্ধে সুবে বাংলার নবাব ইংল্যান্ডের রানির সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হননি, তিনি পরাজিত হয়েছিলেন নিতান্তই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নামে একটা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ভাড়াটে সৈন্য ও তাদের সেনাপতি ক্লাইভের কূটবুদ্ধি ও রণকৌশলের কাছে।
উইলিয়ম কেরি
তলোয়ার ও বন্দুকের সাহায্যে এক একটা রাজ্য জয়ের পরই আসেন ধর্মপ্রচারকরা। সব দেশেই এ রকম ঘটেছে। সপ্তদশ-অষ্টাদশ শতাব্দী থেকেই প্রচুর ধর্মপ্রচারক ছড়িয়ে পড়েন পৃথিবীর নানান দেশে। আফ্রিকায় গিয়ে তো তাঁরা দেখলেন দারুণ সুযোগ। বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে কোনও সঙ্ঘবদ্ধ ধর্ম নেই, তারা নানা রকম টোটেম ও ট্যাবুতে বিশ্বাসী। এদের খ্রিস্টধর্মের আওতায় আনা অনেক সহজ। পশ্চিম এশিয়ায় সে সুবিধা হল না। কারণ, ইসলাম একটা দৃঢ় সঙ্ঘবদ্ধ শক্তি, সামরিক ভাবে তারা ইউরোপিয়ানদের কাছে হারতে শুরু করেছে বটে, কিন্তু ধর্মত্যাগ করতে একেবারেই রাজি নয়। ভারতে এসে তারা প্রথম দিকে একটা ধাঁধার সম্মুখীন হল। এত বড় দেশটার মানুষদের মধ্যে একতাবোধ নেই। অস্ত্রবল নেই। সঙ্ঘবদ্ধ ধর্ম নেই। কিন্তু রয়েছে এক প্রাচীন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। বেশির ভাগ মানুষ অজ্ঞাতসারেই সেই ঐতিহ্যের অনুসরণ করে। এই ভারতের অধিকাংশ অধিবাসী হিন্দু। রাষ্ট্রশক্তি মুসলমানদের হাতে। এবং অধিকাংশ হিন্দুই জানে না, হিন্দু ধর্মটা আসলে কী? এই হিন্দু ধর্মের কোনও কেন্দ্রীয় শক্তি নেই, নীতিনির্ধারক নেই, বহু শতাব্দীর অবক্ষয়ে এই ধর্মের মধ্যে কতকগুলি কুৎসিত রীতিনীতি ঢুকে গেছে। যেমন, কঠোর জাতিভেদ প্রথা, অস্পৃশ্যতা এবং অন্য ধর্মের কোনও মানুষকেই এই ধর্মে গ্রহণ না-করার অনমনীয় সংস্কার। জন্মগত ভাবে ছাড়া কেউ হিন্দু হতে পারে না। কিন্তু এই ধর্ম ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সব পথ খোলা। তথাকথিত উচ্চশ্রেণির অত্যাচারে বহু হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান হয়েছে। তা হলে তো তারা খ্রিস্টান হতেও পারে। এই ধারণা থেকেই দলে দলে খ্রিস্টধর্ম প্রচারকদের এই দেশে আগমন।
উইলিয়াম কেরিও ঠিক করলেন, তিনি ছোট্ট গণ্ডি ছেড়ে বৃহত্তর জগতে এই ধর্ম প্রচারের মহান ব্রত নিয়ে বেরিয়ে পড়বেন। তিনি ব্যাপটিস্ট আন্দোলনের অন্তর্গত ছিলেন। এবং এদের একটা ঘোষিত নীতিই হচ্ছে, ‘প্রোপাগেশন অব দ্য গসপেল অ্যামংস্ট দ্য হিদেন’। ভারতে অসংখ্য হিদেন, তাই জুতোর ব্যবসাট্যবসা সব গুটিয়ে কেরি সপরিবার আসতে চাইলেন ভারতে। তাঁর স্ত্রী কিছুতেই রাজি নন। তাঁর নাম ডরোথি। তিনি একেবারেই লেখাপড়া শেখার সুযোগ পাননি (বিয়ের খাতায় টিপসই দিয়েছিলেন) এবং ভারত সম্পর্কে নানা রকম অলীক ভয়ের গল্প শুনেছেন। তা ছাড়া তিনি তখন গর্ভবতী। তাঁর স্বামী জাহাজের টিকিট কেটে ফেলেছেন। নানা কারণে সে জাহাজে আর যাওয়া গেল না। কয়েক মাস দেরি হয়ে গেল। এর মধ্যে এক পুত্রসন্তান প্রসব করলেন ডরোথি। সেই নবজাতক সমেত অন্য পুত্রকন্যা ও স্ত্রীকে নিয়ে কেরি সাগরে ভেসে পড়লেন এবং পৌঁছলেন কলকাতা বন্দরে।
এখানে এসে কেরি দেখলেন, এখানকার কোনও মানুষই, অর্থাৎ নেটিভরা, তাঁর কথা বুঝতে পারে না। অতি অল্পসংখ্যক মানুষের যৎসামান্য ইংরেজি জ্ঞান আছে। সুতরাং কেরি বাংলা শিখতে শুরু করলেন। কিছু একটা জীবিকাও তো চাই। তাই এক বন্ধুর অনুরোধে এক নীলের কারখানায় ম্যানেজার হয়ে সবাইকে নিয়ে চলে গেলেন মেদিনীপুর। সেখানে ছিলেন ছ’বছর। নীলকর সাহেবদের অনেক অত্যাচারের গল্প শোনা যায়। কেরি ম্যানেজার হিসেবে কী রকম ছিলেন আমরা জানি না। কিন্তু এটুকু জানি, তার মধ্যে তিনি যথেষ্ট বাংলা শিখে নিউ টেস্টামেন্ট-এর অনুবাদ করে ফেলেছেন (অবশ্যই কোনও মুন্সির সাহায্য নিয়ে)। এর মধ্যে তাঁর একটি পুত্রসন্তানের মৃত্যু হয়। এবং তাঁর স্ত্রী ডরোথি বাকি জীবনের জন্য বদ্ধ উন্মাদ হয়ে যান।
কলকাতায় দলে দলে মিশনারি এসে ভিড় করছে, তা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পছন্দ হয়নি। তারা এ দেশে এসেছে ব্যবসা করতে। ধর্ম প্রচারের নামে কোনও হাঙ্গামা তারা চায় না। তাই ধর্মপ্রচারকরা অনেকেই চলে গেলেন শ্রীরামপুর শহরে। সেটা ডেনমার্ক সরকারের অধীনে। এবং তাদের রাজা এদের সাহায্য করতে উৎসাহী। উইলিয়াম কেরি এদের সঙ্গে শ্রীরামপুরে এসে যোগ দিলেন ১৮০০ সালের ১০ জানুয়ারি।
সময়টার কথা মনে রাখা দরকার। বিদ্যাসাগর তখনও জন্মাননি। রামমোহন কেরির চেয়ে এগারো বছরের ছোট। তিনি তাঁর উল্লেখযোগ্য বিশেষ কিছু কাজ তখনও শুরু করেননি। বাঙালিরা তখন বাংলা ভাষায় কথা বলে বটে, কিন্তু, কিছু চিঠিপত্রের কথা বাদ দিলে, গদ্য ভাষা লিখতে জানে না। ছাপাখানা এসে গেছে, কিন্তু বাংলা সাহিত্যে ছাপার মতো বিশেষ কিছু নেই, পুরনো কালের কবিতা ছাড়া। পৃথিবীর অন্যান্য অনেক ভাষাতেই গদ্য ভাষা সংহত হয়ে রচিত হচ্ছে গল্প-উপন্যাস। বাংলায় তা লেখার মতো কেউ নেই। বাংলা সাহিত্যকে হাঁটি হাঁটি পা পা করাবার জন্য সাগরপার থেকে এক জন সাহেবকে আনতে হল।
শ্রীরামপুরে কেরি একটা ছোটখাটো প্রেস স্থাপন করেছিলেন এবং নানা ভাষায় বাইবেল ছাপিয়ে যাচ্ছিলেন। এর মধ্যে তিনি সংস্কৃত শিখছেন, ওড়িয়া ভাষা শিখছেন, সতীদাহ প্রথা বন্ধ করার জন্য তিনি রামমোহনেরও আগে প্রকাশ্যে আবেদন জানাচ্ছেন। ছ’বছর বাদে তাঁর উন্মাদ স্ত্রীর মৃত্যু হলে তিনি বিয়ে করে ফেললেন আর এক বার। কিন্তু কেরির পুরো জীবনী রচনা করা আমার উদ্দেশ্য নয়।
শ্রীরামপুরে মিশন সমাধিক্ষেত্রে তাঁর সমাধি।
কেরি এক সময় একটা বই রচনা করে ছাপালেন নিজেদের প্রেসে। বইটির নাম ‘ইতিহাসমালা’। খুবই আশ্চর্যের ব্যাপার এই যে, বইটি ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে রচিত হয়নি। এর মধ্যে তার ধর্মের কোনও নামগন্ধ নেই। ‘ইতিহাসমালা’ কোনও ইতিহাসের বইও না। এতে আছে অনেকগুলি ছোট ছোট গল্প। অধিকাংশই লোককাহিনি। যা সাধারণত লোকের মুখে মুখে ছড়ায়। কেরি এক জন ধর্মপ্রচারক তো বটেই, তবু তিনি নিছক এই গল্পের বই ছাপলেন কেন? বাংলা গদ্যের একটা স্পষ্ট রূপ দেওয়ার জন্য? (তিনি নিশ্চিত তাঁর মুন্সি রামরাম বসুর যথেষ্ট সাহায্য নিয়েছিলেন, কিন্তু কেরিও এই বারো চোদ্দো বছরের মধ্যে অনেকখানি বাংলা শিখে ফেলেছেন, যার ফলে তিনি ইংরেজি-বাংলা অভিধানও রচনা করবেন আরও কিছু দিন পর)। ‘ইতিহাসমালা’ই বাংলা ভাষার অন্যতম প্রথম গদ্য গল্পের বই। কিন্তু বইটি ছাপা হওয়ার পরই একটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা ঘটল। বইটি প্রস্তুত হওয়ার পর বাইরে ছাড়বার আগেই আগুন লেগে প্রেস ও গুদামের অনেকখানি ধ্বংস হয়ে যায়। বিশেষ করে ইতিহাসমালার পুরো স্টক শেষ। কেউ কেউ অবশ্য ইঙ্গিত করেছেন যে, আগুন এমনি এমনি লাগেনি, এই বইয়ের কিছু কিছু গল্পে নীতিবাগীশদের আপত্তি ছিল, তাদের কারও নির্দেশে বইগুলি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। তার ফলে বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে গণ্য হওয়ার মতো এই বইটির কথা কেউ জানতেই পারল না। লং সাহেবের বাংলা মুদ্রিত গ্রন্থের তালিকায় এই বইয়ের নাম নেই। এমনকী কেরি সাহেবের রচনাবলিতেও এই বইয়ের নাম স্থান পায়নি। এত গুরুত্বপূর্ণ একটা বই রচিত হল, তার পরই হারিয়ে গেল! এমনকী বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস যাঁরা রচনা করেছেন তাঁরাও অনেকে এই বইয়ের নাম জানতেন না।
কিন্তু আগুনেও নাকি সব কিছু দগ্ধ হয় না। ইতিহাসমালার দু’চার কপি কোনও ক্রমে বেঁচে যায়। সেই রকম একটি কপি কোথা থেকে খুঁজে পেয়ে প্রথম মুদ্রণের একশো ষাট বছর পরে ফাদার দ্যতিয়েন এর একটি সটীক সংস্করণ প্রকাশ করেন। দ্যাতিয়েন তো বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতির অতি আপনজন। এবং এটা তাঁর একটা বিরাট কাজ। তবে কিছু দিনের মধ্যেই বইটি অপ্রাপ্তির অন্ধকারে চলে যায়। আবার প্রায় চার দশক বাদে এর একটি নতুন সংস্করণ প্রকাশ করেছে ‘গাঙচিল’। সম্প্রতি এই বই সম্পর্কে লিখেছেন ভাষাবিদ চিন্ময় গুহ এবং রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর অননুকরণীয় স্টাইলে বইটির ভাষা ও গল্পগুলির বিস্তৃত বয়ান রচনা করেছেন। তার পর আমার আর নতুন কী লেখার থাকতে পারে?
তবু যে আমি এ সম্পর্কে লিখতে প্রবৃত্ত হয়েছি, তার অন্য একটা কারণ আছে। উইলিয়াম কেরির জীবনীর কিছু উপাদান জানার জন্য আমি উইকিপিডিয়ার শরণ নিতে গিয়ে যেমন হতবাক, তেমনই বিষণ্ণ বোধ করেছি। কেরি তাঁর জীবনের চল্লিশ বিয়াল্লিশ বছর এই বাংলা মুলুকেই কাটিয়েছেন এবং এখানেই দেহ রেখেছেন। কিন্তু এই বহুভাষাবিদ পণ্ডিতটির খ্যাতি শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ নয়, তিনি বিশ্ববিখ্যাত। পৃথিবীর নানান দেশে তাঁর সম্মানে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাঁর নাম যুক্ত। যেমন, উইলিয়াম কেরি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ইন পাসাডেনা, ক্যালিফোর্নিয়া, তেমনই ভ্যানকুভার, ব্রিটিশ কলম্বিয়া, নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন, শ্রীলঙ্কার কলম্বো এমনকী বাংলাদেশের চট্টগ্রামে উইলিয়াম কেরি অ্যাকাডেমি। আর আমাদের কলকাতায়? কোনও অভিযোগ নয়, অতি লজ্জায় একা মাথা নত করে বসে থাকি।

আমি খুব ভালই জানি, যাঁরা অনুগ্রহ করে আমার রচনাটি পড়বেন বা অলস ভাবে চোখ বুলোবেন, তাঁদের মধ্যে প্রায় কেউই ইতিহাসমালা বইটি সংগ্রহ করে পড়ে দেখার আগ্রহ দেখাবেন না। এ রকম হতেই পারে, তাই আমি জোর করে ওই বইটির দু’তিন লাইন গদ্যের নমুনা তাঁদের পড়াবই পড়াব। ‘হাঁড়ি ভাঙ্গে, রাণী হাসে’, এটা একটা সাঙ্ঘাতিক গল্প। নীতিবাগীশদের এ রকম গল্পেই গায়ে কাঁটা দিতে পারে।
“এক রাজা ছিলেন। তাঁহার রাণীর মন্ত্রির সঙ্গে অত্যন্তিকী প্রীতি ছিল। এক দিবস মন্ত্রী রাণীকে কহিল, “হে রাণি, আমারদের গোপনভাবে এ প্রীতি রাজা জ্ঞাত হইলে, প্রাণে বধিবেন। অতএব চল, এ স্থান হইতে দেশান্তরে যাই। অদ্য নিশাভাগে এই নগরের অন্তে পুষ্করিণীর তটে বৃক্ষের মূলে...” ইত্যাদি।

রাজ্জাক হাওলাদার সম্পর্কে ছাপা হয়েছে, ইনি ‘কলকাতার নাগরিক’। সে আবার হয় নাকি? উনি কানাডার নাগরিক। জন্ম বাংলাদেশে।
মাদারিপুরের বাদামতলার সিনেমা হলের মালিকের নাম সুধীরবাবু নয়, তিনি অতি সজ্জন সুনীলবাবু, সুনীলচন্দ্র ঘোষ।
পুডভকিন আর চেরকাশভের সঙ্গে শিশিরকুমার ভাদুড়ির দেখা হয়েছিল ঠিকই, ষাটের দশকের বদলে পঞ্চাশের দশকে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.