এক লপ্তে জমি না-মেলায় খড়্গপুরের অদূরে চাঙ্গুয়ালের প্রস্তাবিত প্রকল্প ভেঙে দু’টুকরো করতে বাধ্য হয়েছিল ট্র্যাক্টর্স ইন্ডিয়া লিমিটিড (টিআইএল)। জমি সমস্যা পুরোপুরি না-মিটলেও অবশেষে চাঙ্গুয়ালের কারখানা চালু হচ্ছে আগামী ১৮ নভেম্বর। কারখানাটির প্রথম পযার্য়ের উদ্বোধন করবেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে আপাতত যতটুকু জমি এক লপ্তে মিলেছে তাতেই তৈরি হয়েছে কারখানাটি। নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম উৎপাদন শিল্পে কোনও লগ্নি বাস্তবায়িত হতে চলেছে।
জমির অভাবে চাঙ্গুয়াল থেকে বাকি লগ্নি খড়্গপুরে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের শিল্প তালুক ‘বিদ্যাসাগর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে’ স্থানান্তরিত করেছে টিআইএল। ওই দিনই সেই কারখানাটিরও শিলান্যাস করবেন শিল্পমন্ত্রী। দু’টি প্রকল্প মিলিয়ে পযার্য়ক্রমে মোট ৬০০ কোটি টাকা লগ্নি হবে।
শিল্পমন্ত্রী মঙ্গলবার বলেন, ‘‘সংস্থার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। এই লগ্নি রাজ্যে উৎপাদন শিল্পের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
গত ছ’দশক ধরে নির্মাণ ও পরিকাঠামো শিল্পের যন্ত্রাংশ তৈরির সঙ্গে যুক্ত টিআইএল-এর মূল কারখানা কামারহাটিতে। বছর তিনেক আগে বাম জমানায় রাজ্যে নয়া লগ্নির প্রস্তাব দিয়ে ২০০ একর জমি চেয়েছিল তারা। সিঙ্গুরের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তখন তাদের সরাসরি জমি কিনতে পরামর্শ দেয় নিগম। কিন্তু চাঙ্গুয়ালের কাছে ১৬৫ একর জমি কিনলেও, এক লপ্তে ৭০ একরের বেশি কিনতে পারেনি সংস্থা। এর পর গত জানুয়ারিতে বিদ্যাসাগর শিল্প তালুকে অধিগৃহীত জমি থেকে ১০৪ একর জায়গা দেয় নিগম। নতুন সরকার বেসরকারি শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের বিরোধী হওয়ায় রফাসূত্র হিসেবে প্রকল্প ভেঙে দু’টুকরো করার সিদ্ধান্ত নেয় টিআইএল। সংস্থার ভাইস-চেয়ারম্যান তথা এমডি সুমিত মজুমদার জানান, সেই সূত্র মেনেই চাঙ্গুয়ালে প্রথম পর্যায়ে রাস্তা তৈরি ও বন্দরের পণ্য পরিবহণ সংক্রান্ত যন্ত্র তৈরি হবে। প্রযুক্তিগত সহায়তার জন্য মার্কিন ও জাপানি সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা হয়েছে। অন্য দিকে, বিদ্যাসাগর শিল্প তালুকে তৈরি হবে মোবাইল ক্রেন (যা এখন কামারহাটিতেও হয়) ও মোবাইল কন্টেনারের যন্ত্র। এ ক্ষেত্রেও মার্কিন সংস্থার প্রযুক্তিগত সাহায্য নেওয়া হবে। ওই কারখানাটি নির্মাণের জন্য মাস দুয়েক আগেই নিগমের সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি করেছে সংস্থা। তাদের আশা, সব মিলিয়ে প্রকল্প দু’টি ২০১৫-এর মধ্যেই শেষ করা যাবে। মোট ২,০০০ প্রত্যক্ষ ও ৫,০০০ পরোক্ষ কর্মসংস্থান হবে। |