সিউড়িতে ভাঙচুর, মারধরে আতঙ্ক
সরকারি হোমে তাণ্ডব দুষ্কৃতীদের
কালী প্রতিমা বিসর্জনের সময় সরকারি হোমে ভাঙচুর চালাল একদল যুবক। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে সিউড়ি স্টেট ওয়েলফেয়ার হোমে। মারধর করা হয় একাধিক আবাসিককে। দুষ্কৃতীরা হোমে কার্যত তাণ্ডব চালায়। তছনছ করা হয় হোমের ডর্মিটরি। ভেঙে ফেলা হয় ২৬টি টিউবলাইট। কাচের জানলাও ভাঙচুর করেছে দুষ্কৃতীরা। এলোপাথাড়ি ইট-পাথর ছোড়া হয়। তাণ্ডবের হাত থেকে রেহাই খোদ হোমের সুপারিন্টেন্ডেন্ট কাকলি কুণ্ডুর কোয়ার্টারও।
এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে হোমের আবাসিকদের মধ্যে। পাশাপাশি সিউড়ির মানুষ প্রশ্ন তুলেছেন, প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রবিবারের মধ্যেই বিসর্জন শেষ হওয়ার কথা। তা হলে এখনও কী করে কালী ঠাকুরের বিসর্জন হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে পুলিশ-প্রশাসন কী ভূমিকা নিচ্ছে। এর কোনও সদুত্তর অবশ্য এ দিন পাওয়া যায়নি। তবে এটা ঘটনা, সিউড়ির অনেক মণ্ডপেই এখনও কালী প্রতিমা রয়ে গিয়েছে।
কাকলিদেবী জানিয়েছেন, সদর মহকুমাশাসক ও অতিরিক্ত জেলাশাসকের সঙ্গে হোম সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার জন্য এ দিন বিকেল ৩টে নাগাদ তিনি হোম ছেড়ে বেরিয়ে যান। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ হোমে হামলার কথা জানতে পারেন। সঙ্গে সঙ্গে মহকুমাশাসককে তিনি সমস্ত ঘটনা জানান। কাকলিদেবীর কথায়, “তাড়াতাড়ি হোমে ফিরে এসে সব দেখে আমি তাজ্জব হয়ে যাই। দেখি, নবম শ্রেণির ছাত্র বাবু বাউরির মাথা থেকে গলগল করে রক্ত ঝরছে। আমাদের হোমের করণিক বিশ্বজিৎ টুডু পায়ে মারের চোটে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। বাবুকে সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ওর মাথায় বেশ কয়েকটা সেলাই পড়েছে।” তিনি জানান, খবর পেয়ে সন্ধ্যায় হোমে এসে সব দেখে যান পদস্থ পুলিশকর্তা এবং অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) কৃষ্ণা মাড্ডি।
ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
কিন্তু কেন এই হামলা?
সিউড়ি শহরের কলেজপাড়ায় রয়েছে এই সরকারি হোমটি। কাকলিদেবীর বক্তব্য, “এলাকার তিন যুবক গত কয়েক দিন ধরে রাতে হোমের ভিতরে ঢুকে নানা রকম অসামাজিক কাজ করার চেষ্টা করছিল। তাতে বাধা দেওয়ায় তারা দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে তখনকার মতো চলে যায়। এ দিন বিকেলে এলাকার একটি কালী পুজোর বিসর্জন হচ্ছিল। সেই দলে ওই তিন যুবকও ছিল। তাদের নেতৃত্বে বেশ কিছু দুষ্কৃতী হঠাৎই হোমে ঢুকে তাণ্ডব চালায়।” তাঁর দাবি, ওই যুবকের উদ্দেশ্য চরিতার্থ না হওয়ার আক্রোশেই এই হামলা হয়েছে। কাকলিদেবীর দাবি, হোমের ছেলেরা ১১ জন হামলাকারীকে শনাক্ত করেছে। পুলিশের কাছে তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, চারদিকে অন্ধকার। ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে ইটের টুকরো, টিউবলাইটের ভাঙা কাচ। আবাসিক ছাত্ররা তখনও আতঙ্কে ভুগছে। কাকলিদেবীর আক্ষেপ, “বহু কষ্টে হোমটিকে সাজিয়ে তোলার চেষ্টা করছিলাম। সামনেই শীত আসছে। ডরমিটরির ভাঙা কাচের জানলা কবে ঠিক হবে, জানি না। আমি নিজেও খুব আতঙ্কে রয়েছি। এ রকম হতে পারে কখনও ভাবতে পারিনি।”
অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) বলেন, “ঘটনাস্থলে গিয়ে সব দেখলাম। পুলিশকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” বীরভূমের পুলিশ সুপার নিশাত পারভেজ বলেন, “অভিযোগ হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.