বোরো চাষ বয়কটের সিদ্ধান্ত নিলেন ভাতারের বেশ কিছু চাষি।
মঙ্গলবার ভাতারের কুলচন্ডা, আরা, বড়বেলুন ইত্যাদি গ্রামের চাষিরা একটি বৈঠক করে বোরো চাষ না করার সিদ্ধান্ত নেন। বৈঠকে ছিলেন প্রায় দেড়শো কৃষক। তাঁদের দাবি, এক দিকে যেমন সেচের জল মেলে না, বাজারে ন্যায্য মূল্যে সারও মিলছে না। বাজারে ধানের যা দাম, তাতে চাষের খরচই উঠছে না বলে দাবি চাষিদের। ফলে ধান পড়ে থাকছে গোলাতেই। কুলচন্ডা গ্রামের চাষি অভিজিৎ কোঙার বলেন, “শুধু আমাদের গ্রামেই ২৫ হাজার বস্তা ধান বিক্রি না হয়ে পড়ে রয়েছে। বছর পাঁচেক আগে বস্তা পিছু ধানের দাম ছিল ৪৭০ টাকা। এত দিনে তা বেড়েছে মাত্র ৫০ টাকা। এ দিকে, চাষের খরচ দ্বিগুন হয়েছে। রাজ্য সরকার সহায়ক মূল্যে ধান কেনার পরিকল্পনা নিলেও, বহু চাষি তার সুফল পাননি।” তাই তাঁরা আর বোরো চাষ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান চাষিরা।
চাষ বন্ধের সিদ্ধান্ত সঠিক নয় জানিয়েও সিপিএমের কৃষক নেতা আব্দার রাজ্জাক মণ্ডল বলেন, “সারের নিয়মিত সরবরাহ, ভর্তুকিতে তা পাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে রাজ্য সরকারকে। চাষিদের কাছে সেচের জল পৌঁছে দিতে হবে। সরকারি কৃষি নীতিরও পরিবর্তন দরকার। এই নীতি পরিবর্তনের জন্য আমরা আন্দালনে নামব।” অগস্টে ভাতার থেকেই সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু করেছিল সরকার। সেখানেই চাষিদের সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির সুযোগ না পাওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে বিধানসভার কৃষি সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান তথা ভাতারের তৃণমূল বিধায়ক বনমালী হাজরা বলেন, “বাজারে ধানের দাম বেশ কম। সরকার তো সব ধান কিনতে পারবে না। আপাতত ৬৪৮ টাকা বস্তা দরে সরকারের তরফে ধান কেনা হচ্ছে। এই দর বাড়ানো ও চাষিদের সরকারি বিক্রয় কেন্দ্র পর্যন্ত ধান নিয়ে যেতে প্রয়োজনীয় পরিবহণ খরচ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। তাই চাষিদের অপেক্ষা করতে বলা ছাড়া গতি নেই।” তবে তাঁর দাবি, কুলচন্ডার চাষিদের এই পরিস্থিতিতে গম চাষের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তবে জেলা কৃষি, কৃষিজ বিপণন ও খাদ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, বোরো চাষ বয়কটের আগাম ঘোষণার কথা তাদের জানা নেই। এ ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হবে। |