নিয়ম বহির্ভূত ভাবেই চলছে আসানসোল মহকুমা হাসপাতালের ক্যান্টিন। এমন অভিযোগ তুলেছেন স্বয়ং হাসপাতালের সুপার ও মহকুমাশাসক। সেটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য ক্যান্টিন মালিককে চিঠি দিয়েছেন সুপার নিখিল দাস। তা না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মহকুমাশাসক সন্দীপ দত্ত। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ক্যান্টিন মালিক অতীন রায়ের বক্তব্য, তিনি ওই জায়গা ছেড়ে উঠে যাবেন না।
আসানসোল মহকুমা হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগের গা ঘেঁষে অস্থায়ী চালাঘর বানিয়ে ২০০২ সাল থেকে চলছে ওই ক্যান্টিনটি। সুপার নিখিলবাবু জানান, হাসপাতালের আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হয়েছে। ইমার্জেন্সি বিভাগটিকে আরও বড় করে তৈরি করা হবে। তাই পাশের ক্যান্টিনের জায়গাটি নেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে। নিখিলবাবু বলেন, “আমি খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারলাম ক্যান্টিনটি সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত ভাবে চলছে। সেটি চালানোর কোনও বৈধ অনুমতিপত্র ক্যান্টিনের মালিক দেখাতে পারেননি।” এ ব্যাপারে কোনও সরকারি কাগজপত্রও দফতরে খোঁজ করে তিনি পাননি বলে জানান সুপার। নিখিলবাবু বলেন, “ক্যান্টিন মালিককে জায়গা খালি করে দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছি। তাতে কাজ না হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
হাসপাতালের ক্যান্টিনটি যে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে চলছে সেই অভিযোগ করেছেন রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা আসানসোলের মহকুমাশাসক সন্দীপ দত্তও। তিনি জানান, খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, ২০০২ সালে হাসপাতালের তদানীন্তন সুপার ব্যক্তিগত আবেদনের ভিত্তিতে অতীন রায় নামে এক ব্যক্তিকে ক্যান্টিন চালানোর মৌখিক অনুমতি দেন। কিন্তু কোনও লিখিত চুক্তি হয়নি। মহকুমাশাসক বলেন, “ওই মৌখিক অনুমতির কোনও সরকারি স্বীকৃতি নেই।” মহকুমাশাসক বলেন, “এই ঘটনার কথা জেনে আমি অবাক হয়েছি। ক্যান্টিন সরিয়ে নেওয়ার জন্য মালিককে বলেছি। নির্বিঘ্নে হাসপাতালের আধুনীকিকরণের কাজ করা প্রয়োজন।” হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ক্যান্টিনটির বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরেই স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকেরা দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ জানাচ্ছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, ইমার্জেন্সির গা ঘেসে ক্যান্টিনটি চলায় অসুবিধা হয়। ক্যান্টিন চালানোর জন্য দমকল বা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতিও নেওয়া হয়নি বলে জানা গিয়েছে।
অতীনবাবু অবশ্য দাবি করেন, তাঁর কাছে ক্যান্টিন চালানোর বৈধ অনুমতিপত্র রয়েছে। কিন্তু তিনি তা দেখাতে চাননি। তাঁর দাবি, “তৎকালীন সুপার জায়গাটি দশ বছরের জন্য লিজ দিয়ে লিখিত অনুমতি দিয়েছেন। আমি টাকা জমা দিয়ে জায়গাটির লিজ নিয়েছি।” কিন্তু কত টাকা দিয়েছিলেন বা কার হাতে সেই টাকা দিয়েছিলেন, সে ব্যাপারে কোনও সদুত্তর অতীনবাবু দিতে পারেননি। |