বিদ্যুতের উৎপাদন কমাচ্ছে নিগম, সঙ্কট বাড়বে গ্রীষ্মেও
টাকার অভাবে কয়লা মিলছে না। সেই জন্য শীতকালে নিগমের সব ক’টি ইউনিট তাদের উৎপাদন এক-তৃতীয়াংশ কমিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু তার ফলশ্রুতিতে পরের গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ সঙ্কট আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ, এত দিন শীতে কম চাহিদার দিনগুলিতে পূর্ণ উৎপাদন করে অন্য রাজ্যকে বিদ্যুৎ দিত নিগম। শর্ত অনুযায়ী গ্রীষ্মে ভরা চাহিদার সময়ে তারা তা ফেরৎ দিত। কিন্তু এ বার তার আর উপায় থাকছে না।
কয়লা সরবরাহের যা হাল, তাতে শীতের মুখে ব্যাপক বিদ্যুৎ ঘাটতির আশঙ্কা করছে রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম। তার মোকাবিলায় নির্দিষ্ট পরিকল্পনাও ছকা হয়েছে। দিনের বেলা উৎপাদনের মাত্রা কমিয়ে রেখে সন্ধ্যার মুখে যথাসম্ভব বেশি বিদ্যুৎ তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে তারা। সেই সঙ্গে যে সব ইউনিট চালাতে খরচ বেশি, টাকা বাঁচাতে সেগুলিকে যথাসম্ভব কম চালানোরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চাহিদা মেটাতে রাজ্যে দৈনিক সাড়ে সাত থেকে আট কোটি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হয়। নিগম সূত্রের খবর, তা পাঁচ কোটি ইউনিটে নিয়ন্ত্রণ করার কথা ভাবা হচ্ছে। নিগমের এক কর্তা জানান, এক রেক কয়লা থেকে ৫০ লক্ষ ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতে পারে। আট কোটি ইউনিট উৎপাদন করতে হলে দিনে দরকার ১৬ রেক কয়লা। বিভিন্ন কয়লা সংস্থার কাছ থেকে নিগম সম্প্রতি ১৪ থেকে ১৬ রেক কয়লাই পাচ্ছিল। কিন্তু তাদের কাছে বকেয়া পাওনার অঙ্ক প্রায় ৬০০ কোটি টাকায় পৌঁছে যাওয়ায় সংস্থাগুলি থেকে কয়লার জোগান যে কমে যাবে, তার আঁচ ইতিমধ্যেই পেয়ে গিয়েছে নিগম। বিভিন্ন কয়লা সংস্থা টাকা পেতে চাপ দিতেও শুরু করেছে। কিন্তু নিগমের ভাঁড়ারে যথেষ্ট টাকাই সেই। সেই কারণেই বিদ্যুৎ কর্তারা ধরে নিয়েছেন, নভেম্বরে দৈনিক ১০ রেকের বেশি কয়লা পাওয়া যাবে না। আবার, কয়লা কেনার জন্য মাসে ১২৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করতে পারবে না নিগম। ওই টাকায় ওই ১০ রেকের বেশি কয়লা কেনা যাবে না। আর ১০ রেক কয়লা থেকে ৫ কোটি ইউনিটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব নয়।
শীতের সময়ে রাজ্যে বিদ্যুতের চাহিদা কিছুটা কমে যায়। এর আগে এই সময়ে নিগম তাদের সব ক’টি ইউনিট পূর্ণ মাত্রায় চালিয়ে ভাল ব্যবসা করত। রাজ্যের চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ রফতানি করা হত অন্য রাজ্যে। শর্ত থাকত, যত বিদ্যুৎ শীতে রফতানি করা হল, সেই পরিমাণ বিদ্যুৎ ওই সব রাজ্য থেকে গ্রীষ্মের সময় ফেরত আসবে। গ্রীষ্মের বাড়তি বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে খুবই সাহায্য করত এই ব্যবস্থা। এখন যা অবস্থা, শীতের সময়েও রাজ্যের নিজস্ব প্রয়োজন মেটানো যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। অন্য রাজ্যে রফতানি করা যাবে না বিদ্যুৎ। পরের গ্রীষ্মে তাই সঙ্কট যে আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে, আগাম জানিয়ে রাখছেন বিদ্যুৎ কর্তারা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.