গাও-প্রীতি ডোবাচ্ছে মর্গ্যানের দলকে
প্রয়াগ ইউনাইটেড- ১ (ইয়াকুবু)
ইস্টবেঙ্গল- ১ (বলজিৎ)
সারাক্ষণ প্রায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। সতীর্থরা বাড়ালে তবেই বল ধরছেন, নিজের কোনও উদ্যোগ নেই। যে ক’টা বল পেলেন, কখনও জমা করলেন বিপক্ষ ফুটবলারের পায়ে, নয় তো সাইডলাইনের বাইরে। বারবার হোঁচট আর অকারণে মাঠে পড়ে হামাগুড়ি। এত ‘পরিশ্রমের’ পরেও একটা ফ্রিকিক আদায় করতে পারলেন না মর্গ্যানের ফ্রিকিক স্পেশালিস্ট অ্যালান গাও। ইস্টবেঙ্গল কোচ অবশ্য মজে গাওতেই। “অসাধারণ খেলেছে গাও। অনেক সুযোগ তৈরি করেছে। গোল পেল না ছেলেটা। দুর্ভাগ্যজনক।”
সত্যিই কি তাই? নব্বই মিনিটের চিত্রনাট্যে কিন্তু অন্য ছবিই ধরা দিল। যা দেখে গৌতম সরকার বলে উঠলেন ফোনে, “গাওকে দেখে মনে হচ্ছে, পাড়ার ক্লাবে খেলছে। ফাঁকায় বল দিতে হবে, তারপর বাবু গোল করবে।” গাওয়ের জন্য দল ভুগছে দেখেও যেন চোখ বন্ধ ব্রিটিশ কোচের। নিজের ধারণাকে সত্যি প্রমাণ করার তাগিদেই কি স্কটিশ ফুটবলারকে পুরো সময় মাঠে রেখে দিলেন মর্গ্যান?
গাও পড়ছেন, ইস্টবেঙ্গলও পিছোচ্ছে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
মাঠের বাইরে বসে মাঝমাঠের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য দুই ফুটবলার। পেন ওরজি বেঞ্চে সময় গুণছেন কখন মাঠে নামবেন। আহত মেহতাব হোসেন অবশ্য গ্যালারিতে। গাওকে রাখার জন্য পেনের জায়গা হয়নি প্রথম দলে। কিন্তু সেই পেনকে ধরেই ম্যাচের শেষ লগ্নে ছন্দে ফিরতে হয় মর্গ্যানকে। পেনের জায়গায় মাঝমাঠের দায়িত্বে যিনি শুরুতে খেললেন সেই হরমনজিৎ সিংহ খাবরা কোনও বডি কন্ট্যাক্টে গেলেন না। বিপক্ষ গোল করার মতো জায়গায় পৌঁছে গেলেও তাঁকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা দেখা গেল না। মর্গ্যান এখানেও অনড়, “খাবরা দারুণ খেলল। সাহসী ফুটবলার। বেশ কিছু ভাল ট্যাকল করেছে। যতক্ষণ খেলেছে পেনের অভাব বুঝতে দেয়নি।”
ইউনাইটেড ফুটবলাররা গতি বাড়িয়ে প্রতিআক্রমণের ঝড় তুললেও বারবার আটকে গেলেন উগা ওপারার কাছে। কিন্তু যখন পরিবর্তনের দরকার পড়ল, মর্গ্যান তখন গাওকে রেখে দিলেন, বসিয়ে দিলেন ওপারাকেই। মর্গ্যানের গাও-নির্ভরতা এখানেও প্রকট। ওপারার বদলি হিসেবে যিনি নামলেন সেই গুরবিন্দর সিংহের বয়স ইয়াকুবুর প্রায় অর্ধেক! তাও ইয়াকুবু দৌড়ে বারবার তাঁর পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেলেন। নব্বই মিনিটের মধ্যে ৮০ মিনিট প্রয়াগ খেলেছে। ইস্টবেঙ্গল ইস্টবেঙ্গলের মতো খেলল ১০ মিনিট। মর্গ্যান এখানেও বললেন, “দুর্ভাগ্য। ম্যাচটা জিততে পারলাম না।” ইস্টবেঙ্গল অন্দরমহলে কিন্তু মর্গ্যানের ভাবমূর্তি নিয়ে ইতিমধ্যেই গুঞ্জন শুরু হয়ে গেছে। কেন রবিন সিংহকে শেষ মুহূর্তে খেলানো হল না, তা নিয়েও ধন্ধ থেকে গেল। যদিও মর্গ্যান বললেন, “ওর আত্মবিশ্বাসের অভাব হচ্ছিল। তাই বিশ্রাম দিয়েছিলাম।”

টোলগে: গোল ফস্কানোর
হতাশা। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্সকে নাড়িয়ে দিলেন সোদপুরের লালকমল ভৌমিক একাই। বিরতির মিনিট তিনেকের মধ্যেই ধাক্কা। লালের বাড়ানো পাস থেকে চিন্তা রাওয়ের ক্রসে অর্ণব মণ্ডলের ব্যাক হেড। সেই বলে ইয়াকুবুর হেড গোলকিপার গুরপ্রীত এক জায়গায় দাঁড়িয়ে দর্শকদের মতোই দেখলেন। কোনও প্রতিরোধ নেই। আরও তিনটে গোল খেতে পারত ইস্টবেঙ্গল। দ্বিতীয়ার্ধের মাঝমাঝি তিন মিনিটের মধ্যে। কিন্তু লালকমলের পরিশ্রমের সঠিক মর্যাদা দিতে পারলেন না ভিনসেন্টরা। যার খেসারত দিতে হল প্রয়াগকে শেষ দশ মিনিটে। ম্যাচ শেষ হওয়ার মিনিট পাঁচেক আগে পেনের থ্রু থেকেই সঞ্জুর ক্রস, বলজিতের শটে ১-১। এই নিয়ে পরপর দু’টো ম্যাচে শেষ দিকে গোল খেয়ে তিন পয়েন্ট পাওয়া থেকে বঞ্চিত হল প্রয়াগ। এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে হল। কোচ সঞ্জয় সেন বলছিলেন, “খেললাম তো আমরাই। এই ড্র আসলে আমাদের কাছে হার।”
ট্রেভর মর্গ্যান ভারতে কোচিং করতে আসার পর যা ঘটেনি, সেটাও ঘটছে এ বার। দু’ম্যাচে মাত্র এক পয়েন্ট নিয়ে আই লিগে প্রথম কলকাতার বাইরে খেলতে যাবে ইস্টবেঙ্গল।

ইস্টবেঙ্গল: গুরপ্রীত, ওপারা (গুরবিন্দর), নির্মল, রবার্ট, নওবা, ভাসুম (বলজিৎ), হরমনজিৎ, সঞ্জু, পাইতে (পেন), টোলগে, গাও।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.