|
গতির তীর্থে এসেও আফসোস বাঙালির
মহাশ্বেতা ভট্টাচার্য • নয়াদিল্লি |
|
ফর্মুলা ওয়ানের এ দেশে আসাকে ‘মক্কার ভারতে আসার মতো ব্যাপার’ বলছেন ওঁরা। কিন্তু সেই তীর্থে হাজির থেকেও তার সঙ্গে যুক্ত হতে না পারাটা অসম্ভব কষ্ট দিচ্ছে কলকাতার মোটর স্পোর্টস প্রেমীদের একটা বড় অংশকে।
বুদ্ধ সার্কিটে তাই একরাশ অভিমান নিয়ে হাজির পূর্ব ভারতের মোটর স্পোর্টস প্রেমীরা। যাঁদের অভিযোগ, রাজসূয় যজ্ঞে পুরোপুরি উপেক্ষিত পূর্বাঞ্চল। রেসের মার্শাল নির্বাচন থেকে শুরু করে কোনও কাজের সঙ্গেই কলকাতার কাউকে যুক্ত করা হয়নি। যাতে মর্মাহত দেবর্ষী সাধন বসু, সোহম হাজরা বা শৌভিক চৌধুরীর মতো ভারতীয় মোটর র্যালি দুনিয়ার ফর্মুলা ওয়ান পাগলরা।
অভিযোগের তির সরাসরি ভারতীয় মোটর স্পোর্টস ফেডারেশন এফএমএসসিআই-এর দিকেই। সংস্থার প্রভাবশালী দক্ষিণী লবির সঙ্গে কলকাতার সদস্যদের মন কষাকষি রয়েছে। তাই কলকাতা ব্রাত্য, বলছেন ওঁরা। মোটর স্পোর্টস বিশেষজ্ঞ দেবর্ষী বলছিলেন, “এ দেশের র্যালি সার্কিটে কলকাতার বড় উপস্থিতি। অভিজ্ঞতাতেও আমরা এগিয়ে। কিন্তু রেস মার্শাল হওয়ার জন্য ফর্ম ভর্তি করেও কেউ কেন ডাক পেলাম না, সেটা রহস্য।” টগবগে যুবক শৌভিক আরও একটু এগিয়ে স্বজন পোষণের ইঙ্গিত দিলেন। বুদ্ধ সার্কিটের গ্যালারি থেকে এ দিন বলছিলেন, “রেসের আগে ইন্ডিয়ান মোটর স্পোর্টস মার্শালস ক্লাব তৈরি হয়। ওরা যাদের চায়, তাদেরই নিয়েছে। এমন অনেকে ডাক পেয়েছে যাদের ফর্মুলা ওয়ানের নিরাপত্তা সম্পর্কে কোনও ধারণাই নেই।”
কলকাতা থেকে বুদ্ধ সার্কিটে হাজির একমাত্র বাঙালি মার্শাল জন মুখোপাধ্যায়। তিনি অবশ্য আবেদন করেছিলেন উত্তরাঞ্চল থেকে।
পুজোর মাস দুই আগে দক্ষিণ কলকাতার এক অভিজাত ক্লাবে বুদ্ধ সার্কিটের ক্লার্ক অব দ্য কোর্স ফারহান ভোহরার নেতৃত্বে দেবর্ষীদের নিয়ে ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম হয়েছিল। কিন্তু সেই সার। গত বারো দিন রেসের জন্য দিল্লি এসে পড়ে থাকা সোহমও হতাশ। তবে তিনি মনে করেন কিছুটা ভুল ক্লাবগুলোরও রয়েছে। বলছিলেন, “কলকাতার ক্লাবগুলো আমাদের জানাতেই পারেনি মার্শাল হওয়ার জন্য ঠিক কী ভাবে আবেদন করতে হবে।” সোহম বলছেন, সমস্যা মানসিকতার। “আমরা পুরনো চিন্তাতেই পড়ে আছি। আর ফর্মুলা ওয়ান পেশাদারিত্বের শেষ কথা।”
এফএমআইসি-র অন্যতম কর্তা ভিকি চন্দোক অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন।
ঘটনা যা-ই হোক, বাস্তব হল, শুমাখারদের সামনে থেকে দেখার তীর্থে এসেও মন খচখচ করছে কলকাতার। |