|
|
|
|
ঘাটতির আশঙ্কা তৈরি করে কয়লা বন্ধ করল আদানিও |
গৌতম গুপ্ত • কলকাতা |
যা আশঙ্কা ছিল, সেটাই হল।
বকেয়া টাকা না পেয়ে ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেড (ইসিএল) রাজ্যের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে কয়লা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল। তাদের জন্য কিছু টাকার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর। এই অবস্থায় বকেয়া টাকার জন্য চাপ দিতে রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমকে উঁচু মানের বিদেশি কয়লা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে আদানি এন্টারপ্রাইজ। নিগমের আশঙ্কা, এ বার এই একই পথ নেবে অন্য কয়লা সংস্থাগুলিও। কয়লা সঙ্কটের জের এ দিন গিয়ে পড়েছে নিগমের সাগরদিঘি কেন্দ্রে। কয়লার অভাবে সেখানকার একটি ইউনিট বৃহস্পতিবার বন্ধ করে দিতে হয়েছে। সাগরদিঘিতে দু’টি ৩০০ মেগাওয়াটের ইউনিট রয়েছে। এ দিন সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ কয়লার ভাঁড়ার এতটাই কমে যায় যে, একটি ইউনিট বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ কর্তারা।
তবে দীপাবলির ছুটি থাকায় রাজ্যে বিদ্যুৎ চাহিদা কম ছিল। তা ছাড়া ভিন রাজ্য থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। তাই এ দিনও এড়ানো গিয়েছে বিদ্যুৎ ঘাটতি। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, নিগমের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির কাছে আদানি এন্টারপ্রাইজের গুরুত্ব অপরিসীম। বিদ্যুৎ-কর্তারা বলছেন, কোল ইন্ডিয়া প্রয়োজনের সবটুকু কয়লা দিয়ে উঠতে পারছে না বলে গত কয়েক বছর ধরে বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি করছে নিগম। গত ডিসেম্বরে বিদেশি কয়লা সরবরাহের জন্য আদানিদের সঙ্গে এক বছরের চুক্তি হয়। কথা ছিল, প্রতি মাসে এক লক্ষ টন করে এক বছরে ১২ লক্ষ টন কয়লার জোগান দেবে আদানি। এই কয়লা আসে ইন্দোনেশিয়া থেকে।
কিন্তু নিজেদের বেহাল আর্থিক ব্যবস্থার জেরে অন্য কয়লা সংস্থাগুলির মতো আদানির প্রাপ্যও পুরো মেটাতে পারেনি বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, দিন দশেক আগে আদানিদের ১০ কোটি টাকার চেক দেওয়া হয়। অথচ তাদের প্রাপ্য ২০০ কোটি টাকার কাছাকাছি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আদানি কয়লা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে অবশ্য আদানির এখানকার কর্তাব্যক্তিরা কিছু বলতে রাজি হননি। চুক্তি অনুযায়ী এখনও তাদের কাছ থেকে এক লক্ষ টন কয়লা নিগমের পাওয়া বাকি। বকেয়া মেটাতে না পারলে এই কয়লা আদানিরা আদৌ আর দেবে কি না, তা বুঝতে পারছে না নিগম।
এই কয়লা সঙ্কটের মধ্যেই আগামী দু’বছরের জন্য ২৪ লক্ষ টন কয়লা আমদানি ও সরবরাহের জন্য দরপত্র ছেড়েছে নিগম। কিন্তু কয়লা সংস্থাগুলির কাছে যে ভাবে নিগমের বকেয়ার পরিমাণ বাড়ছে, তাতে নতুন করে তাদের সঙ্গে কেউ কয়লা-চুক্তি করবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান বিদ্যুৎ কর্তারা। |
|
|
|
|
|