চাঁদার জুলুম, করিমপুরে বন্ধ বাস চলাচল
চাঁদার জুলুমের জেরে বন্ধ হয়ে গেল বাস চলাচল।
করিমপুরের স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যরা কালী পুজোর চাঁদা আদায় নিয়ে দিন কয়েক ধরেই শুরু করেছিল জুলুম। তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য বাস চালকেরা। রাস্তা দিয়ে ট্রাক-ট্রেকার কিংবা গাড়ি গেলেও মিলছিল না রেহাই। সম্প্রতি বেসরকারী বাস চালকদের উপরে তারা শুরু করেচিল ‘বাড়াবাড়ি।’ এ ব্যাপারে চার যুবকের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগও দায়ের করেন বাসকর্মীরা। শুধু তাই নয়, ওই রুটে বাস চলাচলও বন্ধ করে দেন। পুলিশ অবশ্য এ ব্যাপারে তদন্তে নেমে ওই ক্লাবের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে।
অভিযোগ, পুজোর চাঁদা আদায় করতে গিয়ে ওই ক্লাবের চার যুবক দিন কয়েক আগে রীতিমত তাণ্ডব চালায়। বাসকর্মীদের তারা মারধরও করে। ভয় দেখানো হয় বাসযাত্রীদেরও। বৃহস্পতিবার ভোরের ওই ঘটনায় করিমপুর থানার রেগুলেটেড মার্কেটের গেটে প্রতিবাদে বাসকর্মীরা। প্রায় ঘন্টা চারেক করিমপুর-কৃষ্ণনগর রাজ্যসড়ক অবরোধ করে রাখে তারা। ফলে করিমপুর থেকে কলকাতায় বেশীরভাগ বাস এ দিন যেতে পারেনি। চরম সমস্যায় পড়তে হয়েছে অসুস্থ রোগি ও নিত্যযাত্রীদের। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ উঠে গেলেও বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। ওই দিন ডোমকল-কলকাতা রুটের ওই বাস কণ্ডাক্টর বকুল ভদ্রের অভিযোগ,‘‘ভোর চারটে নাগাদ করিমপুরে বুকিং কাউন্টারের সামনে আমাদের বাস দাঁড়িয়ে ছিল। আচমকা চার যুবক বাসে উঠে আমার কাছে কালীপুজোর জন্য পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা চেয়ে বসে। মালিককে না জানিয়ে অত টাকা দেওয়া সম্ভব নাকি! আমার কাছে অত টাকাও ছিল না। না দেওয়াতে ওরা বাসের মধ্যে তাণ্ডব চালায় ওরা। আমাদের ও পিছনের আর একটি বাসের কর্মীদেরও ওই চারজন বেধড়ক মারধর করে। আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে মেরে ফেলারও ভয় দেখায়।’’
ছবি: কল্লোল প্রামাণিক।
তেহট্টের এসডিপিও মলয় মজুমদার বলেন,‘‘ বাসকর্মীদের কাছে চাঁদা আদায় করতে গিয়ে জুলুম করেছিল করিমপুরের কয়েকজন যুবক। তার জেরে একটা বিশৃঙ্খলাও সৃষ্টি হয়। অভিযুক্ত এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বাকিদের খোঁজও চলেছে।’’
ডোমকলের কুশাবাড়িয়া গ্রামের মওলা বক্স এদিন ওই ভোরের বাসে অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে কলকাতায় যাচ্ছিলেন ডাক্তার দেখাতে। মওলা বক্স বলেন,‘‘চাঁদা আদায়ের নামে কয়েকজন মদ্যপ যুবক বাস আটকে গণ্ডগোল করছিল। আমরা ওদের বহুবার অনুরোধ করি যে আমরা অসুস্থ রোগী নিয়ে কলকাতায় যাচ্ছি। দয়া করে আমাদের যেতে দিন। ওরা কোন কথায় কান দিল না। অশ্লীল গালিগালাজ করে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকল। বাধ্য হয়ে আমরা কয়েকজন একটা গাড়ি ভাড়া করে কলকাতায় রওনা দিলাম।’’
নদিয়ার বাস মালিক সমিতির সম্পাদক পীযূষ রক্ষিত বলেন,‘‘বিভিন্ন জায়গায় যেভাবে চাঁদার জুলুম শুরু হয়েছে তাতে বাস চালানোই দায় হয়ে পড়েছে। ওই যুবকেরা আজ যে পরিমাণ চাঁদা চেয়েছিল সেই টাকা সারা মাসে একজন বাসকর্মীও আয় করেন না। এই গণ্ডগোলে আজ দূরপাল্লার বাস যেতে পারেনি চাঁদা নিয়ে জুলুমবাজি যাতে বন্ধ হয় সে ব্যাপারে প্রশাসনের আরও কঠোর হওয়া উচিত।’’ তেহট্টের মহকুমাশাসক অচিন্ত্যকুমার মণ্ডল বলেন,‘‘ প্রতিটি পুজোর আগে আমরা পুজো উদ্যোক্তাদের বলে দেওয়া হয়েছিল চাঁদা নিয়ে কোনওজুলুমবাজি বা অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে। তবে কোনও পুজো কমিটির বিরুদ্ধে যদি এরকম কোন অভিযোগ আসে তবে পরের বছর তাদের পুজোর অনুমতি দেওয়া হবে না।’’



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.