দারিদ্র ও মেয়ে পাচার রুখতে ভারতের গ্রামে দুই আন্তর্জাতিক তারকা
ই গ্রামের মেয়েরা স্কুলের চৌকাঠ পেরোত না কেউ। হয় বিয়ে হয়ে যেত চোদ্দো-পনেরোর আগেই। কিংবা পড়ত দালালদের হাতে। মেয়ে পাচারচক্রের শিকার হয়ে হারিয়ে যেত একেবারে। আর খুঁজে পেত না গরিব আত্মীয় স্বজন।
রাঁচি থেকে সামান্য দূরে গ্রামের নাম রুক্কা। সেখানকার মেয়েদের লড়াইয়ে শামিল হতে, সঙ্গী হতে আসছেন বিশ্বের দুই অতি পরিচিত মেয়ে ফুটবলার জোয়ানা ল্যোমান এবং লিয়ান জোয়ান স্যান্ডারসন। এবং এঁদের আসাকে কেন্দ্র করে মেয়েদের ফুটবল বিশ্বে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
দারিদ্র নয়, হাত বাড়াও ফুটবলেআপাতত এই স্লোগান দু’জনের। টুইটার, ফেসবুকে বহু বিদেশি ভরসা জোগাচ্ছেন ‘জোলি’কে। তাঁদের অভিনব উদ্যোগের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন টিম কাহিলের মতো অনেক পুরুষ তারকাও। কাহিল সরাসরি প্রচার শুরু করেছেন এঁদের হয়ে।
জোয়ানা-র ‘জো’ এবং লিয়ানের ‘লি’দুই মিলে তৈরি হয়েছে ‘জোলি’ অ্যাকাডেমি। মেয়েদের সার্কিটে অতি পরিচিত অ্যাকাডেমি এ বার ঝাড়খণ্ডি মেয়েদের জীবন পাল্টানোর জন্য তৈরি। বার্সেলোনা, ওয়াশিংটন, লন্ডনের পরে তৃতীয় শাখা খুলবে ভারতে।
বছর ঊনত্রিশের জোয়ানা আমেরিকান ফুটবলার। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হয়ে অনেক ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ফিলাডেলফিয়া ছেড়ে এ বার তিনি স্পেনের এসপ্যানিয়ল ক্লাবে। ইংরেজ লিয়ান খেলেছেন চেলসি ও আর্সেনাল দলে। পরে ফিলাডেলফিয়ায় খেলতে গিয়ে বন্ধুত্বের শুরু জোয়ানার সঙ্গে। এখন দু’জনেই স্পেনের এসপ্যানিয়লে।
লোম্যান এবং স্যান্ডারসন। ওয়াশিংটন, বার্সেলোনা, লন্ডনের পর ভারতে।
গত বছর কোচের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে ইংল্যান্ড জাতীয় দল থেকে অবসর নিয়েছেন মাত্র বাইশ বছরেই। লিয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “জানুয়ারি মাসে আমরা ঝাড়খণ্ডে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছি। ওখানে এক মাস থাকব। আশা করি, আন্তর্জাতিক স্তরের মেয়ে ফুটবলার তৈরি করা যাবে ওখানে। আমাদের অ্যাকাডেমি বার্সেলোনা, ফিলাডেলফিয়ার সঙ্গে ভারতেও কাজ করবে।”
এক আমেরিকান ভদ্রলোকের সৌজন্যে ওই রুক্কা গ্রাম এখন দেশের সেরা মেয়ে ফুটবলারদের সেরা কেন্দ্র। মেয়েদের ফুটবল বিশ্বে এক অন্যতম আলোচনার কেন্দ্র, বললেন লিয়ান স্যান্ডারসন।
ফ্রান্স গাসলারের ঝাড়খণ্ডে এসে পড়াও এক রূপকথার মতো। বোস্টন থেকে তিনি এসেছিলেন স্যাম পিত্রোদার অনুরোধে, সি আই আইয়ে কাজ করতে। ভারতের দারিদ্র্য নিয়ে কাজ করার সময় তিনি সরাসরি গ্রামে চলে যান। থাকতেন মাটির বাড়িতে। ওখানেই মেয়েদের দুর্দশা দেখে তিনি তাদের ফুটবল খেলতে উৎসাহ দেন। একটি মেয়ে আসে প্রথমে। তার পরে দুই, তিন। এই করতে করতে এখন অজস্র। আশপাশের গ্রাম থেকেও অনেক মেয়ে হাজির।
প্রথম দিকে তীব্র আপত্তি আসত মেয়েদের বাড়ি থেকে। মা’র আপত্তি ছিল, ঘরদোর সাফ করার লোক পাওয়া যাচ্ছে না বলে। বাবার আপত্তি ছিল, চাষের জমিতে সাহায্যের লোক পাওয়া যাচ্ছে না। সেই পরিস্থিতি সামাল দিয়ে গাসলারের এন জি ও সংস্থা ‘যুবা’ দুশোর উপরে মেয়ে ফুটবলার তৈরি করেছে। কর্মযজ্ঞে জড়িয়ে পড়েছে টাটা ফুটবলার অ্যাকাডেমি। ওই গ্রাম থেকেই পুষ্পা নামের এক মেয়ে ভারতীয় দলে খেলেছে। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ঝাড়খণ্ড দলেও রুক্কা গ্রামের মেয়েদের ভিড়।
জোয়ানা এবং লিয়ান এই জোয়ারকেই আরও তীব্র করতে পা রাখছেন ভারতে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.