দেওয়ালি-কাপ শেষ। আবার একে একে মাঠে ফেরা।
ঢুকে পড়েছেন ধোনি। ঢুকে পড়েছেন ইউসুফ। চলে এসেছেন বিরাট-রায়না। আবার সাজছে ইডেন। কিন্তু ওয়ান ডে নয়, এ বার টি-টোয়েন্টির উৎসবে।
কলকাতাও তো নড়েচড়ে বসল! দিন দুয়েক আগে ইডেনের ওয়ান ডে-তে যে ক’জন দর্শক পয়সা খরচ করে ম্যাচ দেখতে এসেছিলেন, টি টোয়েন্টির আগে রাতারাতি সংখ্যাটা প্রায় দ্বিগুণে দাঁড়িয়েছে। হিসাব বলছে, বৃহস্পতিবার সন্ধে পর্যন্ত টি-টোয়েন্টির টিকিট কেটেছেন ১০ হাজার ৬৮৭ জন দর্শক। সঙ্গে অনলাইন বিক্রির হিসাব ধরলে সংখ্যাটা আরও বেশি। হাতে আরও দেড় দিন, এবং শেষ বেলায় মুখে হাসি ফুটছে সিএবি কর্তাদের মুখে। দু’টো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন তাঁরা। এক, ওয়ান ডে-তে ইডেনে ‘ধোনিবাজি’। আর দুই, অক্টোবরের ‘উইকএন্ডে’ তিন ঘণ্টার জমজমাট ‘ক্রিকেট-শো’। কোষাধ্যক্ষ বাবলু গঙ্গোপাধ্যায় এ দিন বলছিলেন, “টিকিট বিক্রি থেকে এখনই এক কোটি মতো উঠেছে। আরও উঠবে। পঁয়তাল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার মতো লোক হবে মনে হচ্ছে।” |
ইডেনে চুনকামের ম্যাচ থেকে যদি টি-টোয়েন্টির উত্তেজনা বেশি হয়, তা হলে ঘটনার ঘনঘটাও তো যথেষ্ট। শনিবার বাইশ গজে ম্যাচ, কিন্তু অন্যান্য ‘ম্যাচ’ শুক্রবার থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে। কী হচ্ছে না? ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম টেস্টের দল নির্বাচন? নির্ঘন্টশুক্রবার সন্ধে সাতটা। বার্ষিক সভার পর বোর্ডের প্রথম ওয়ার্কিং কমিটি? টি-টোয়েন্টি ম্যাচের দিন সকালে সেটা হচ্ছে টিম হোটেলে। কে আসছেন না? শুক্রবার সকাল থেকেই শহরে একে একে ঢুকে পড়বেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট শ্রীনিবাসন, কেএসসিএ প্রেসিডেন্ট অনিল কুম্বলে, বোর্ড সচিব সঞ্জয় জাগদালে, আইপিএল চেয়ারম্যান রাজীব শুক্ল। সব মিলিয়ে ৩০-৩৫ জন বোর্ড কর্তা আসছেন। দল নির্বাচনী বৈঠকের পর ধোনিদের জন্য ডিনার, শনিবার ম্যাচের আগে মেডেল পরিয়ে দু’দেশের ক্রিকেটারদের সিএবি-র সংবর্ধনা, সবই থাকছে।
আর এই বাজারে বিতর্ক? ভাল রকম আছে। এবং আছে ইডেনের বাইশ গজ নিয়ে।
ইডেনে ওয়ান ডে ম্যাচ জিতে উঠে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে ধোনি বলেছিলেন, “ইট ওয়াজ আ আগলি লুকিং উইকেট। আমরা ভাগ্যবান যে এই উইকেটে ২৭০ তুলতে পেরেছি। কোন বলটা কোন দিকে ঘুরবে বোঝা যাচ্ছিল না।” যার উত্তরে এ দিন ইডেনে পিচ কিউরেটর প্রবীর মুখোপাধ্যায় উত্তেজিত ভাবে বলে দিলেন, “আমি কারও কথা মতো কাজ করি না। নিজের কাজটা আমি ভাল রকম জানি। উইকেট যদি এত কঠিনই হয়, তা হলে ধোনি নিজে কী ভাবে ৭৫ করে গেল? ইংল্যান্ড কী ভাবে বিনা উইকেটে ১৩০ তুলেছিল? আসলে আমাদের দেশে সবারই বাক্-স্বাধীনতা আছে। যার যা ইচ্ছে বলতে পারে।” পিচ কিউরেটর পরিষ্কার জানিয়ে দিচ্ছেন, ধোনির সঙ্গে শুক্রবার দেখা হলে সৌজন্য দেখাবেন, কিন্তু পিচ নিয়ে একটা শব্দও উচ্চারণ করবেন না। আর টি-টোয়েন্টির উইকেট? প্রবীরবাবু সাফ বলছেন, ‘‘কেমন আবার হবে? আগের দিনের উইকেটেই ম্যাচ হবে। রান উঠবে। টি টোয়েন্টিতে যেমন হয়।”
ইংরেজ ক্রিকেটাররা আবার সফরের শেষ ম্যাচের আগে আরও একটা দিন মেজাজে কাটিয়ে নিলেন। এ দিন সকালের দিকে কুক-পিটারসেন সমেত গোটা ইংল্যান্ড টিম শহরের একটি অনাথ-আশ্রমে ঘুরে এল। অনাথ শিশুদের সঙ্গে ক্রিকেট, ফুটবল, কোনও কিছুই বাদ রাখেননি পিটারসেনরা। এবং প্রায় দু’ঘণ্টা কাটিয়ে বেরোবার সময় ইংল্যান্ড কোচ অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার বলেও দিলেন, “ভালই কাটল সময়টা। অন্য রকম একটা অভিজ্ঞতা হল।” ‘অন্য রকম অভিজ্ঞতাই’ বটে। সিরিজটা যা যাচ্ছে! |