হুগলিতে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে, হাওড়ায় ফাটল দেদার
হুগলি যা পারল, হাওড়া তা পারল না।
নিষিদ্ধ শব্দবাজির দাপট রুখতে হুগলি জেলা পুলিশ-প্রশাসন এ বার কালীপুজোয় কোমর বেঁধে নেমেছিল। তার ফলও মিলল হাতেনাতে। কালীপুজোর সন্ধ্যা থেকে নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগ গ্রেফতার করা হল অনেককে। উদ্ধার করা হল বহু শব্দবাজি। অনেক জায়গাতেই পাঁচ-ছ’ঘণ্টার ব্যবধানে অল্প কয়েক বার শব্দবাজি শোনা গিয়েছে।
কিন্তু হাওড়ার পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হল না। অন্যান্য বছরের মতো এ বারও বাগনান, উলুবেড়িয়া, বাউড়িয়া, সাঁকরাইলের মতো বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকার সর্বত্রই দেদার শব্দবাজি ফাটল। এখানে পুলিশকে কোনও অভিযান চালাতে দেখা যায়নি বলে দাবি গ্রামবাসীদের। তাঁদের অভিযোগ, নিষ্ক্রিয় ছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদও।
কালীপুজোর আগে হুগলি জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, শব্দবাজির দাপট থেকে রেহাই মিলবে সাধারণ মানুষের। ধনেখালি, বাঁশবেড়িয়া, গুড়াপ, মগরা-সহ বেশ কিছু জায়গায় অন্য বছরের তুলনায় শব্দবাজি কম ফেটেছে। স্বস্তি পেয়েছে সাধারণ মানুষ। চন্দননগরেরও বিভিন্ন এলাকায় কানফাটানো শব্দবাজির দাপট অন্যান্য বারের চেয়ে কম ছিল। স্বস্তি মিলেছে জেলা সদর চুঁচুড়ার বাসিন্দাদেরও। অনেকেই জানান, অন্যান্য বছর কালীপুজোর রাতে বাজির কানফাটানো শব্দে ঘুমোতে পারতেন না তাঁরা। এ বার নিশ্চিন্তে ঘুমিয়েছেন।
তবে, শব্দবাজি জেলা প্রশাসনের অস্বস্তি বাড়িয়েছে শ্রীরামপুর এবং আরামবাগ মহকুমায়। বুধবার সন্ধ্যা থেকেই উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুর, চণ্ডীতলা, বেগমপুর, সিঙ্গুর, হরিপালে শব্দদানবের দাপটের বিন্দুমাত্র হেরফের দেখা যায়নি। অর্থাৎ, পুলিশের নজর এড়িয়ে দেদার শব্দবাজি বিক্রি হয়েছে। শ্রীরামপুর শহরে, বিশেষ করে গঙ্গার ধারের জায়গাগুলোতে চকোলেট বোমার দাপটে কান পাতা দায় ছিল। রাত যত বেড়েছে, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সেই আওয়াজ। তবে, মহকুমার কিছু জায়গায় অন্য বছরের তুলনায় কম বাজি ফেটেছে বলে সাধারণ মানুষ জানিয়েছেন। হরিপালের বেশ কিছু জায়গায় অন্যান্য শব্দবাজির পাশাপাশি বেশি আওয়াজের গাছবোমা ফেটেছে বলেও অভিযোগ।
শব্দবাজি নিয়ে প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞার কোনও প্রভাবই পড়েনি আরামবাগ মহকুমাতে। প্রায় সর্বত্রই বিকট শব্দে নানা ধরনের শব্দবাজি ফেটেছে। এ নিয়ে অবশ্য থানায় কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগী বলেন, “শব্দবাজি নিয়ে পুলিশকে বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বেআইনি বাজি নিয়ে অভিযান জারি আছে।”
হুগলির পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ২৪ ঘণ্টায় নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগে ৪৫ জনকে গ্রেফতার করা হয় এবং প্রচুর নিষিদ্ধ শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়।
তবে, হাওড়ার গ্রামীণ এলাকার সর্বত্রই দেদার শব্দবাজি ফেটেছে। শব্দবাজির বিরুদ্ধে অভিযান না চালানোর কথা মেনে নিয়েছেন পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার কাজে বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ মোতায়েন করতে হয়েছিল। ফলে, শব্দবাজির বিরুদ্ধে কোনও অভিযান চালানো যায়নি।” তবে, তাঁর দাবি, “শব্দবাজি তেমন ভাবে ফাটেনি বললেই চলে।” অন্য দিকে, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের হাওড়ার আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে জানানো হয়, এখানে ‘কন্ট্রোল-রুম’ খোলা ছিল। মোতায়েন ছিল ভ্রাম্যমাণ দলও। কন্ট্রোল-রুমে ফোন করে কেউ শব্দবাজি সংক্রান্ত অভিযোগ জানালেই সরাসরি পুলিশকে তা জানিয়ে দেওয়া হত। ঘটনাস্থলে পাঠানো হত ভ্রাম্যমাণ দলকেও। কিন্তু কন্ট্রোল রুমে কোনও অভিযোগ কালীপুজোর রাতে আসেনি বলে দাবি পর্ষদ কর্তাদের।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.