|
|
|
|
রবিশঙ্করকে আক্রমণ দিগ্বিজয়ের |
সহযোগীরা প্যাঁচে, অণ্ণা তাই ‘ভাল’ আছেন মৌনী হয়ে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের আর ছ’মাস বাকি। কিন্তু হিসার ভোটের ছায়া যাতে সেখানে না পড়ে, সে জন্য অণ্ণা শিবিরের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব ও আর্থিক অনিয়ম নিয়ে বিতর্ক আরও উস্কে দিতে এখন সক্রিয় কংগ্রেস। দলের কৌশল হল, অণ্ণার সমালোচনা না করে তাঁর সহযোগীদের অনিয়ম এবং দ্বন্দ্ব নিয়ে বেশি করে প্রচার করা। যাতে অণ্ণাদের আন্দোলন অচিরেই দুর্বল করে দেওয়া যায়।
হিসার লোকসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনের পর উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটেও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রচারে নামার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন অণ্ণা হজারে এবং তাঁর সহযোগীরা। কিন্তু তার পরে ‘টিম অণ্ণা’র মধ্যেই এখন প্রবল সমস্যা তৈরি হয়েছে। কোনও সহযোগীর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ, কারও কাশ্মীর নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য অণ্ণাকে চাপে ফেলেছে। আবার সরাসরি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রচারে নামায় অণ্ণা হজারের কোর কমিটি থেকেও দুই সদস্য ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁদের মতে, মূল উদ্দেশ্য থেকে আন্দোলনের মুখ ঘুরে গিয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবেই এই অবস্থায় মৌন ব্রত নিয়েছেন স্বয়ং অণ্ণা। এমনকী, আজ তিনি জানিয়েছেন, আপাতত মৌনব্রত চালিয়ে যাবেন। আগামী শনিবার দিল্লিতে কোর কমিটির বৈঠকেও তিনি উপস্থিত থাকবেন না। অণ্ণার কথায়, “শরীর ভাল যাচ্ছে না। মৌন থাকায় শরীরের উন্নতি হচ্ছে।”
কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন, আসলে অণ্ণাও এখন ধন্ধে পড়েছেন। সহযোগী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও কিরণ বেদীর বিরুদ্ধে বিতর্ক লঘু করতে তিনি গোড়ায় ঢাল হয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু যে ভাবে কেজরিওয়াল এবং কিরণ বেদীর ‘আর্থিক অনিয়ম’ নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তাতে অণ্ণার পক্ষে তাঁদের সমর্থনে মুখ খোলাও এখন সমস্যার। তাই জেনেবুঝেই হয়তো শনিবারের বৈঠকে অনুপস্থিত থাকতে চাইছেন অণ্ণা।
অণ্ণা শিবিরের এই পরিস্থিতি রাজনৈতিক ভাবে ইতিবাচক বলে মনে করছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের মতে, টিম অণ্ণা যত দ্রুত ছত্রভঙ্গ হবে ততই কংগ্রেসের পক্ষে মঙ্গল। নিদেনপক্ষে অণ্ণাকে তাঁর সহযোগীদের থেকে দূরে রাখতে পারলেও ইতিবাচক হবে। অণ্ণা মৌন ব্রত চালিয়ে গেলেও ভাল। কারণ তাঁকে বাদ দিয়ে কেজরিওয়াল বা কিরণ বেদীরা আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন না। গুরুত্বপূর্ণ হল, টিম অণ্ণার সদস্যদের বিরুদ্ধে যে ভাবে সব অভিযোগ উঠছে তাতে কিছুটা সমস্যায় পড়েছে বিজেপি-ও। দলের এক নেতার কথায়, দুর্নীতির বিরুদ্ধে যাঁরা আন্দোলনে নামছেন, তাঁরা নিজেরাই স্বচ্ছ না হলে তো মুশকিল। বিজেপি-র সমস্যা হল, দল এঁদের অন্ধ সমর্থন জুগিয়ে এসেছে গোড়া থেকে।
এই অবস্থায় কংগ্রেসের তরফে উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দিগ্বিজয় সিংহ অণ্ণা-সহযোগীদের ফের আক্রমণ করেছেন। আজ তিনি অণ্ণার সহমর্মী রামদেব এবং ‘আর্ট অফ লিভিং’ খ্যাত রবিশঙ্করকে উদ্দেশ করে বলেন, “এই সব আন্দোলনই বিজেপি এবং আরএসএসের মদতপুষ্ট। বিজেপি-র প্ল্যান-এ হল অণ্ণা, প্ল্যান-বি রামদেব। আর এখন শোনা যাচ্ছে প্ল্যান-সি অনুযায়ী এ বার দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রচারে নামবেন রবিশঙ্কর।” দিগ্বিজয়ের এই কটাক্ষের জবাব দিয়েছেন রবিশঙ্কর। বলেছেন, “দিগ্বিজয় তো দেখা যাচ্ছে জ্যোতিষী হয়ে উঠছেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই যদি অপরাধ হয়, আমি তা করতে রাজি।” কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, রবিশঙ্করকে কটাক্ষ করে দিগ্বিজয় সম্ভবত আগাম পদক্ষেপ করে রাখলেন। তাঁর কাছে নিশ্চয়ই খবর ছিল যে রবিশঙ্কর এ বার প্রচারে নামবেন। কিন্তু রবিশঙ্করের তেমন কোনও পরিকল্পনা থাকলে দিগ্বিজয়ের আজকের মন্তব্যের পর তাঁকে (রবিশঙ্করকে) নতুন করে ভাবতে হবে বইকী। |
|
|
|
|
|