শহরের মাঝ বরাবর নাগাল্যান্ড, দু’প্রান্তে চিন আর রাশিয়া। জলপাইগুড়ি শহরের বিগ বাজেটের কালী পুজোর আয়োজনকে এমন ভাবে বর্ণনা দেওয়াই যেতে পারে। শহরের প্রাণকেন্দ্র কদমতলার কিছুটা দূরেই সোন্নাউল্লা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে তৈরি হচ্ছে পেল্লায় এক মন্দির। বাঁশের কাঠামোর ওপরে থার্মোকলের বড় টুকরো চাপিয়ে নাগাল্যান্ডের একটি মন্দিরের আদলে মন্ডপ তৈরি করছে যুব মঞ্চ। পুজোর সঙ্গে মননশীল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্যও যুব মঞ্চের সুনাম রয়েছে। গত বছর পুজো প্রাঙ্গণে ওস্তাদ রশিদ খান সহ খ্যাতনামা শিল্পীদের দিয়ে অনুষ্ঠান করিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। এ বারে ৭৮ ফুট উঁচু এবং ১০০ ফুট চওড়া মন্ডপের ভেতরে হাতের সুক্ষ কাজের প্রদর্শনী, চন্দননগর থেকে আসা আলোকসজ্জায় কার্টুনের বিভিন্ন চরিত্রের মজাদার কার্যকলাপ থেকে শুরু করে ভারত পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের দৃশ্য থাকছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রয়েছে। যুব মঞ্চের পুজো কমিটির সম্পাদক খোদ জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু। চেয়ারম্যানের উদ্যোগেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন খ্যাতনামা তবলা বাদক বিক্রম ঘোষ এবং শরদ বাদক দেবজ্যোতি বসু। নাগাল্যান্ডের মন্দিরের আবহে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শহরবাসীর বাড়তি পাওনা বলে উদ্যোক্তারা মনে করছেন। শহরের অন্য প্রান্ত মাসকলাইবাড়িতে দর্শনার্থীদের জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে চিন। সে দেশের একটি বৌদ্ধ মন্দিরের অনুকরণে প্রায় ৭৫ ফুট লম্বা একটি মন্দির তৈরি হয়েছে। এই পুজোয় ফাইবার দিয়েই গোটা মন্ডপ তৈরি হয়েছে, মন্ডপের ভেতরেও ফাইবারের বিভিন্ন মডেল রয়েছে। সাবেকি প্রতিমা থাকছে মন্ডপে। চন্দননগরের আলোকসজ্জায় এবার দূষণ নিয়ন্ত্রণের থিম বেছে নিয়েছে যুব কল্যান সমিতি। বসে আঁকো প্রতিযোগিতা থেকে শুরু করে নানা প্রতিযোগিতা রয়েছে মন্ডপে। মস্কোর গির্জার আদলে মন্ডপ তৈরি করছে দাদাভাই ক্লাব। প্রায় ৮২ ফুট লম্বা মন্ডপ হচ্ছে বাদামের খোসা দিয়ে। প্রতিমাও তৈরি হচ্ছে বাদামের খোসা দিয়ে। শুধুমাত্র প্রতিমা তৈরির জন্যই মেদিনীপুর থেকে শিল্পীদের নিয়ে এসেছেন শহরের চার নম্বর ঘুমটির দাদাভাই ক্লাবের উদ্যোক্তারা। মন্ডপের পাশাপাশি আলোকসজ্জাতেও নানারকম অলঙ্গকরন রয়েছে। চন্দননগরের আলোকসজ্জায় কুতুবমিনারের আদলে বিশালাকার তোরণ তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রায় তিনশো বছর পুরানো পান্ডাপাড়া কালিবাড়ি এলাকায় ভদ্রকালীর মন্দির, শহরের অন্যপ্রান্তে দেবী চৌধুরানী কালী মন্দির এবং তেলিপাড়ার যোগমায়া কালীমন্দিরেও দর্শনার্থীরা রাতে ভিড় করেন। |