মন্ত্রী হাজির, বিধায়ক হাজির। হাজির ছিলেন শহরের মেয়রও। তাঁদের উপস্থিতিতে এক সাধারণ কর্মীকে দিয়েই উদ্বোধন হল শিলিগুড়ি হাসপাতালের নতুন জেনারেটরের। সোমবার শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের ওই কর্মী নন্দন দাস ওই নয়া জেনারেটরটি আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু করেন। নন্দনবাবু হাসপাতালের জেনারেটর দেখাশোনা করেন। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব, রাজ্য বন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায়, শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ির মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত, ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা, মেয়র পারিষদ মৈত্রেয়ী চক্রবর্তী-সহ অন্যান্যরা।
এতদিন হাসপাতালে ৬৬ কিলো ভোল্ট অ্যাম্পিয়ারের একটি জেনারেটর ছিল। সেটা দিয়ে লোডশেডিংয়ের সময়ে হাসপাতালের অস্ত্রোপচার, এমার্জেন্সি, সমস্ত ওয়ার্ড, আউটডোরে আলোর ব্যবস্থা করতে গিয়ে নাজেহাল হতে হত স্বাস্থ্যকর্মীদের। জেনারেটরটি বিকল হয়ে গেলেও একই সমস্যায় পড়তে হয়। শিলিগুড়ি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই ব্যাপারে বহু বার জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে চিঠির পর চিঠি পাঠালেও সমস্যা মেটেনি বলে অভিযোগ। |
খবর পেয়ে এগিয়ে আসেন এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান তথা শিলিগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। তাঁরই উদ্যোগে ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এদিন হাসপাতালে চালু হল এই নয়া জেনারেটরের। ২০০ কিলো ভোল্ট ক্ষমতা সম্পন্ন পরিবেশ বান্ধব এই জেনারেটরটি একসঙ্গে ১৬০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে। ফলে আগামী কয়েক বছরে শিলিগুড়ি হাসপাতালে নিও ন্যাটাল, আইসিইউ, প্রসূতি ভবন-সহ নানা প্রকল্প রয়েছে সেখানেও অনায়াসে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে। এদিন জেনারেটরটি চালু হওয়ার পরে এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান বলেন, “নেতা-মন্ত্রীদের দিয়েই সব প্রকল্পের উদ্বোধন করাতে হবে এমন ধারণায় আমাদের দল বিশ্বাসী নয়। সেই জন্যই সারা বছর এই নয়া জেনারেটরটি যিনি দেখভাল করবেন তাঁকে দিয়েই উদ্বোধন করানো হল। ওই কর্মী জেনারেটরের ভালই দেখভাল করবেন বলে বিশ্বাস করি।” ওই জেনারেটর কর্মী বলেন, “এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান আমায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকতে বলেছিলেন। কিন্তু আমায় দিয়েই উদ্বোধন করানো হবে সেটা ভাবিনি। সম্মান পেয়েছি। জেনারেটরটি যত্ন নিয়েই দেখাশোনা করব।” অনুষ্ঠানে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “উত্তরবঙ্গের ৬টি জেলা হাসপাতালকে ঘিরেই নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পষর্দ থেকে বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৬০ কোটি টাকা। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অর্থ বরাদ্দ করেছেন। উত্তরবঙ্গের সমস্ত গ্রামীণ হাসপাতালকে ঢেলে সাজার পরিকল্পনা হয়েছে। দু’একমাস সময় দিন। আমাদের এই উদ্যোগের ফল দেখতে পারবেন।” অনুষ্ঠানে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী অভিযোগ করেন, জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে দুটি ৩১.৫ কিলো ভোল্ট অ্যাম্পিয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটর ভাড়া করা হয়েছে। প্রতি মাসে ৯০ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয়। যে টাকা ভাড়া বাবদ দেওয়া হয়েছে তাতে নতুন জেনারেটর হয়ে যেত। এই দুর্নীতির তদন্ত হবে বলেও তিনি জানান। |