বেআইনি পিস্তল কেনা ও নিজের হেফাজতে রাখার অভিযোগে ধৃত কালচিনির সিপিএম নেতার পাশে দাঁড়াবে দল। শনিবার আলিপুরদুয়ার মহকুমা পুলিশ ওই সিপিএম নেতা জীবেশ নস্কর, এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী সোমনাথ রায় এবং চা পাতা ব্যবসায়ী গোপাল গোয়েলকে বেআইনি অস্ত্র সমেত গ্রেফতার করে। গত বুধবারই পুলিশ ওই তিনজনকে জেরার জন্য আটক করে। শনিবার রাতে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, সিপিএমের কালচিনির লোকাল কমিটির সম্পাদকের থেকে একটি নাইন এমএম পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন এবং বেশ কিছু গুলি আটক করা হয়েছে। চা পাতা ব্যবসায়ী ও স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আরও একটি নাইন এমএম এবং ৭.৬৫ এমএম পিস্তল মেলে। তিনজনই শিলিগুড়ির সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় দুষ্কৃতী পঙ্কজ মিশ্রের কাছ থেকে অস্ত্রগুলি কিনেছিল বলে পুলিশের দাবি। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য রবি মিত্র বলেছেন, “কালচিনি লোকাল কমিটির সম্পাদক জীবেশ নস্করকে রাজনৈতিক চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে। জীবেশ নস্কর এই ঘটনায় প্রথম থেকে পুলিশকে সাহায্য করে আসছিলেন। পুলিশ অনৈতিকভাবে তাঁকে বুধবার থেকে আটকে রাখে। ধৃতদের কারও বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। সাধারণ মানুষ আটকের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হল। আমরা বিষয়টির উপর নজর রাখছি।” আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনুপ জয়সোয়াল বলেন, “ধৃত সিপিএম নেতা, চা পাতা ব্যবসায়ী এবং স্বর্ণ ব্যবসায়ী নিরাপত্তার জন্য বছর খানেক আগে অস্ত্র কেনেন বলে স্বীকার করেছেন। ধৃতদের বয়ান অনুযায়ী তল্লাশি চালিয়ে ২টি নাইন এমএম এবং একটি ৭.৬৫ এমএম পিস্তল, পঞ্চাশ রাউন্ড গুলি ও পাঁচটি ম্যাগাজিন আটক হয়েছে।” রবিবার ধৃতদের আলিপুরদুয়ারে মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ৫ নভেম্বর পর্যন্ত তাঁদের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। ধৃত সিপিএম নেতাও দাবি করেছেন, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি বলেন, “আমি অস্ত্র কিনিনি। আমার বাড়ি থেকে পুলিশ অস্ত্র উদ্ধার করেনি।” একই দাবি করেছেন ওই চা পাতা ব্যবসায়ী এবং স্বর্ণ ব্যবসায়ীও। গত মাসে শিলিগুড়ির সোনার দোকানে একটি ডাকাতির ঘটনার পরে তদন্তে নেমে পুলিশ জুল্লাত, পঙ্কজ মিশ্র-সহ ১৬ জনকে ধরে। ধৃতদের কাছ থেকে প্রচুর অস্ত্র উদ্ধার হয়। পুলিশি জেরায় ধৃতেরা অসমে জঙ্গিদের কাছে অস্ত্র বিক্রির পাশাপাশি ডুয়ার্সের বেশ কিছু লোককে অস্ত্র বিক্রির কথা স্বীকার করে। তার পরেই গত বুধবার সিপিএমের ওই লোকাল সম্পাদক-সহ ৩ জনকে আটক করে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর পঙ্কজ-সহ অন্যদের ধরার পরে অস্ত্রের পাশাপাশি শিলিগুড়ির সোনার দোকানে লুট হওয়া সোনাও উদ্ধার করেছিল। লুট হওয়া সোনাদানার পরিমাণ হিসাবের কাজে ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীই পুলিশকে সাহায্য করে। তার কাছেই যে বেআইনি অস্ত্র রয়েছে সে কথা পুলিশ শনিবারের আগে জানতেই পারেনি বলে দাবি করেছে। তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা কার্যকরী সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, “প্রথম থেকে বলে আসছিলাম সিপিএম বেআইনি অস্ত্র ভান্ডার গড়ে তুলে এলাকায় সন্ত্রাস চালানোর চেষ্টা করছে। এই ঘটনায় আমাদের আশঙ্কা সত্যি প্রমাণিত হল। ঠিকমতো তদন্ত হলে আরও অনেকে ধরা পড়বে।” |