রাত পোহালেই দীপাবলি। ব্যারাকপুর ও কল্যাণী, দুই শিল্পাঞ্চলে আলোর এই উৎসবের জাঁকজমক পিছনে ফেলে দেয় দুর্গাপুজোকেও। আর তাই প্রতিবছরের মতো এ বারও উৎসবের জাঁকজমক ধরে রাখতে ইতিমধ্যেই ময়দানে নেমে পড়েছে দুই শিল্পাঞ্চলের প্রশাসন।
উৎসবের মাতামাতিতে কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে যেমন কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে, তেমনই উশৃঙ্খলতা এড়াতে ইতিমধ্যেই শিল্পাঞ্চলে পুলিশের বিশেষ বাহিনী ও আবগারি বিভাগ অভিযান চালিয়ে চোলাই তৈরির উপকরণ-সহ হাজার লিটারেরও বেশি চোলাই আটক করেছে। নষ্ট করা হয়েছে কয়েক’শ লিটার জাল মদ। ভেঙে দেওয়া হয়েছে ঘোলার বিলকান্দা অঞ্চলে ১৭টি চোলাইয়ের ভাটি। এ ছাড়া উৎসবের মরশুমে জুয়ার ঠেক বেড়ে যাওয়ায় সেগুলিও বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। ব্যারাকপুরের এসডিপিও অমিতকুমার সিংহ বলেন, ‘‘নৈহাটি, জগদ্দল, টিটাগড়, নোয়াপাড়া এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে জুয়ার বোর্ড-সহ কয়েক লক্ষ টাকা আটক করা হয়েছে। জুয়া খেলার সময় ধরা পড়েছে ৪২ জন। এছাড়াও এলাকায় তোলাবাজি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
এ সবের পাশাপাশি শব্দবাজি নিয়েও সতর্ক থাকার কথা জানিয়েছে প্রশাসন। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের সূর্যপুর ও কল্যাণীর রথতলায় বাজির বড় আড়ত রয়েছে। রথতলায় দীপাবলির অনেক আগে থেকেই ঘরে ঘরে বাজি তৈরি শুরু হয়ে যায়। শব্দবাজিতে শব্দবিধি নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হলেও এই সব এলাকায় তৈরি আলোর বাজির সঙ্গে লুকিয়ে-চুরিয়ে দেদার শব্দবাজি তৈরিরও অভিযোগ উঠেছে। রথতলার প্রতিমা মণ্ডল, মালতী সরকারেরা জানান, আতসবাজির চাহিদা প্রচুর। শব্দবাজিরও চাহিদা আছে। তবে পুলিশি হানার ভয়ে আড়ালে ও সব তৈরি হয়। যদিও গত শনিবার রাতে টিটাগড় থানার পুলিশ এস বি পথ, ভেড়ি গেট, ব্রহ্মস্থানে হানা দিয়ে ২৭ হাজার শব্দবাজি আটক করেছে। বেআইনি শব্দবাজি বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ২৬ জনকে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পক্ষ থেকেও নজরদারি রাখার কথা জানানো হলেও এরই মধ্যে বহু জায়গা থেকেই শব্দবাজি ফাটতে শোনা গিয়েছে।
এ বারও বিস্তর অভিযোগ উঠেছে চাঁদার জুলুম নিয়েও। জোর করে চাঁদা তোলায় বাধা দিতে গেলে পুলিশকে হেনস্থা করার ঘটনা ঘটেছে খড়দহে। তবে দুই শিল্পাঞ্চলের পুলিশ আধিকারিকেরাই জানিয়েছেন, যে কোনওরকম পরিস্থিতি সামাল দিতে এ বার পুজোয় সাদা পোশাকের পুলিশ নজরদারিতে থাকবে। |