বেলা আড়াইটেয় খবর এল দুই রক্ষীর বাড়িতে
মাত্র তেইশ দিন আগে চাকরিতে ঢুকেছিলেন দু’জন। দু’জনেই প্রাক্তন সেনাকর্মী। অবসরের পরে ঘরে বসে না থেকে নিরাপত্তা সংস্থায় চাকরির আবেদন করেছিলেন। সেই চাকরিই জীবন কেড়ে নিল দেবপ্রসাদ বৈদ্য এবং বাসুদেব ঘোষের।
দু’জনেই উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা। প্রথম জনের বাড়ি হাসনাবাদের খানপুকুরে, অন্য জনের গোবরডাঙার গাইঘাটায় ঝাউডাঙা এলাকায়। দেবপ্রসাদবাবুর চার মেয়ে ও এক ছেলে বর্তমান। বাসুদেববাবুর এক মাত্র মেয়ের বয়স সাত। দুই পরিবারই শোকে স্তব্ধ।
এ দিন রাতে কাশীপুর থানায় গিয়ে দেখা গেল মৃতদের পরিবারের লোকেরা উদ্ভ্রান্তের মতো এ দিক ও দিক করছেন। দেবপ্রসাদের ছোট ভাই শ্যামাপ্রসাদবাবু বলেন, “তখন বেলা আড়াইটে হবে। এক ভদ্রলোক বাড়িতে এসে জানান, তাঁর মেয়ে দাদার সহকর্মী। ভদ্রলোকের সঙ্গে তাঁর ছেলেও ছিলেন। তাঁরাই বললেন, দাদা অসুস্থ।” কিন্তু দেবপ্রসাদবাবুর অবস্থা ঠিক কেমন, তা কিছুতেই খোলসা করে শ্যামাপ্রসাদবাবুকে বলেননি ওই দু’জন। শুধু বলেছিলেন, হাসপাতালে যেতে হবে।
বড়দা কালীপদবাবু অসুস্থ হওয়ায় তাঁকে ভাইয়ের অসুস্থতার কথা জানাননি শ্যামাপ্রসাদবাবু। বাড়ি ছাড়ার আগে বৌদি সরস্বতীদেবীকে সে কথা জানাতেই বিপদ আঁচ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। শ্যামাপ্রসাদবাবুর কথায়, “ওই দু’জনের সঙ্গে হাসনাবাদ স্টেশনে পৌঁছই।” স্টেশনেই তাঁদের সঙ্গে দেখা দেবপ্রসাদবাবুর আর এক সহকর্মী অশোক বিশ্বাসের। তাঁর সাহায্যেই শহরে আসেন শ্যামাপ্রসাদবাবু। শহরে পৌঁছে সোজা ব্যাঙ্কে। সেখান থেকে থানায়। পুলিশের কাছেই দাদার মৃত্যু সংবাদ পান তিনি। সরস্বতীদেবী এবং তাঁর সন্তানদের সন্ধ্যা পর্যন্ত দেবপ্রসাদবাবুর মৃত্যুর কথা জানানো যায়নি বলে জানিয়েছেন শ্যামাপ্রসাদবাবু।
প্রায় একই কথা বলেছেন বাসুদেববাবুর পরিবারের লোকেরাও। এ দিন বেলা আড়াইটে নাগাদ বাসুদেববাবুর গাইঘাটার বাড়িতে দুর্ঘটনার খবর পৌঁছয়। থানা চত্বরে বসেই বাসুদেবের ভাই জয়দেববাবু বলেন, “দাদার মৃত্যুর খবর ব্যাঙ্ক জেনেছে সকালে। অথচ দুপুর গড়িয়ে যাওয়ার পর আমরা সে খবর পেলাম।” তিনি বলেন, “দাদা রবিবার ডিউটিতে যাওয়ার আগে বলেছিল, ফিরে ভোটার তালিকায় নাম তুলতে যাবে। সকাল থেকেই তার অপেক্ষায় ছিলাম।” বেলা ১২টা নাগাদ দাদার মোবাইলে ফোন করে কোনও সাড়া পাননি জয়দেবাবু। তাঁর কথায়, “তিনটে নাগাদ দাদার এক সহকর্মী বাড়িতে এসে জানালেন, দাদা অসুস্থ। সঙ্গে সঙ্গে গোবরডাঙা স্টেশনে আসি। দাদা কেমন আছেন তা জানতেই ফের ফোন করি দাদার মোবাইলে। ফোন ধরেন কাশীপুর থানার ওসি। তাঁর কাছেই জানতে পারি দাদা আর বেঁচে নেই।”
ঘটনার পরে পুলিশ ডেকে পাঠায় ওই নিরাপত্তারক্ষী সংস্থার মালিক অসীম চক্রবর্তীকে। অসীমবাবু বলেন, “পয়লা অক্টোবর ওঁরা কাজে যোগ দিয়েছিলেন। দুজনেই বন্দুকধারী রক্ষী হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন। কোথা থেকে যে কী হয়ে গেল, কিছুই বুঝতে পারছি না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.