দুই কালীর
‘লড়াই’ জিয়াগঞ্জে
জিয়াগঞ্জ পুরসভা এলাকায় ভাগীরথীর পাড়ের থানা ভবনের সামনে বুড়িমা কালীর থান। মাত্র দু’ কিলোমিটার দূরে পঞ্চায়েত এলাকার আমাইপাড়ায় রয়েছে আর একটি কালী। দুই কালীর মধ্যে রয়েছে যুগ-যুগান্তরের বিরোধ। বিরোধ এমনই, দুই দেবীর বিসর্জন এক দিনে এক সঙ্গে হওয়াই অসম্ভব। বিরোধের কারণ নিয়ে জিয়াগঞ্জ এলাকায় নানা গল্পকথা রয়েছে।
বহুল কথিত কাহিনিটি অবশ্য দুই দেবীর গঙ্গাস্নান ঘিরে। জিয়াগঞ্জের কংগ্রেস নেতা অসিত দে জানান, কয়েকশো বছরের প্রাচীন আমাইপাড়ার কালীপুজোর প্রতিষ্ঠা করে ওই এলাকার কুখ্যাত ডাকাতেরা। ওই কালীর থানে নরবলি দেওয়ার পর ওই ডাকাতরা ডাকাতি করতে যেত বলেও প্রচার রয়েছে। ভোরে ভাগীরথীতে ওই ডাকাতে কালীর স্নান করার অভ্যাস রয়েছে। একদিন গঙ্গাস্নানে গিয়ে নদীর পাড়ে বুড়িমা কালীর সঙ্গে দেখা। কে আগে স্নান করবে তাই নিয়ে দুই দেবীর মধ্যে বেধে যায় ধুন্ধুমার কাণ্ড। তিনি বলেন, “ভাগীরথী পাড়ে বুড়িমা কালীর থান। অতএব তাঁর দাবি, ‘আমি স্থানীয়। প্রথমে স্নান করার অগ্রাধিকার আমারই!’ অন্যদিকে ডাকাতে কালী নাম মাহাত্ম্য ও শক্তি মাহাত্ম্যের জোর দেখিয়ে আগে স্নান করার দাবিতে অনড়। ফলে বেঁধে যায় বিশাল বিবাদ। ওই বিবাদের কারণে যুযুধান দুই দেবীর বির্সজন হয় পৃথক দিনে।”
জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার উপ-পুরপ্রধান ফরওয়ার্ড ব্লকের রঞ্জন ভট্টাচার্যরা বংশ পরম্পরায় ওই পুজোর পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তবুদ্ধি চর্চায় বিশ্বাসী রঞ্জনবাবু অবশ্য ওই কালীর সঙ্গে বুড়িমা কালীর বিরোধ, গঙ্গাস্নান ও ডাকাতির আগে নরবলির কাহিনি বস্তুনিষ্ঠ বলে মনে করেন না। তবে তিনি বলেন, “১৭০৪ সালে মুর্শিদাবাদ পত্তনেরও আগে আমাইপাড়ার কালীপুজোর পত্তন হয়। ৯০ বছর আগে ঠাকুরদার বাবা কৈলাশচন্দ্র ভটাচার্য পৌরোহিত্যের দায়িত্ব পান।” সারাবছর ধরে যে প্রতিমার পুজো দেওয়া হয় সেই প্রতিমা পরের বছর পুজোর দিন সকালে পাশে সরিয়ে রেখে বেদিতে নতুন প্রতিমার অভিষেক করা হয়। তার পর নতুন প্রতিমার পুজো হয় সারা বছর ধরে। আর পাশে সরিয়ে রাখা আগের বছরের প্রতিমা বির্সজন দেওয়া হয় বর্তমান বছরের কালীর পুজোর পরে ভাইফোঁটা হয়ে গেলে কোনও এক রবি, সোম, বুধ অথবা শুক্রবার দেখে। এক প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধানের কালীপুজো ঘিরেও জিয়াগঞ্জের মানুষের ভক্তি রয়েছে। প্রয়াত ওই উপ-পুরপ্রধান সুরেন্দ্রনাথ দাস ডাক্তারি পড়ার সময় ১০৫ বছর আগে ওই কালীপুজো শুরু করেন।
জিয়াগঞ্জের চুড়িপট্টির ‘দাস ভবন’-এর বর্তমান বংশধর ষাটোর্ধ্ব সৃজনকুমার দাস বলেন, “প্রথা অনুসারে শায়িত শিবের বুকে মাকালীর বাঁ পা থাকে আগে। আমাদের বাড়ির মাকালীর ডান পা রয়েছে আগে। আমাদের বাড়ি দক্ষিণা কালীর গায়ের রঙও নীল।” জিয়াগঞ্জের আমাইপাড়া হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সমীর ঘোষ বলেন, “কালীপুজোর সময় একবার জিয়াগঞ্জে এসেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.