জলদূষণে কমেছে মাছ, চারা ছাড়া হল দামোদরে
মিতে কীটনাশক ব্যবহার, কারখানার রাসায়নিক বর্জ্য নদীতে মেশা-সহ বিভিন্ন কারণে নদীতে মাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ফলে মৎস্যজীবীরা ছোট মাছ ধরে নিচ্ছেন। তাতে মাছেদের বংশরক্ষা নিয়েই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই লুপ্ত হয়ে গিয়েছে বেশ কয়েকটি প্রজাতির মাছ। সমস্যা সমাধানে রাজ্যের মৎস্য দফতর ভাগীরথী ও দামোদরে ধারাবাহিকভাবে মাছের চারা ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সোমবার প্রথমবার দুর্গাপুরের দামোদরে মাছের চারা ছাড়ল মৎস্য দফতর। দফতরের মৎস্য সম্প্রসারণ আধিকারিক (ফিসারিজ এক্সটেনসন অফিসার) অজয়কুমার সিংহ বলেন, “সাধারণ প্রজাতির ২০ কুইন্ট্যাল এবং লুপ্তপ্রায় প্রজাতির দুই কুইন্ট্যাল মাছের চারা এ দিন ছাড়া হল।”
সোমবার দুর্গাপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
ভাগীরথীর পাশাপাশি এর আগে নিম্ন দামোদরে বর্ধমান, জামালপুর প্রভৃতি জায়গায় মাছের চারা ছাড়া হয়েছে। দুর্গাপুর পুরসভার ডেপুটি মেয়র শেখ সুলতান জানান, পুরসভার আশিসনগর এলাকায় দামোদরের ধারে সাড়ে তিনশো মৎস্যজীবী মানুষ বসবাস করেন। তাঁদের সুবিধার্থে পুরসভার পক্ষ থেকে মৎস্য দফতরের কাছে আর্জি জানানো হয়েছিল যাতে আশিসনগর এলাকাতে মাছের চারা ছাড়া হয়। পুরসভার সেই আর্জি মেনে সোমবার মৎস্য দফতরের পক্ষ থেকে কুড়ি কুইন্ট্যাল রুই, কাতলা, মৃগেল মাছের চারা ছাড়া হয় দামোদরের বারোয়ারি ঘাটে। এছাড়া লুপ্তপ্রায় প্রজাতির দুই কুইন্ট্যাল মাছের চারাও ছাড়া হয় এ দিন। জেলা মৎস্য আধিকারিক (প্রশিক্ষণ) চৌধুরী মোজাম্মেল হক জানান, স্থানীয় মৎস্যজীবীদের সতর্ক থাকতে হবে। যাতে কোনওভাবেই তাঁদের জালে এই ছোট মাছগুলি উঠে না আসে। তিনি বলেন, “মাছেদের বংশবৃদ্ধি হলে তবেই উদ্দেশ্য সফল হবে। নদীতে মাছের সংখ্যা বেড়ে যাবে। মৎস্যজীবীরা উপকৃত হবেন।”
এ দিন আশিসনগরের বারোয়ারি ঘাটে অনুষ্ঠানের জন্য মঞ্চ বাঁধা হয়। ভিড় জমান মৎস্যজীবীরা। মৎস্য দফতর, জেলা পরিষদ ও পুরসভার আধিকারিকেরা ছোট মাছ যাতে না ধরা হয় সে ব্যাপারে সচেতনতামূলক বক্তব্য রাখেন। এরপর ওজন করে মাছের চারা ছাড়া হয় দামোদরে। সেই দৃশ্য দেখতে অনেকে দামোদরে নৌকায় গিয়ে বসেন। এ দিন পুর এলাকার ৬ জন বয়স্ক মৎস্যজীবীদের পেনশন দেওয়া হয়। মাসে মাসে তাঁরা এক হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন।
মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জমিতে কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। সেই কীটনাশক নদীতে মেশে। শিল্পাঞ্চলে কারখানার রাসায়নিক বর্জ্য গিয়ে পড়ে নদীতে। মৎস্যজীবীরা চট জাল বা সরু জাল ব্যবহার করে মাছ ধরায় অপরিণত মাছ মারা পড়ে। তাছাড়া ব্যারাজ নির্মাণের ফলে মাছেদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। সব মিলিয়ে দিন দিন প্রজননক্ষম মাছের সংখ্যা কমেছে। ইতিমধ্যেই কালবাউশ, চিতল, ফলুই, কই, সিঙ্গি, ল্যাটা প্রভৃতি মাছ লুপ্তপ্রায় হয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে ১৯৯৯ সালে এই রাজ্যে মৎস্য দফতর মৎস্য সঞ্চার প্রকল্প হাতে নেয়। পর পর চার বছর নদীতে মাছের চারা ছাড়া হয়। দফতরের দাবি, ইতিমধ্যেই তার কিছু সুফল দেখা গিয়েছে। তাই ধারাবাহিকভাবে এই প্রকল্প চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য সম্প্রসারণ আধিকারিক অজয়বাবু।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.