জামিন পেলেন না কানোরিয়া জুটমিলের বর্ষীয়ান শ্রমিক নেতা প্রফুল্ল চক্রবর্তী। সোমবার তাঁর আইনজীবী উলুবেড়িয়া এসিজেএম আদালতে জামিনের আবেদন পেশ করেন। প্রফুল্লবাবুর বয়স বিবেচনা করে ওই আবেদনের বিরোধিতা করা হয়নি বলে জানান সরকারি আইনজীবী। যদিও বিচারক জামিনের আবেদন খারিজ করে ৩১ অক্টোবর শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
১৬ অক্টোবর ফুলেশ্বরে নিজের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় কানোরিয়া জুটমিল সংগ্রামী শ্রমিক ইউনিয়নের একটি অংশের নেতা প্রফুল্লবাবুকে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত ৯ অক্টোবর শেখ সামশের লস্কর নামে কানোরিয়া জুটমিলেরই এক শ্রমিককে মারধরে প্ররোচনা দিয়েছেন তিনি। প্রফুল্লবাবু ছাড়াও ওই ঘটনায় আরও ৬ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন লস্কর। বাকিরা এখনও কেউ ধরা পড়েনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রফুল্লবাবুর আইনজীবী শাহনওয়াজ শেখ এ দিন বলেন, “আদালতে পেশ করা পুলিশের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, অভিযোগকারীর মাথায় গভীর আঘাত ছিল। রিপোর্টের এই অংশটি উল্লেখ করেই জামিনের আবেদন নাকচ করেছেন বিচারক।” সোমবার উনসত্তর বছরের বৃদ্ধ প্রফুল্লবাবু আদালতে হাজির হননি। তিনি প্রেসিডেন্সি জেলে আছেন। তাঁর আইনজীবী বলেন, “এ দিন ওঁর আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। কেন আসেননি বলতে পারব না।” গ্রেফতারের প্রতিবাদে ওই দিন থেকেই অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন প্রফুল্লবাবু। প্রেসিডেন্সি জেলের সুপার বিপ্লব দাস বলেন, “ওঁকে জেল হাসপাতালে রাখা হয়েছে। ওআরএস চলছে। তবে শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।” বিপ্লববাবু জানান, প্রফুল্লবাবুর স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই আদালতে হাজিরার ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। এক জন ডেপুটি জেলারকে কাগজপত্র দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছিল।
সোমবার প্রফুল্লবাবুর মামলা-সংক্রান্ত রিপোর্টগুলি আদালতে না থাকায় শুনানি শুরু হতে বেশ দেরি হয়। পুলিশ জানায়, ১৬ অক্টোবর ওই শ্রমিক নেতাকে গ্রেফতার করা হলেও ১৩ অক্টোবর হাওড়া সিজেএম আদালতে তাঁর আইনজীবী আগাম জামিনের আবেদন করেন। ওই আদালতেও শুনানির দিন ধার্য হয় সোমবার। তাই মামলা-সংক্রান্ত নথিপত্র উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালত থেকে আগেই পাঠিয়ে দেওয়া হয় হাওড়া সিজেএম-এর কাছে। শ্রমিক নেতার আইনজীবী হাওড়া সিজেএম আদালতে জানান, একই দিনে উলুবেড়িয়া এসিজেএম আদালতে তাঁর শুনানি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হাওড়া সিজেএম আদালতের শুনানি স্থগিত রাখা হোক। মামলার নথিপত্রও উলুবেড়িয়া এসিজেএম আদালতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হোক। সেই মতো স্থগিতাদেশ মেলে হাওড়া সিজেএম আদালতে। কিন্তু মামলার রেকর্ড এ দিন সন্ধে পর্যন্ত পৌঁছয়নি। উলুবেড়িয়া এসিজেএম আদালত থেকেই কাগজপত্রের প্রত্যয়িত কপি তুলে মামলার কাজ চালানো হয়। |