কাশীপুরের বেসরকারি ব্যাঙ্কের কারেন্সি চেস্টের মধ্যে কী ভাবে দুই নিরাপত্তারক্ষীর মৃত্যু হল, তা নিয়ে তদন্ত করবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
দুর্ঘটনার পরে ওই বেসরকারি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, তারা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশিকা মেনেই ওই চেস্টটি তৈরি করেছিল। তা সত্ত্বেও কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখতে চায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আঞ্চলিক অধিকর্তা এস গঙ্গাধরণ সোমবার বলেন, “ওই ঘটনার কথা শুনেছি। তবে ব্যাঙ্কের তরফে ঘটনার রিপোর্ট আমরা পাইনি। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। ব্যাঙ্কের রিপোর্ট পেলে আমরাও খতিয়ে দেখব কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল।” নিরাপত্তা রক্ষীরা ঠিক কোথায় ডিউটিতে ছিলেন এবং সেখানকার পরিকাঠামো যথাযথ ছিল কি না, সেটাই খতিয়ে দেখতে চায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
কোনও ব্যাঙ্কের কারেন্সি চেস্টের মধ্যে এমন ঘটনা আগে কখনও শোনা যায়নি বলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং অন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের তরফে এ দিন জানানো হয়েছে। কারেন্সি চেস্ট এমন ভাবে তৈরি হয় যে তার স্ট্রং রুমের বাইরে নিরাপত্তা রক্ষীদের থাকার ব্যবস্থা থাকে। পাহারার সময়ে নিরাপত্তা রক্ষীদের যাতে সমস্যা না হয়, তা-ও দেখা হয় বলে দাবি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এক কর্মী সংগঠনের নেতার। কারও গাফিলতি ছাড়া এমন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে না বলেও মন্তব্য করেছেন ওই ব্যাঙ্ক ইউনিয়নের নেতা।
কাশীপুরের ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কের কারেন্সি চেস্টের পাহারাদারেরা ঠিক কোথায় ডিউটি করছিলেন সেটাই এখন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক খতিয়ে দেখবে বলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্তাদের কয়েক জন জানিয়েছেন। এক কর্তা বলেন, “নিরাপত্তার কারণে কারেন্সি চেস্টে সাধারণত জানলা রাখা হয় না। তাই তার ভিতরে লোক কী করে থাকবে! তবে ওই ব্যাঙ্কে পরিকাঠামো কী ছিল, তার এখনই বলা সম্ভব নয়।”
আইএনজি বৈশ্য (যে বেসরকারি ব্যাঙ্কটিতে দুর্ঘটনা ঘটেছে) ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষের দাবি, দিন দশেক আগে চালু করা কারেন্সি চেস্টটি উচ্চ মানের। এটি তৈরি করার ব্যাপারে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সব নির্দেশিকাই মানা হয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক একটি বড় এবং একটি ছোট জেনারেটর রাখার নির্দেশও দিয়েছে। সে রকমই ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কিন্তু কী পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা রক্ষীরা ছোট জেনারেটরটি চালিয়েছিলেন, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষের আরও দাবি, জেনারেটর সেটের ধোঁয়ার ফলেই যে ওই দুই নিরাপত্তা রক্ষীর মৃত্যু হয়েছে, তা এখনও সুনিশ্চিত করে বলতে পারেননি ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। তাই এখনই কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো ঠিক হবে না। ঘটনাটি তাঁরাও খতিয়ে দেখছেন বলে ওই ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
যেখানে নিরাপত্তারক্ষী দু’জন রাতে পাহারায় ছিলেন, সেখানে কেন পর্যাপ্ত হাওয়া চলাচলের ব্যবস্থা ছিল না? আইএনজি বৈশ্য ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, “রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশিকা অনুযায়ী কারেন্সি চেস্টের মধ্যে কোনও জানলা থাকার কথা নয়। কাশীপুরের কারেন্সি চেস্টেও তা রাখা হয়নি।” |