কোনও মণ্ডপে ত্রিপুরার মন্দির, কোথাও আবার মহাভারত কথা
কালীপুজোর মণ্ডপেও এ বার থিমের আধিক্য দেখা যাবে আসানসোল শিল্পাঞ্চলে। এমনকী, দুর্গোৎসবের তুলনাতেও মাতামাতি কিছু বেশি হচ্ছে এ বার। উদ্যোক্তাদের দাবি, অভিনব মণ্ডপ বানানোর পাশাপাশি আলোকসজ্জাতেও মিলবে নতুনত্বের স্বাদ। সব মিলিয়ে জাঁকজমক এতটাই যে কয়েকটি পুজোর বাজেট বেশ কয়েক লক্ষ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে।
শিল্পাঞ্চলে বড় বড় কালীপুজোগুলির অধিকাংশই চোখে পড়ে ইস্পাত শহর বার্নপুরে। এখানকার ইয়ং মেনস্ অ্যাসোসিয়েশনের পুজো এ বার ৫০ বছরে পা দিল। পুরনো সব রেকর্ড ভেঙে এ বার তাই লাগামছাড়া আয়োজন করেছেন উদ্যোক্তারা। তাঁদের মণ্ডপ হাম্পির বেঠালা মন্দিরের হুবহু রেপ্লিকা। কাঠের বাটাম, প্লাস্টার অফ প্যারিস এবং ফাইবার দিয়ে বানানো হচ্ছে মণ্ডপ। মেঝে বানানো হচ্ছে ঝাড়খণ্ডের জামতাড়ার স্লেট রঙের মার্বেল পাথর দিয়ে। মণ্ডপে ঢুকলে বোঝা কঠিন, এটি আসল না নকল। পশ্চিম প্রান্তের মূল প্রবেশ দ্বার দিয়ে ঢুকলে মনে হবে রাজস্থানের কয়েকশো বছরের পুরনো কোনও কেল্লার প্রবেশ পথ। এক দিকে রয়েছে লক্ষ্মী গণেশের মন্দির। অন্য প্রান্তে বিরাজমান কার্তিক ও সরস্বতী। মন্দির দু’টির সামনে বেশ বড়সড় চওড়া চাতাল। মণ্ডপের ভিড়ে ক্লান্ত হলে দর্শনার্থীরা এখানে দু’দণ্ড জিরিয়েও নিতে পারবেন। মাঝে মার্বেল পাথর বসানো চওড়া উঠোন। এক পাশে কৃষ্ণ মন্দির, অন্য পাশে শিবলিঙ্গ বসানো মন্দির। উঠোন পেরিয়ে কিছুটা ভিতর দিকে ঢুকে শ্যামা মন্দির। মণ্ডপের কারুশিল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বানানো হয়েছে মাটির শ্যামামূর্তি। বাড়তি পাওনা চন্দননগরের অত্যাধুনিক আলোকসজ্জা।
কর্ণাটকের মন্দিরের আদলে মণ্ডপ। বার্নপুরে ছবি তুলেছেন শৈলেন সরকার।
প্রায় দু’মাস ধরে এই মণ্ডপ গড়ে তুলেছেন কলকাতার শিল্পী সৌরভ দত্ত। পেশায় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার সৌরভবাবু মনের তাগিদ থেকেই এই কাজ করেন। এ বারই তিনি কলকাতায় সিঁথির একটি সর্বজনীন দুর্গাপুজোর মণ্ডপ বানিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকার তরফে শ্রেষ্ঠ মণ্ডপের পুরস্কার পেয়েছেন। হস্তশিল্পে প্রথাগত শিক্ষা না নিলেও তাঁর শিল্পশৈলী মন মাতায়। এক রাতের পুজো হলেও রবিবারই মণ্ডপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে দর্শনার্থীদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছেন উদ্যোক্তারা। এ দিন উদ্বোধনের পরে সঙ্গীত পরিবেশন করেন ভজন শিল্পী অনুপ জলোটা। উদ্যোক্তাদের তরফে পুফা বসাক জানালেন, এ বার তাঁদের সুবর্ণ জয়ন্তী। এলাকার বাসিন্দারা সারা বছর অপেক্ষায় থাকেন। তাই পুজোর সময় খরচ একটু বেশিই হয়।
বার্নপুরের পাবলিক ফ্রেন্ডস ক্লাবের উদ্যোক্তারা এ বারও বিগ বাজেটের পুজোর আয়োজন করেছেন। স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম সার্ধ শতবর্ষে তাঁরা মণ্ডপ বানিয়েছেন বেলুড় মঠের আদলে। ত্রিপুরার হস্তশিল্পের সম্ভার এ বার মণ্ডপে হাজির করেছেন তাঁরা। সংগঠকদের তরফে যীশু বিশ্বাস জানান, ত্রিপুরার বাঁশকাঠির কাজ আজ প্রায় লুপ্ত। শিল্পীদের দুর্দশার অন্ত নেই। তাই সেখানকার এই মূল্যবান শিল্প শিল্পাঞ্চলবাসীদের কাছে তাঁরা তুলে ধরেছেন। বাঁশকাঠি দিয়ে মহাভারতের ঘটনাবলী ফুটিয়ে তুলেছেন মণ্ডপের গায়ে। একই সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজনের জীবন কাহিনী। দীপাবলীর উৎসব তাই আলোকসজ্জা আছে। কিন্তু পুজো কেন্দ্রিক বিশাল মেলার আয়োজনই এখানকার মূল আকর্ষণ। প্রতি দিনই থাকছে জলসা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.