|
|
|
|
|
পশ্চিমে হাওয়া বদল |
যাঁরা পুজোয় বেড়াতে যাননি, নিশ্চিত এ বার যাবেন। একটু আগ বাড়িয়ে ক’টা সাজেশন দিলাম।
সবই ভারতের পশ্চিমে। কোনওটাই সে অর্থে ব্লকবাস্টার জায়গা নয়, কিন্তু মন অন্য বিট খুঁজে পাবেই। বেট!
|
মোরচি চিঁচোলি |
একটা বড় সময় ধরে হিন্দি ছবিতে প্রেম বা অবধারিত যৌনতা দেখানোর মাত্র দুটোই উপায় ছিল। হয় দুটো ফুল কাছাকাছি এসে নাক ঘষাঘষি করত, নয় একটা ময়ূর ব্যাকগ্রাউন্ডে সেতার নিয়ে প্রবল পেখম মেলে নাচত। আর বাঙালিরও তো ওই এক সোনার কেল্লা আর জু। কিন্তু আপনার হয়তো মনে হল, এমনিই সারি সারি ময়ূর দেখব, প্রেম-ফেম ছাড়া, এ বার? তা হলে চলুন মোরচি চিঁচোলি। পুণে থেকে মোটামুটি ৫০ কিলোমিটার দূর। ছোট্ট এক পিস গ্রাম, অন্য কোনওই কায়দা নেই। আছে পাল পাল ময়ূর, তেঁতুল গাছের ভিড়, এ দিক ও দিক বার্লি আর সূর্যমুখীর খেত। পুণে-অহমেদনগর হাইওয়ে ধরে আসতে থাকুন। শিখরপুরে ভেলু নদী পেরিয়ে কিছু ক্ষণ, তার পরই মোরচি চিঁচোলি গ্রাম। এখানে থাকার প্ল্যান করবেন না। হোটেল তেমন নেই। তবে কোনও গ্রামবাসীর বাড়ি ‘হোম-স্টে’ করাটা মন্দ আইডিয়া নয়। চার দিকের হলুদ আর সবুজে দেখে মন এমনিই ঝলমল করবে। তার ওপর উঠোনে সাত-আটটা ময়ূরকে বাড়ির লোকের মতো ঘুরতে দেখে, আপনিই না পেখম মেলে ময়ূরের রোলটা নিয়ে নেন! আচ্ছা, ময়ূর দেখার সেরা সময় হল, বেশ ভোর আর সন্ধে হচ্ছে হচ্ছে যখন। যান না, পেখম না মেলা ময়ূর দেখে খুশ হয়ে আসুন।
|
মাথেরান |
আদি বম্বে-র ইংরেজরা যখন গরমের চোটে হা! ঈশ্বর হা! ঈশ্বর করত, তখন তাঁদের এই মাথেরান-এ আনা হত। ২২২৪ ফিট উঁচু, তাই এখানে এসে ওঁরা স্বস্তি পেতেন। সেই স্বস্তি এখনও পাওয়া যায়, আর তাই তো একটা ছোট্ট ছুটি কাটাতে দূর দূর থেকে মানুষ মাথেরানে ভিড় জমান। ভিড় আছে কিন্তু কোনও হাঁসফাঁস নেই। মূল কারণ, মাথেরান-এ গাড়ি ঢোকা বারণ। অতএব নো দূষণ, নো অস্বস্তি। প্রায় ইয়োরোপীয় কিছু শহরদের মতো। তা হলে আপনি এখানে পৌঁছবেন কী করে? মুম্বই এখান থেকে ১০০ কি.মি দূর। আপনাকে গাড়ি করে দস্তুরি পয়েন্ট অবধি আসতে হবে। এটি মাথেরান থেকে ১১ কি.মি দূর। সেখান থেকে হয় হেঁটে আসুন, নয় ঘোড়ার পিঠে। নেরাল টাউন থেকে একটা ন্যারো গেজ ট্রেনও আপনাকে মাথেরান পৌঁছে দিতে পারে। এটি দুর্দান্ত জার্নি, কিন্তু মাঝেমাঝেই এটি বন্ধ থাকে, তাই আগাম খবর নিয়ে নেওয়া ভাল। পুরনো ব্রিটিশ স্টাইল বাংলো আর রাতের বেলায় দূর মুম্বইয়ের আলো দেখতে দেখতে ভালওই কাটবে!
|
দুঙ্গারপুর |
আরাবল্লি পাহাড়ের ঠিক পায়ের কাছে আরাম সে বসে রয়েছে এই দুঙ্গারপুর শহর। মানে রাজস্থানের দক্ষিণ প্রান্তে। আরাম সে বসে রয়েছে, কেন বললাম, সেটা না গেলে বোঝা যাবে না। আর গেলেই বুঝবেন, এ শহরের কোনও তাড়াহুড়ো নেই, নিজের মনে, নিজের তালে বেশ চলছে এখানকার জীবনযাত্রা। কিন্তু জোশ রয়েছে ভরপুর। সেই জোশ আরও বাড়িয়ে দেয় গাইবসাগর লেক। শহরের একেবারে মাঝমধ্যিখানে অবস্থিত। আর তার বুকেই দাঁড়িয়ে আছে বাদল মহল। লেক-এর আর এক দিকে রয়েছে শ্রী গোবর্ধননাথ মন্দির। এই লেককে ঘিরেই দুঙ্গারপুরের মানুষ তাঁদের নানা আচার-অনুষ্ঠান পালন করেন। এ ছাড়া অবশ্যই দেখবেন জুনা মহল। রাজারাজড়াদের আমলে এই মহল থেকেই দুঙ্গারপুরের যাবতীয় কলকাঠি নাড়া হত। ভিতরে অকল্পনীয় সব কাচের কাজ দেখতে পাবেন। আর রঙচঙে কাচের মধ্যে দিয়ে যখন রোদ্দুর তীর হয়ে ঢোকে, উফ! চোখ একটা অন্য বিশ্ব দেখে যেন। থাকতে পারেন উদয় বিলাস প্যালেস-এ। আগে রাজার বাড়ি ছিল, এখন লাক্সারি হোটেল। তবে যেখানেই থাকুন, যদি মাঘ মাসে আসেন, বানেশ্বর মেলা না দেখে ফিরবেন না। সে এক আলাদা স্পন্দন। |
|
|
|
|
|