টুকরো খবর
২০০ টন দড়ির মণ্ডপ
এ যেন দড়ির ম্যাজিক! নাকি ম্যাজিক দড়ি! সব মিলিয়ে প্রায় ২০০ টন দড়ি। এই বিপুল পরিমাণ পাটের দড়ি কেটে তৈরি হচ্ছে হাতি-ঘোড়া, পালকি, সেপাই-সান্ত্রী, লেঠেলও। সঙ্গে বস্তা বস্তা চটের কাপড় কেটে সাজানো হচ্ছে চারপাশ। গেটের মুখে বসছে ঢাউস আকারের মাদল। পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দ্রিম-দ্রিম শব্দে বাজবে ‘মিউজিক’ও। সব মিলিয়ে আসন্ন কালীপুজোয় অন্যরকম একটা আবহ তৈরি করতে চাইছে শিলিগুড়ির বিবেকানন্দ ক্লাব (ভিএনসি)। স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম সার্ধ শতবর্ষের খুব দেরি নেই। প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে সর্বত্র। সে কথা মাথায় রেখেই পরিবেশ-বান্ধব উপকরণ দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করছে ক্লাবটি। ক্লাবের তরফে সম্পাদক নিলয় চক্রবর্তী জানান, মূলত স্বামী বিবেকানন্দের সুস্থ সমাজ গড়ার ভাবনার থিম মাথায় রেখে তাঁরা ভিন্ন পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছেন। মণ্ডপের সঙ্গে মানানসই আলো থাকবে। মণ্ডপ থেকে আলো, সবই কলকাতার। ঠিক কেমন হচ্ছে মণ্ডপ? শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ার বিবেকানন্দ স্কুল চত্বরে প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে চলছে মণ্ডপের কাজ। মূল মণ্ডপের দুধারে থাকছে রথ ও পালকি। দুদিকে ১০ জন সেপাই-সান্ত্রী থাকছে। ঘোড়া, হাতি কী নেই! সবই পাটের দড়ি দিয়ে তৈরি। গোটা মণ্ডপ চত্বর জুড়ে থাকছে চটের মধ্যে ফুটিয়ে তোলা শ্যামা মায়ের নানা রূপ। পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক গোবিন্দ বণিক ও সৌরভ ভট্টাচার্যরা জানাচ্ছেন, চলতি বছরে কলকাতার অন্যতম একটি আকর্ষণীয় দুর্গা পুজোর মণ্ডপ দেখেই তাঁরা অনুপ্রাণিত হন। সেখানকার মণ্ডপশিল্পীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁরা। তার পরে প্রায় পুরো মণ্ডপটিই তুলে আনা হয়। তবে স্বামী বিবেকানন্দের সমাজ ভাবনার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে মণ্ডপে সামান্য রদবদল করা হয়েছে। সংস্থা সূত্রের খবর, বিবেকনন্দ ক্লাব উত্তরবঙ্গে খেলাধূলার জগতেও অতি পরিচিত নাম। বহুবার শিলিগুড়ির ফুটবল লিগের চ্যাম্পিয়নের খেতাব রয়েছে। ক্রিকেট ও অনূর্ধ্ব ১৯ ফুটবলেও একাধিক সাফল্য রয়েছে। এখন সম্বৎসর ফুটবল কোচিং ক্যাম্প চালানো হয়। পাশাপাশি, প্রায় সাড়ে ছয় দশক ধরে কালীপুজো করছে সংস্থাটি। এবার পুজো ৬৪ বছরে পড়ল। পুজোর উদ্যোক্তাদের আশা, স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম সাধশতবর্ষের বিষয়টি মাথায় রেখে যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তা শিলিগুড়ি ও লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের কাছে সমাদৃত হবে। আরও একটি বিষয় হল, মণ্ডপ সাজানোর জন্য যে সব উপকরণ তৈরি হয়েছে তা পুজোর পরে নিলাম করার কথা ভেবেছেন ক্লাবের কর্তারা। সে ক্ষেত্রে দুঃস্থদের সাহায্যের বিষয়টি অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে।

সম্প্রীতির শ্যামাপুজো
এবারও ফাঁসিদেওয়ার জালাসের বারভিটায় শুরু হয়েছে কালীপুজোর প্রস্তুতি। আগামী বুধ ও বৃহস্পতিবার, এই দু’দিন ধরে উৎসব চলবে। তাই এখন থেকেই গ্রামের দুই সম্প্রদায়ের মানুষ একসঙ্গে মিলেমিশে উৎসবের প্রস্তুতিতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন। দুর্গোৎসবের মতো এই কালীপুজোকে ঘিরে এলাকায় এই উৎসবে মানুষের জোয়ার নামে। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, “দুর্গোৎসবের মতো এই কালীপুজোর উৎসব আমাদের কাছে সমান। শুধু এই গ্রামের মানুষের কাছে নয়, গোটা ফাঁসিদেওয়া ব্লকের দুই সম্প্রদায়ের মানুষ এই উৎসবের জন্য মুখিয়ে থাকেন। গোটা ফাঁসিদেওয়া ব্লকের কাছে যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উৎসব বলে সুপরিচিত।” কে না আছে এই উৎসব আয়োজকদের মধ্যে। গ্রামের বাসিন্দা ফাঁসিদেওয়া পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দল নেতা সুজিত রায় থেকে শুরু করে জালাসের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান ওসমান গণি, হামিদুল রহমান, হাসান আলিরাও। সুজিত বাবু বলেন, “সকলের পূর্ণ সহযোগিতায় প্রতি বছরে আমরা কালীপুজোর উৎসবের আয়োজনের ব্যবস্থা করে থাকি। আনন্দে মানুষ মেতে ওঠে। এটা আমাদের গ্রামগুলির ঐতিহ্য। দুই সম্প্রদায়ের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য বহন করে চলেছি।” তবে থেকে রাবভিটা গ্রামে এর সূচনা হয়। তার সঠিক হিসেব অবশ্য কারও জানা নেই। জানা গিয়েছে, প্রায় শতাধিক বছর আগে এই কালীপুজোর উৎসব চলে আসছে। হাওয়া সাহা, কৃষক সাহা নামে কয়েকজন জমিদার-জোতদার মিলে প্রথম পুজোর সূচনা করেছিলেন। তাঁদের পাঁচ পুরুষ গত হয়ে গিয়েছেন। ফাঁসিদেওয়া বন্দর এলাকায় বোলো সাহা, বিকাশ সাহা নামে তাঁদের কয়েকজন বংশধর এখনও রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের পূর্ব পুরুষেরা একটি ছোট মন্দির তৈরি করে প্রথম পুজো শুরু করেন। যা ‘সুর কালী’ বলে এলাকায় প্রচার আছে। ধীরে ধীরে তা গোটা ফাঁসিদেওয়াতে সর্বজনীন কালীপুজোর উৎসব বলে জনপ্রিয় হয়েছে। এই উপলক্ষে ওই মন্দির লাগোয়া বিশাল জায়গা জুড়ে বিশাল মেলা বসে। মঙ্গলবার থেকে বৃস্পতিবার মেলা চলে। দুই সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেমিশে একাকার হয়ে যান। যেন মহামিলনের ক্ষেত্রে পরিণত হয়। এই কালী মন্দির চত্বরেই একদিকে রয়েছে মন্দির। পিরের স্থান। মনস্কামনা পূরণে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ ভিড় করেন। মানৎ করেন। ভোগ দেন। পুজো দেন। মহিলাদের ভিড় হয় উল্লেখযোগ্য। নানা রকমের দোকানপাট বসে। গমগম হয়ে ওঠে গোটা মেলা চত্বর।

হাকিমপাড়ায় বৃন্দাবন
কালী পুজোর এ বারও শিলিগুড়ির দর্শনার্থীদের চমকে দেবে শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ার তরুণ সঙ্ঘ। বৃন্দাবনের দুর্গাবাড়ির আদলে এ বার ওই ক্লাবের পুজো মণ্ডপ। আধুনিক স্থাপত্যরীতিতে তৈরি দুর্গাবাড়ি এককথায় অসাধারণ। তরুণ সঙ্ঘের মণ্ডপে গিয়ে দেখা যাবে ওই মন্দিরের মুগ্ধ করে দেওয়ার মতো অনুকরণ। সিমেন্ট, বালি, টাইলস ছাড়াও ফাইবার, প্লাস্টার অব প্যারিস আর পাট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মণ্ডপ। প্লাস্টার অব প্যারিসের সঙ্গে পাট মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছে গম্বুজ, অলঙ্করণের নানা ছাঁচ। সিমেন্ট, বালি, ইট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মণ্ডপের মেঝে। তার উপরে পাতা হয়েছে টাইলস। ৪৫ ফুট উঁচু এবং দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ্যে প্রায় ৫০ বাই ৪০ ফুট আয়তনের এই মণ্ডপটিতে একেবারে হুবহু তুলে ধরা হয়েছে দুর্গাবাড়ি। সেই একই ধরনের প্রবেশ দ্বার, জানালা। ঝাড়বাড়ি, খিলান, গম্বুজ ছাড়াও ভিতরের অলঙ্করণও একই রকম। নাট মন্দিরে টাইলস, বিগ্রহের চারপাশে স্টিলের রেলিং ব্যবহার করে একই রকমের আবহ তৈরি করা হয়েছে। বৃন্দাবনের দুগার্বাড়িতে তিন দিক দিয়ে দর্শনার্থীরা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেন। এখানে মণ্ডপে অবশ্য একদিক দিয়ে প্রবেশ করে অন্য দিক দিয়ে দর্শনার্থীদের বার করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গত বছর তরুণ সঙ্ঘ ক্লাবের মণ্ডপ তৈরি হয় ক্ষয়িষ্ণু একটি জমিদার বাড়ির আদলে। তার আগের বছর বিষ্ণুপুরের টেরাকোটার মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি হয়। প্রতি বছরই মণ্ডপ দেখে মুগ্ধ হয়েছেন দর্শনার্থীরা। এ বারও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে দাবি করেছেন ক্লাবের পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা ভবতোষ সাহা। তিনি বলেন, “কালী পুজো তো আছেই, পাশাপাশি আমরা এ বার দর্শনার্থীদের একটি মুগ্ধ করার মতো মণ্ডপ উপহার দিতে চাই। এ বারও দর্শকেরা যে হতাশ হবেন না সে কথা জোর দিয়ে বলতে পারি।” ক্লাব সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার ওই ক্লাবের পুজো মণ্ডপ তৈরি করছেন বনগাঁর শিল্পীরা। মণ্ডপের পাশাপাশি প্রতিমা এবং আলোকসজ্জাও করছেন তাঁরা। তরুণ সঙ্ঘের পুজো কমিটির সম্পাদক বিষ্ণু বসু বলেন, “মণ্ডপের পাশাপাশি এ বার আমরা আলোকসজ্জাতেও চমক দিতে যাই। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আলোকসজ্জা হবে যা আগে কখনও উত্তরবঙ্গে হয়নি।” প্রতি বছরই এই ক্লাবের পুজোয় দর্শনার্থীদের ভিড় সামাল দিতে বাড়তি স্বেচ্ছাসেবক নামাতে হয়। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এ বার ৩০০ স্বেচ্ছাসেবকের সঙ্গে বেশ কিছু নিরাপত্তা রক্ষীও নিয়োগ করা হচ্ছে।

থিমে ফাঁস-বন্দি শৈশব
ময়নাগুড়ি জাগরণী ক্লাবের পুজো মণ্ডপে এ বার আপনি খুঁজে পাবেন নিজেকে। আবিষ্কার করবেন ক্যারিয়ার প্রিয় সন্তানের অমানবিক আচরণের কারণ। চিরাচরিত মন্দির বা প্রাসাদের আদল ছেড়ে পুজো আয়োজকরা এ বারই প্রথম থিমের পথে। আধুনিক জীবনের জটিল বিন্যাসকে ছুঁয়ে দেখায় ইচ্ছা। প্রথম চেষ্টায় ভো-কাট্টা কিনা তা বলবেন দর্শনার্থীরা। শৈশব থেকে বার্ধক্য---আধুনিক ব্যক্তি জীবনের বিরাট অধ্যায় সামনে হাজির। প্রায় ৫০ বর্গ ফুট এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা রকমারি বিষয় মনে গভীরে প্রশ্ন উস্কে দেবে---কোথায় চলেছি আমরা! শুরুতে দেখবেন আমি-আপনি কেমন করে শৈশব চুরি করছি। নিজের ইচ্ছেকে শিশুর কাঁধে চাপিয়ে দিচ্ছি। এক ঘেয়ে গেয়ে চলেছি---তোমাকে ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে। শিশু আপন মনে খেলতে চাইছে। মা বলছেন হবে না। টেনে হিঁচড়ে কোচিং ক্যাম্পে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছেন। সচিন অথবা সৌরভ হয়ে ওঠার মন্ত্র দিচ্ছেন। অসহায় শিশুমন। বুঝতে পারছে না আদতে সে কী হবে! ও সব হয়েই-বা কী লাভ! কিন্তু উপায় কী! খাঁচা বন্দি পাখিদের ইচ্ছে থাকতে নেই। তাই আশপাশের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে গোল্লাছুট খেলে হইচই করে সময় কাটাবে সেই সুযোগ মিলছে না। বাড়ির বাইরে পা রাখতে মায়ের ভ্রূকুটি----আজেবাজে ছেলেমেয়ের সঙ্গে মিশে বখাটে হবে নাকি! ড্রয়িং করো। কাঠ, বাঁশ, থার্মোকল, চটের উপরে কলকাতার শিল্পী সোমনাথ মুখোপাধ্যায়ের হাতের ছোঁয়ার ফুটে উঠেছে আধুনিক সমাজের খণ্ডচিত্র। যেখানে শিশুর প্রতি মায়ের নির্দেশ---তোমাকে বড় হতে হবে। বড় হয়ে ওঠার শর্তগুলিও অদ্ভুতভাবে সাজানো হয়েছে। বিশ্বাস নির্মাণ করা হয়েছে--নৈতিকতা, আদর্শ, প্রেম-ভালোবাসা, আত্মত্যাগ কথার কথা। বলা হচ্ছে ওসব দিয়ে কী পেট ভরবে? পেট ভরাতে কী করতে হবে? আধুনিক সামনে রেখেছে দর্শন---ইঁদুর দৌড়ে প্রথম হতে হবে। ইচ্ছে পূরণ না-হলে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন বাবা-মা। কোলের শিশুকে নামী স্কুলে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। দিনরাত বইয়ের স্তুপে মুখ গুজে পড়ে থাকার অভ্যেস তৈরি করছেন। বাকি সময় ছবি আঁকা। না-হয় গান-বাজনার শিক্ষকের সামনে মন ভার করে বসে থাকার তালিম দিচ্ছেন। প্রতিযোগিতার ফাঁসে আটকে ককিয়ে উঠছে শৈশব। ফিসফিস করে দাবি করছে স্বাধীনতার। কিন্তু শুনছে কে! নিজেকে নিঃশেষ করেও রেহাই মিলছে না। বিচ্ছিন্নতা, নিঃসঙ্গতা বাসা বাঁধছে মনে। উথলে উঠছে স্বার্থপরতা, হিংসা। পুজো কমিটির সম্পাদক তুহিন চৌধুরী বলেন, “আমরা দর্শণার্থীদের সামনে আধুনিক সমাজের ভয়ঙ্করতাকে তুলে ধরে সতর্ক করার চেষ্টা করেছি।”

বৌদ্ধ মন্দিরে শক্তির বন্দনা
কালীপূজোর অন্যতম আকর্ষণ মালবাজারের সৎকার সমিতির কালী পূজো। এবারে তাঁদের মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ মন্দিরের অনুকরণে। প্লাইবোর্ড এবং বাঁশকে মাধ্যম করে মালবাজার রেলওয়ে ময়দানে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। মণ্ডপের উচ্চতা ৫৫ ফুট এবং চওড়া ৬৫ ফুট মণ্ডপের ভেতরের সজ্জাতেও থাকছে চমক। গ্রাম বাংলার বাঁশের কুটির শিল্পকে আভ্যন্তরীণ সজ্জায় তুলে ধরা হবে। কালী প্রতিমার মাধ্যমেও দর্শকদের গাছ লাগাবার বার্তা দিতে চান ক্লাব সদস্যরা। সৎকার সমিতির ক্লাব সম্পাদক সুপ্রতিম সরকার আবার মালবাজার পুরসভার পুরপ্রধানও। তিনি জানান, শিলিগুড়ির কুমোরটুলিতে তৈরি হওয়া কালী প্রতিমার মধ্যেই গাছ লাগাবার বার্তা দেওয়া হবে। সৎকার সমিতির কালী পূজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক প্রভাত মন্ডল জানান, কালী পুজোকে কেন্দ্র করে পুরো একটা বিনোদন প্যাকেজ মালবাজারকে তাঁরা উপহার দিতে চান। ২৭-২৯ শে অক্টোবর প্রতিদিন হবে সান্ধ্যকালীন অনুষ্ঠান। ২৮ তারিখ অসমের বিহু নৃত্য পরিবেশিত হবে বলে জানান প্রভাতবাবু। দিনের বেলায় মণ্ডপে দেখা যাবে মুর্শিদাবাদের রণ পা শিল্পী। সবশেষে বির্সজনেও থাকবে চমক। শব্দবিধি মাথায় রেখে সে দিন আতসবাজির রোশনাইতে শহর মাতাবেন বলে কর্তারা জানিয়েছেন।

বালিকার জমি বাঁচাতে উদ্যোগ
নাবালিকা পায়েল সরকারের জমি যাতে বেদখল না-হয় সে জন্য পুলিশকে উদ্যোগী হওয়ার অনুরোধ করলেন শিলিগুড়ির মেয়র পারিষদ কৃষ্ণ পাল। শুক্রবার কৃষ্ণবাবু প্রধাননগর থানার পুলিশকে জানান, জমি দখলের চেষ্টায় অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি, ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মাও পায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব নেতা কর্মীদের জানিয়ে দিয়েছেন, দলের কেউ জমি দখলে অভিযুক্ত হলে বহিষ্কার করা হবে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই নাবালিকার বাবা-মায়ের মৃত্যুর পরে ভাইবোনেরা জীবিকার সন্ধানে নানা দিকে ছিটকে পড়েছে। নাবালিকা নিজের ঘরদোর ছেড়ে এলাকারই একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সম্প্রতি পায়েলদের জমি দখলের চেষ্টা শুরু হলে বাসিন্দারা রুখে দাঁড়ান। পুলিশকেও সমস্ত ঘটনা জানানো হয়। এদিকে, এদিন হোমে গিয়ে ওই নাবালিকার সঙ্গে কথা বলেন তৃণমূল নেতা দীপক শীল, বেদব্রত দত্ত এবং রাজ্য মহিলা কমিশনের সদস্যা জ্যোৎস্না অগ্রবালও। দীপকবাবু বলেন, “শনিবার শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে সমস্ত ঘটনা জানাব। পুলিশের তরফে ওই নাবালিকার জমি উদ্ধারে যাতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয় সেই ব্যাপারে দাবি জানানো হবে।”

অ্যাম্বুল্যান্স খাদে, মৃত্যু
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি অ্যাম্বুল্যান্স খাদে পড়ে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। জখম হলেন চারজন। শুক্রবার ভোরে কালিম্পং থানার রম্ভি ফাঁড়ির রিয়াংখোলা এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। মৃতের নাম রামবাহাদুর রাই (৬৭)। বাড়ি কালিম্পঙে। তিনি শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শুক্রবারই নার্সিংহোম থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি ছেলেমেয়েদের সঙ্গে একটি অ্যাম্বুল্যান্সে করে বাড়ি ফিরছিলেন। ভোরে রাস্তায় চালক নিমাই দাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে গাড়িটি প্রায় ১৫০ ফুট তিস্তার খাদে পড়ে। ঘটনাস্থলেই রামবাহাদুরের মৃত্যু হয়। বাকিরা জখম হন। পুলিশ গাড়ির চালককে গ্রেফতার করেছে।

তৃণমূলকে কটাক্ষ উদয়নের
বিরোধী দলের আসনে থাকাকালীন জঙ্গল মহল থেকে যৌথ বাহিনী প্রত্যাহার এবং মাওবাদীদের নিয়ে বাম সরকারের নীতির সমালোচনা করেছিল তৃণমূল। ক্ষমতায় এসে এখন বামেদের দেখানো নীতিই নিয়েই তৃণমূল রাজ্য চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা উদয়ন গুহ। শুক্রবার জলপাইগুড়িতে এক দলীয় অনুষ্ঠানে গিয়ে এ ভাবেই তৃণমূলকে আক্রমণ করেছেন ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্ব। বিরোধী নেত্রী হিসেবে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বারবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে যৌথ বাহিনী প্রত্যাহারের দাবি করলেও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি সেই যৌথ বাহিনীকেই রাজ্যে রেখে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন উদয়নবাবু। তিনি বলেন, “রাজ্যর বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী যে নীতি নিয়ে চলছে তা বামেদের দেখানো নীতি। আসলে রাজ্য থেকে যে কোনও ভাবে বামেদের সরাতে তৃণমূল মাওবাদীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল। এখন আবার ক্ষমতায় এসে বামেদের নীতি গ্রহণ করেছেন।” উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন-সহ নানা বিষয়েও তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করেছেন উদয়নবাবু। আগামী ১৮ নভেম্বর ফরওয়ার্ড ব্লকের আইন অমান্য এবং জেল ভরো কর্মসূচি পালন করার প্রস্তুতি হিসেবেই তিনি জেলা পরিষদ হলে কনভেনশনে যোগ দিয়েছিলেন। কনভেনশনে ফরওয়ার্ড ব্লকের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি অঞ্জন বন্দোপাধ্যায়, সম্পাদক গোবিন্দ রায়, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য প্রবাল রাহা প্রমুখ ছিলেন।

অনশনের হুমকি চাষিদের
কাঁচা চা পাতার দাম নিয়ে অনশন আন্দোলনে নামার হুমকি দিল বিভিন্ন ক্ষুদ্র চা চাষি সংগঠনগুলি। শুক্রবার এই হুমকি দিয়ে চা চাষি সংগঠনের নর্থবেঙ্গল স্মল টি প্ল্যাটার্স, উত্তরবঙ্গ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চা চাষি, ফেডারেশন অফ স্মল টি প্রোডাক্টস সহ বন্ধুনগর স্মল টি প্রোডাক্টস ওয়েলফেয়ার, ভোটপট্টি উত্তরায়ন, ময়নাগুড়ি সেল্পহেল্প গ্রুপ ইত্যাদি সংগঠনগুলির তরফে জলপাইগুড়ি চা পর্ষদে স্মারকলিপি জমা দিয়ে ওই হুমকি দেওয়া হয়েছে। তারা চা পাতা নিয়ে একটি আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা ও আরও চা কারখানা তৈরির দাবিও জানিয়েছেন। সংগঠনগুলির তরফে নিতাই মজুমদার, স্বপন দাস বলেন, “চা পাতার দাম তলানিতে ঠেকায় উত্তরবঙ্গ জুড়ে অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সরকার বা চা পর্ষদ কোনও উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে চা চাষিদের বাঁচা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।” এই নিয়ে আজ, শনিবার থেকে তারা অনশনে নামবেন বলে জানিয়েছেন।

আক্রান্ত ম্যানেজার
স্থায়ীকরণের দাবিতে সহকারি ম্যানেজারের উপর হামলার চেষ্টার অভিযোগে চা বাগানের এক অস্থায়ী শ্রমিককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। শুক্রবার বিকালে হাঁসিমারা পুলিশ ফাঁড়ির বিচ চা বাগানে ঘটনাটি ঘটে। ধৃতের নাম বিরজু থাপা। ওই বাগানে তিনি অস্থায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। চৌকিদারের স্থায়ী পদে চাকরির দাবিতে এ দিন সাড়ে ৫টা নাগাদ ধারাল অস্ত্র নিয়ে বিরজু বাগানের সহকারি ম্যানেজের বিশ্বজিৎ দত্তকে আক্রমণ করেন। বিশ্বজিৎবাবু চা বাগানের কারখানা এলাকায় ছিলেন। তিনি পালিয়ে বাঁচেন। ম্যানেজার শঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আগেও চৌকিদার পদে স্থায়ী করার দাবিতে বিরজু অফিসারদের হুমকি দেয়।”

বিরোধ মিটল
বাণিজ্যকর দফতরের সঙ্গে আইনজীবীদের বিরোধ মিটল। শুক্রবার এই ব্যাপারে দু’তরফে একটি বৈঠক হয়। শিলিগুড়ি ট্যাক্সেশন বার অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি অরুণ ঘোষ জানান, বৈঠকে বাণিজ্যকর দফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মী ভুল স্বীকার করে নেওয়ায় বিরোধ মিটে যায়। বৃহস্পতিবার ওই কর্মী ট্যাক্সেশন বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অপূর্ব সাহাকে নিগ্রহ করেন বলে অভিযোগ। ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলনে নামেন আইনজীবীরা। বাণিজ্যকর দফতরের আধিকারিকেরা সমস্যা মেটাতে এদিন আইনজীবীদের নিয়ে বৈঠকের ব্যবস্থা করেছিলেন।

আবেদন বিলি
কৃষি বিভাগের তরফে কৃষি ঋণের ফর্ম বিলি করা হল ফাঁসিদেওয়াতে। শুক্রবার স্থানীয় নজরুল মঞ্চে শিবির করে ৩০০’র মতো ফর্ম বিলি করা হয়। হাজির ছিলেন কৃষি দফতরের জেলা আধিকারিক (ন্যাবার্ড) ওয়ালটার কুজুর ও কৃষি বিশেষজ্ঞ ওয়াসিম রেজা। যাঁদের কিসান ক্রেডিট কার্ড রয়েছে, তারাই এই ঋণের সুযোগ পাবেন বলে জানানো হয়েছে।

বিরোধ মিটল
বাণিজ্যকর দফতরের সঙ্গে আইনজীবীদের বিরোধ মিটল। শুক্রবার দু’তরফে বৈঠক হয়। শিলিগুড়ি ট্যাক্সেশন বার অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি অরুণ ঘোষ জানান, বৈঠকে বাণিজ্যকর দফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মী ভুল স্বীকার করায় বিরোধ মিটে যায়।

ধর্না-বিক্ষোভ
মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ-সহ নানা দাবিতে শুক্রবার শিলিগুড়ির হাসমিচকে ধর্না-বিক্ষোভ করল সিপিআই। সভাপতিত্ব করেন দলের প্রবীণ নেতা অরবিন্দ বসু।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.