|
|
|
|
বাসে ধাক্কা মারল ট্যাঙ্কার, মৃত ১২ |
বরুণ দে • ডেবরা |
হলদিয়া থেকে পুরীর পথে ফের দুর্ঘটনা।
বৃহস্পতিবার রাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার ভগবানবসানে পুরীগামী তীর্থযাত্রীদের দাঁড়িয়ে থাকা বাসে অ্যাসিড-বোঝাই ট্যাঙ্কার ধাক্কা মারায় প্রাণ হারালেন ১০ মহিলা-সহ ১২ জন। আহত দুই শিশু-সহ ১৪ জন। আহতদের ছ’জনকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গত ৯ অক্টোবর পুরী যাওয়ার পথেই ওড়িশার বালেশ্বরে দাঁড়িয়ে থাকা লরির পিছনে ধাক্কা মেরেছিল হলদিয়ার বিসি রায় মেডিক্যাল কলেজের কয়েক জন আধিকারিকের গাড়ি। মারা যান চালক-সহ ৮ জনই। |
|
ডেবরায় দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই বাস। সৌমেশ্বর মণ্ডলের তোলা ছবি। |
স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ হলদিয়ার পূর্ব রঘুনাথচক থেকে বাসে পুরীর উদ্দেশে রওনা হন ৬৫ জন। ডেবরার আষাঢ়ি পেরোতেই চালক বুঝতে পারেন, বাসের পিছনের বাঁ দিকের চাকাটি ‘লিক’ হয়েছে। ভগবানবসানে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে বাস দাঁড় করিয়ে চাকা মেরামতের কাজ শুরু হয়। কিছু যাত্রী বাস থেকে নেমে পড়েন। রাত ১২টা নাগাদ পিছন থেকে সালফিউরিক অ্যাসিড বোঝাই একটি ট্যাঙ্কার সজোরে ধাক্কা মারে বাসে। বাসটি কিছুটা এগিয়ে গিয়ে উল্টে যায়। চাকা মেরামত করছিলেন বাসের খালাসি স্বরূপ আরঙ। বাড়ি হাওড়ার সাঁকরাইলে। তাঁর কথায়, “ট্যাঙ্কারের ধাক্কায় বাসটা এগিয়ে যেতেই মুহূর্তে কয়েক জন পিষে যান। বেশির ভাগই মহিলা। কারণ, বাস থেকে নেমে মহিলারা দাঁড়িয়েছিলেন সামনের দিকেই।” দুর্ঘটনাস্থলেই মারা যান ৯ জন। পরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল এবং ডেবরা হাসপাতালে আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়। পুলিশ জানায়, মৃতেরা হলেন--ছায়ারানি দাস (৪৬), সনকা মাইতি (৫০), কনা মাইতি (৫৬), মিনতি বেরা (৪৫), শেফালি দাস (৩৮), অলকা মাইতি (৫৩), আরতি প্রামাণিক (৪৬), মালতি দোলই (৫৫), কাজল দাস (৬৫), মমতা মিশ্র (৩৮), সৌমেন উত্থাসিনী (২৩) এবং রমেশ দাস (৫৫)। খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দারাও হাত লাগান। তবে তার আগেই ট্যাঙ্কারটি ফেলে পালায় চালক-খালাসি। বাসচালকেরও খোঁজ মিলছে না।
ডিআইজি (মেদিনীপুর রেঞ্জ) বিনীত গোয়েল জানান, দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানার চেষ্টা হচ্ছে। শুক্রবার মেদিনীপুর মেডিক্যালে গিয়ে মৃত ও আহতদের পরিজনেদের সঙ্গে দেখা করেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত, পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠি, ডিআইজি (মেদিনীপুর রেঞ্জ) এবং হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী প্রমুখ। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মৃত ও আহতদের পরিবারের লোকজন এ দিন ভোর হতেই হাজির হন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে। অনেকেই ভেঙে পড়েছিলেন কান্নায়। |
|
|
|
|
|