সম্পাদকীয় ২...
উপনির্বাচনের বার্তা
রিয়ানার একটি লোকসভা আসন এবং বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রের একটি করিয়া বিধানসভা আসনের সাম্প্রতিক উপনির্বাচনের ফলাফলের যদি কোনও যোগসূত্র থাকে, তবে তাহা হইল, এই আসনগুলির একটিতেও কেন্দ্রীয় শাসক দল কংগ্রেসের জয়ী হইতে না-পারা। উক্ত চারটি আসনের একটিও অবশ্য কংগ্রেসের ছিল না। অর্থাৎ, এই চার আসনের প্রতিটিতেই তাহার পরাজয়ের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ। এবং, মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করে নাই। কিন্তু শুধু এইটুকু বলিলে সবটা বলা হয় না। কেননা হিসারের প্রতিযোগিতাটি কংগ্রেসের কাছে মর্যাদার লড়াই হইয়া উঠিয়াছিল। অণ্ণা হজারের অনুগামীরা এই আসনের উপনির্বাচনকে জনলোকপাল বিল লইয়া কংগ্রেস নেতৃত্বের টালবাহানার উপর গণভোট রূপে প্রচার করিয়াছিলেন। তাহার অনেকটাই প্রচার, কিন্তু কংগ্রেস প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হইয়াছে, ইহা সনিয়া বা রাহুল গাঁধীর পক্ষে সুসংবাদ নহে।
আবার মহারাষ্ট্রের বিধানসভা আসনটিতে পরাজয় এন সি পি-র হইলেও তাহারা রাজ্য-রাজনীতিতে এবং কেন্দ্রীয় সরকারে কংগ্রেসেরই সহযোগী দল। তা ছাড়া, আসনটি সেই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত, যেখান হইতে পওয়ার-কন্যা সুপ্রিয়া সুলে জয়ী। কংগ্রেস নেতৃত্বের তাই পরোপুরি নিরুদ্বিগ্ন থাকিবার অবকাশ নাই। বিজেপি স্বভাবতই এই ফলাফলে খুশি। দলীয় নেতৃত্ব সব কয়টি আসনের জয়কেই সরাসরি নিজেদের জয় বলিয়া প্রচার করিতেছে। মহারাষ্ট্রের ক্ষেত্রে দাবিটি যথার্থ। হরিয়ানার হিসার ও বিহারের সিওয়ানের ক্ষেত্রেও অংশত তাহাই। কেননা বিহারে জয়ী প্রার্থীর দল সংযুক্ত জনতা দল বিজেপির মোর্চা এন ডি এ-র শরিক। আর হরিয়ানায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা অজয় চৌটালা তো এন ডি এ-র কাছের লোক বলিয়াই পরিচিত। তিনি গত নির্বাচনের তুলনায় লক্ষাধিক ভোট বেশি পাইয়াছেন। লক্ষণীয়, অন্ধ্রে তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির জয়ের পথ সুগম করিতেই বিজেপি প্রার্থীই দেয় নাই।
সামগ্রিক ভাবে এ কথা বলা চলে যে, এই উপনির্বাচনের মধ্য দিয়া কংগ্রেসের প্রতি ভোটদাতাদের বর্ধিত আস্থার কোনও প্রমাণ অন্তত মেলে নাই। বরং জনমনে এই ধারণাই ছড়াইতেছে যে কংগ্রেস যেমন দুর্নীতি দমনে কঠোর নয়, তেমনই অত্যাবশ্যক পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি হ্রাসেও আন্তরিক নয়। এই দুইটি বিষয়ই যে বর্তমানে দেশবাসীকে বিব্রত, হয়রান ও বিচলিত করিতেছে, তাহাতে সন্দেহ নাই। এবং উভয় ক্ষেত্রেই কেন্দ্রের ইউ পি এ সরকারের ব্যর্থতার চিত্রটি প্রকট। বিশেষত দুর্নীতির প্রশ্নটি কেন্দ্রীয় সরকার যে ভাবে মোকাবিলা করিতেছে, দুর্নীতিতে অভিযুক্ত মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে বা অণ্ণা হজারের আন্দোলনের সামনে যে যে কর্তব্যবিমূঢ় নিষ্ক্রিয়তার পরিচয় দিয়াছে, তাহাতে দেশবাসী বীতশ্রদ্ধ বোধ করিতেই পারেন। উপনির্বাচনে প্রায়শ স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রশ্ন অগ্রাধিকার পাইয়া থাকে, ইহা স্মরণে রাখিয়াও তাই বলা যায়, কংগ্রেস নেতৃত্বের উচিত হইবে নির্বাচনী ফলাফলকে একটি সতর্কবার্তা বা হুঁশিয়ারি হিসাবে গণ্য করিয়া ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.