নভেম্বর থেকে কলকাতার সবকটি থানা এলাকার প্রতিষ্ঠিত বাজারগুলিতে আলাদা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি তৈরি করছে রাজ্য সরকার। এই সব বাজারে বিক্রেতাদের লাইসেন্স করাতে হবে।
কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায় এ ব্যাপারে বলেন, “সম্প্রতি আনাজপাতির দাম কেন চড়ে গেল সরেজমিনে জানতে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময়েই তিনি আমাকে নির্দেশ দেন বাজারগুলির উপর নজরদারি রাখার ব্যবস্থা করতে-- যাতে সাধারণ মানুষ আচমকা অসুবিধায় না-পড়েন।” তার পরেই অরূপবাবুর দফতরে আধিকারিকেরা মন্ত্রীকে জানান, কলকাতার বাজারগুলির নজরদারির জন্য আলাদা কোনও নিয়ন্ত্রণ সমিতি নেই।
রাজ্যের রাজধানী শহরের বাজারগুলিতে কৃষিজ পণ্যের বিক্রিবাটা দেখার দায়িত্ব অনেককাল ধরেই রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির উপর। ফলে কার্যত কলকাতার বাজারগুলিতে কোনও নিয়ন্ত্রণই ছিল না বলে জানান মন্ত্রী। এ বার সেটা বদলে যাচ্ছে।
কৃষি বিপণন দফতর সূত্রের ব্যাখ্যা, কলকাতার কোলে বাজারের মতো বড় বড় বাজার থেকে বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকার বাজার নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু এ রকম বড় বড় বাজারে কী চলছে, তার উপর নজরদারি রাখার কোনও ব্যবস্থা দফতরের ছিল না। ফলে এ সব বাজারে উপস্থিত ফড়ে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম চড়ালে তার প্রভাব রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে স্বাভাবিক ভাবেই পড়ে। ‘কলকাতা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি’ তৈরি হলে দাম নিয়ন্ত্রণে যেমন নজরদারি চালানো যাবে, তেমনই বাজারগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নেরও সুষ্ঠু ব্যবস্থা হবে বলে মন্ত্রী দাবি করেন।
এর পাশাপাশি আর একটি পদক্ষেপ করতে যাচ্ছে কৃষি বিপণন বিভাগ। রাজ্যে মোট ৪৩টি নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির অধীনে মূলত পাইকারি ব্যবসায়ীরা নথিভুক্ত রয়েছেন। তাঁদের কাছ থেকে লাইসেন্স ও বিক্রির পরিমাণের উপর কর আদায় হয় বছরে ২৫ কোটি টাকার মতো। এ বার ব্যবস্থাটা আরও ব্যাপক হবে। অরূপবাবু বলেন, “কলকাতার বাজার সমিতির অধীনে বাজারগুলি নিয়ে আসার পর প্রত্যেক পাইকারি বিক্রেতা তো বটেই, এমনকী আমাদের আইন অনুসারে (পশ্চিমবঙ্গ কৃষিজ পণ্য বিপণন আইন, ১৯৭২) বিভিন্ন কৃষিজ পণ্য নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি যারা বিক্রি করেন সেই সব খুচরো বিক্রেতা, পাল্লাদার, বিক্রেতাদের এজেন্টদেরও লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।” এ সব লাইসেন্সের মেয়াদ এক বছরের। লাইসেন্সপ্রাপ্তদের ব্যবসার খাতাপত্র পরীক্ষা করে লেভির পরিমাণ স্থির করবে সমিতি।“এই পদ্ধতিতে ব্যবসায়ীদের উপর যেমন নজরদারি রাখা সরকারের পক্ষে সহজ হবে, তেমনই লেভির পরিমাণ বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকা হবে” বলে দাবি করেন মন্ত্রী। |