বিএসএনের পরিষেবা নিয়ে রামপুরহাট মহকুমা জুড়ে সাধারণ গ্রাহকদের বিস্তর ক্ষোভ। তাঁদের অভিযোগ, বিনা নোটিসে মাঝেমধ্যেই টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হচ্ছে। এ বার সেই ক্ষোভে সামিল খোদ মহকুমাশাসকও। মহকুমা প্রশাসনিক ভবনের তিনটি টেলিফোন লাইনের সংযোগ মঙ্গলবার বিচ্ছিন্ন করে দেন বিএসএনএলের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে মহকুমাশাসক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
শুক্রবার সকালে বিএসএনএলের রামপুরহাট বিভাগীয় কার্যালয়ে গ্রাহক পরিষেবার উন্নতির দাবি এবং নানা বিষয়ে উদাসীনতা ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে স্মারকলিপি দেয় বীরভূম লোকসভা যুব কংগ্রেস কমিটি। রামপুরহাট বিভাগীয় আধিকারিকের মাধ্যমে বিএসএনএলের চিফ জেনারেল ম্যানেজারকে দেওয়া জন্য অভিযোগ ও দাবিপত্র পেশ করেন যুব কংগ্রেস কর্মীরা। তাঁদের পক্ষে অভিজিৎ মণি, ওয়াসিম আলি ভিক্টর, কিনু শেখ, সাহেব শেখদের অভিযোগ, “কয়েক যাবত রামপুরহাট মহকুমার বিভিন্ন গ্রাহকদের কাছে বিল না পাঠিয়ে আগের বিল বকেয়া আছে দেখিয়ে তাঁদের ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছেন বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ। এমনকী লাইন কাটার আগে গ্রাহকদের সতর্কও করা হচ্ছে না। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে গ্রাহকেরা একেবারে শেষ মুহূর্তে বিল হাতে পাচ্ছেন। কোনও কারণে সময়ে বিল দিতে না পারলেই লাইন কাটা যাচ্ছে।” দীর্ঘদিন আগে যে-সব গ্রাহক নিজেদের টেলিফোন ‘সারেন্ডার’ করেছেন, তাঁদের ‘সিকিউরিটি মানি’ ফেরত দিতে বিএসএনএল গড়িমসি করছে বলেও অভিযোগ। এ ক্ষেত্রে সুদ সমেত টাকা ফেরতের দাবি তুলেছে যুব কংগ্রেস।
মহকুমাশাসক বৈভব শ্রীবাস্তব এ দিন বলেন, “মঙ্গলবার প্রশাসনিক ভবনের তিনটি টেলিফোন সংযোগ আচমকা বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। কোনও রকম কারণ না দেখিয়ে আগাম নোটিস ছাড়াই ওই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার ওই তিনটি ফোনের বিলও পাঠায়নি বিএসএনএল। পরে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মৌখিক ভাবে যোগাযোগ করলে বুধবার বিকেলে সংযোগ ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
যুব কংগ্রেস নেতৃত্বের আরও অভিযোগ, গ্রামঞ্চলে বিএসএনএলের বহু বিটিএস (বেস ট্রান্সিভার স্টেশন) অকেজো হয়ে পড়ে থাকলেও সেগুলিতে তেলখরচ দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার দুর্নীতি হয়। যদিও বিএসএনএলের জেনারেল ম্যানেজার সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেছেন, “অভিযোগ ভিত্তিহীন। তেল খরচের ক্ষেত্রে কোনও দুর্নীতি হয় না।” গ্রামহকদের না নাজিয়ে ফোনের লাইন বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগ প্রসঙ্গে সুব্রতবাবুর বক্তব্য, “বর্তমানে কম্পিউটারচালিত ব্যবস্থায় কলকাতা অফিস থেকেই বকেয়া বিলের ক্ষেত্রে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে আমাদের কাছে নির্দিষ্ট অভিযোগ এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে সংযোগ জুড়ে দেওয়া হয়।” সিকিউরিটি মানি ফেরত না পাওয়ার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। |