হিমুলকে দাঁড় করাবেন রুদ্র
দুর্নীতির অভিযোগ থেকে বেহাল কর্মসংস্কৃতি! রুগ্ণ হয়ে পড়া সরকারি সংস্থা হিমুলে গিয়ে এ হেন ছবি দেখে স্তম্ভিত শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান তৃণমূল বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ হিমুলে। সংস্থার ডেপুটি ম্যানেজার সুভাষ রায়কে সঙ্গে তিনি যান দুধ প্যাকেটজাত করার কারখানায়। সেখানে গিয়ে ট্রাক থেকে দুধ নামানো থেকে জীবাণুমুক্ত করে প্যাকেটজাত করার প্রতিটি বিষয় খোঁজ নেন। কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, গুঁড়ো দুধ তরলে পরিণত করার জন্য যে জল ব্যবহার করা হয় সেগুলি আদৌ ব্যাকটিরিয়া মুক্ত করা হয় না। অথচ হিমুলে স্রেফ এই কাজের জন্যই একটি ল্যাবরেটরি এবং টেকনিশিয়ান রয়েছে। প্লাস্টিকের যে প্যাকেটে দুধ ভরা হয় সেটিও আলট্রা ভায়োলেট রশ্মির সাহায্যে জীবাণুমুক্ত করা হয় না। এসজেডিএ চেয়ারম্যান বলেন, “আপনারা কী জানেন না যে এই দুধ শিশুরাও খায়! বাড়িতে সকলে ফুটিয়ে নেয় বলে হয়তো ক্ষতি হয় না, কিন্তু পাস্তুরাইজড দুধ কেউ প্যাকেট থেকে সরাসরি খেতে চাইলে তো অসুস্থ হয়ে পড়বেন!”
ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
শেষ পর্যন্ত ডেপুটি ম্যানেজার ভুল স্বীকার করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। যে ঘরে দুধ প্যাকেটজাত করা হয় সেটিও যাতে বিধি মেনে ব্লিচিং পাউডার দিয়ে প্রতিদিন ভাল করে ধোয়া হয় সেই নির্দেশও দেন রুদ্রনাথবাবু। তিনি বলেন, “সচেতনতা এবং নজরদারির অভাবেই এ সব হচ্ছে। দ্রুত হিমুলে এই ব্যাপারে কর্মশালা করা হবে। ডেপুটি ম্যানেজার বলেন, “এতদিন নানা কারণে সে সব হয়নি। এ বার তা ফের চালু করা হবে বলে চেয়ারম্যানকে কথা দিয়েছি।” রাজ্য প্রাণি সম্পদ দফতরের নিয়ন্ত্রণাধীন হিমুল একটি সমবায় পরিচালন সমিতির মাধ্যমে চলে। পাহাড় ও সমতলের বেশ কিছু চিলিং প্ল্যান্ট থেকে দুধ সংগ্রহ করা ছাড়াও মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, উত্তর প্রদেশের নানা সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে গুঁড়ো দুধ সংগ্রহ করে। দুধ সরবরাহকারীদের বকেয়া শোধ দিতে না-পারায় বিধানসভা নির্বাচনের মুখে হিমুল বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। রাজ্যে নয়া সরকার গঠনের পরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী হিমুলের বকেয়া শোধের ব্যাপারে উদ্যোগী হলে রাজ্য সরকার ৪ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করে। হিমুলের পরিচালন ব্যবস্থার উন্নতি হয়নি। পুরানো বোর্ড ভেঙে দেওয়া হলেও নয়া বোর্ড তৈরি হয়নি। এই পরিস্থিতিতে কড়া হাতে হিমুলের হাল ধরতে রাজ্য সরকার এসজেডিএ-র হাতে সংস্থাটি তুলে দেওয়ার ব্যাপারে চিন্তা শুরু করেছে। সম্প্রতি শিলিগুড়ির শিল্প-কারখানা নিয়ে খোঁজখবর নিতে গিয়ে হিমুলের বিষয়টি জেনে উদ্বিগ্ন হন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী মুকুল রায় বিশদে খোঁজ নেন। তার পরেই হিমুলকে ঘুরে দাঁড় করানোর দায়িত্ব বর্তায় রুদ্রনাথবাবুর ওপরে। ওই ব্যাপারে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নুরে আলম চৌধুরীর সঙ্গে কথাও বলেছেন রুদ্রনাথবাবু। এ দিন দুধ প্যাকেটজাত করার কারখানা ছাড়াও এসজেডিএ চেয়ারম্যান ক্যাটল ফিড প্ল্যান্ট, পানীয় জল প্রকল্প, নার্সারি সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নেন। রুদ্রনাথবাবু বলেন, “হিমূল কর্তৃপক্ষের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। কী ভাবে হিমূলকে নিজের পায়ে দাঁড় করানো যায় সেটা দেখা হবে।” তৃণমূল অনুমোদিত হিমুল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমর বাগচি বলেন, “হিমূলকে বাঁচাতে গেলে পরিচালন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে।” আইএনটিইউসি অনুমোদিত এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন নেতা সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, “হিমুলের হাল রাজ্য সরকার শক্ত হাতে ধরুক, সেটা আমরাও চাই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.